Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » আলোকিত শিখা || Suchandra Basu

আলোকিত শিখা || Suchandra Basu

দীপ ফটোগ্রাফি ব্যবসায় মন দেয়।যেটা সম্পূর্ণ তার নিজের। এই ব্যবসা নিয়ে সে নিজেকে ব্যস্ত রাখে।সাথে সাথে সে ভিডিও করতে শুরু করে।একদিন দীপ বিয়ে বাড়ির কাজে ভিডিও নিয়ে গিয়ে হাজির হয়। বউভাতের দিন সে নিজে বরের বাড়ির ছবি তুলবে ঠিক করে, সেখানে গিয়ে উপস্থিত হয়।এইরকম এক পরিবেশে সে শিখাকে দেখতে পাবে ভাবতেও পারেনি,তাই তাকে দেখে চমকে ওঠে। শিখাও অবাক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে থাকে।কারো মুখে কথা সরে না।এভাবে কতক্ষণ যে কেটেছিল ঠিক নেই। বরকর্তার সম্বোধনে দীপের সম্বিত ফেরে।সে ছবি তোলার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।কখন শিখা এসে তার পাশে দাঁড়িয়েছে সে খেয়ালও করেনি।শিখা ফিসফিস করে তার কানের কাছে বলে,অনেক কথা আছে দেখা না করে যাবেন না।

শিখা ওই বাড়ির প্রাইভেট টিউটর।তাই সে আজ ওখানে নিমন্ত্রিত।এভাবে দুজনের আবার দেখা হবে ভাবতেই পারেনি শিখা।

দীপের মুখে সবে বোল ফুটেছে।তখন থেকেই কিন্ডারগার্ডেন ইস্কুলে সে।বাবা মায়ের স্বপ্ন শিক্ষিত হয়ে ছেলে সরকারি চাকরি করবে।তার মা তাকে নিয়ে দৌড়ায় টিউশন পড়াতে।বাবা টাকা ঢালছেন খোঁজ নিয়ে কোন প্রতিষ্ঠানে পড়লে তার সরকারি চাকরি নিশ্চিত। শেষমেশ ঝুড়ি ঝুড়ি নম্বর নিয়ে সে পাশ করে। মা খুব খুশি।কিন্তু বাবা কি খুশি?কতটা নিশ্চিত দীপের ভবিষ্যৎ। ডিগ্রীর সাথে সাথে তারও বয়স বাড়ছে।কিন্তু সরকারি চাকরির দরজা কি খুলছে?অবশেষে প্রাইভেট সংস্থার দরজায় সে উঁকি মারে।অথবা ছোট খাট ব্যবসা করতে শুরু করবে ভাবে। দীপের বয়স বাড়লে মায়ের চিন্তা বাড়ে।ছেলেকে পাত্রস্ত করতে হবে তো?তাই সে পাত্রীর খোঁজ খবর নেওয়া শুরু করে।

ছেলের দেখাশোনা চলছে। কিন্ত বর্তমানে এই ভাবে বিয়ে আর কটা হয়?ছেলে মেয়েরা নিজেরাই নিজেদের মনের মানুষ ঠিক করে নেয়। গভীর প্রেমে অবাধ মেলামেশা শুরু হয়। বাড়ি থেকে চাপ এলে তখন তারা প্রকাশ করে।

এইরকম ভাবেই শিখার বিয়ের তোড়জোড় শুরু হয় বাড়ি থেকে। সে জানায় একটি ছেলেকে ভালবাসে। বাড়ি থেকে প্রশ্ন করে ছেলে কি করে? মেয়েটি বলে জানি না। বাড়ি থেকে জানতে চায় ছেলেটি প্রতিষ্টিত কিনা। শিখা কোন আর উত্তর দিতে পারে না।ছেলেটি তখনও বেকার।তাই তাদের প্রেম বাড়ি থেকে মেনে নিতে চায় না।শিখা সে কথা দীপকে জানায়।দীপ খুব অসহায় বোধ করে। যেহেতু সে কোন চাকরি করে না টিউশন করে চালায় তাই সে শিখাকে বলে তোমার বাড়ির ঠিক করা ছেলেকেই তুমি বিয়ে করে নাও।আমার কোন ক্ষোভ নেই। তারপর থেকে সে আর শিখার সঙ্গে কোন যোগাযোগ রাখে না। শিখা দু’একবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও সে তা বাতিল করে দেয়।

মেয়েটির মনের মানুষকে ওই চাকরি দূরে সরিয়ে দেয় প্রায় পাঁচ বছর।যেখানে মনের মিল সেখানে চাকরিতে কি এসে যায়।ভালবাসা নিরক্ষর হলেও চলবে।কিন্তু মন হতে হবে সুশিক্ষিত। মন যদি অশিক্ষিত হয় তবে শিক্ষিত ভালবাসাও আঁকবে ক্ষত।

এত বছর পর যখন শিখার সঙ্গে দীপের হঠাৎ দেখা। শিখা আবার তার কাছে ছুটে আসে।চঞ্চল মন যেন আর স্থির থাকতে পারে না।সে বলে দীপের শিখা হাওয়ায় নিভে যেতে পারে।কিন্ত তাকে তো আবার জ্বালানো যায়।সে তো একটি প্রদীপ হয়ে গৃহস্থের তুলসীতলায় আলো দিতে পারে।দীপের হৃদয়ে শিখার কথাগুলো বিঁধে ছিল।তার কথা শুনে দীপের চোখ সেদিন ছলছল করে ওঠে।

এর পরে কি হবে আপনারা বলুন তো?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress