অলকেশ মনে মনে হয়তো হাসে –
বিড়বিড় করে কত অতীত ইতিহাস ঘাঁটে,
ফাইলের পর ফাইল, স্তুপাকার হয়ে আছে৷
ভালো ভাবে দেখে নিয়ে স্বাক্ষর করে দেওয়া কাজ৷
তখন ঘরে বাইরে সর্বত্রই অলকেশ বস,
একান্ত আপন সেক্রেটারি কুসুমিকা, বসকে একটু বেশি তোয়াজ করত,
অবিবাহিত বসের খুব একটা মন্দ লাগতো না৷
ঘরনি কুসুমিকা তার বাগিচায় তিন তিনটে সুগন্ধি পুষ্প প্রস্ফুটিত করে।
অলকেশ বাইরে আর কুসুমিকা ঘর সংসার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
চলতে থাকে অলকেশের রামধনু মিশ্রিত রঙিন জীবন–
এক কন্যা জাপান, দুই পুত্র কানাডা ও জার্মানিতে আর কুসুমিকা!
মাঝে মাঝে গবাক্ষ ধরে নীল দিগন্তে
কুসুমিকার সাথে দেখা হয়, চুপচাপ কথাও হয়,
জাপান,কানাডা,জার্মান তো বাতায়ন খুললে দেখা যায় না!
কুসুমিকা,অলকেশের চাকরি অবসরের আগেই ভলেন্টারি রিটায়ারমেন্ট নিয়ে
স্বর্গ স্টেশনে বদলি নিয়েছে।
আজ ষাটোর্ধ্ব অলকেশের শুধুই অবসর৷
কানের স্টেপিস,ইনকাস, মেলিয়াস পেশি, শব্দ ঠিক করে নিতে পারে না।
কানে, বুকে সব নকল মেশিন বসানো হয়েছে।
মেয়ে বলেছে, এত রোগ রোগ কোরো না৷
তার বিদেশ থেকে আসা অসম্ভব!
যে যার মতো নিজের পছন্দ মতো বিবাহ করে নিয়েছে৷
মা যখন নেই, তাই একা একা তাদের সিদ্ধান্ত!
সকাল থেকে কাকগুলো অযথা কা কা কা করে ডেকেই চলেছে৷
উফ! ঠিক যেন অকল্যাণের মড়া কান্নার শব্দ।
অলকেশের বর্তমান বান্ধবী হঠাৎ উচ্চস্বরে রাগারাগি শুরু করে,
ওই দাদু ওঠো,খেলবে না!
ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে লুকানো যায় নাকি!
দাদুটা কী যে বোকা!
অলকেশ দাদু শুয়ে শুয়ে লুকোচুরি খেলে,
হা-হা-হা দেখো সবাই দাদুটা ভীষণ বোকা।