Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » ৫৫-এর ঠিকানায়: জীবনের এক পরিক্রমা || Pallav Sanyal

৫৫-এর ঠিকানায়: জীবনের এক পরিক্রমা || Pallav Sanyal

জানুয়ারির হিমেল সকালে রোদ মেখে যখন জানালা খুলে দিলাম, একটা প্রশ্ন মাথায় ঘুরে গেল—“কোথায় ৫৪ চলে গেল?” সময় এমন এক নদী, যার স্রোত কখনো পেছনে ফিরে তাকায় না। গত ৫৪টি বছর যেন মুহূর্তের মতো ফুরিয়ে গেল। সেই ছোটবেলার শৈশব, কাঁথা মুড়ি দিয়ে ঘুমানো, আর সকালের হালকা রোদে ঠাকুমার হাতের মিঠে পিঠা খাওয়ার দিনগুলো।

জীবনের প্রথম দশকটা ছিল নিশ্চিন্ত। মা-বাবার স্নেহ আর পাড়ার মাটির গন্ধে ভরা দিন। বড়ো পরিবার, ভাইবোনের খুনসুটি, পাড়ার বন্ধুদের সঙ্গে পুকুরে মাছ ধরা—এইসব নিয়ে শৈশবের সরলতা কাটল। তারপর ধীরে ধীরে বড়ো হলাম, স্কুলের বেঞ্চ থেকে কলেজের করিডোর, বইয়ের ভাঁজে জমা পড়ল স্বপ্ন।

তারপর এল জীবনের কর্মযজ্ঞ। সংসার বাঁধা, ছেলেকে মানুষ করা, প্রতিদিনের লড়াই। কখনো চাকরি নিয়ে চাপ, কখনো সংসারের টানাপোড়েন। মাঝে মাঝে ক্লান্ত লাগত, মনে হত—এত কাজ কেন করছি? কিন্তু যখন ছেলের হাসি দেখতাম, মনে হত, জীবনের মানে বুঝি এর মধ্যেই।

৫৪ বছর যেন শুধু দৌড়ানোর মধ্যে কেটে গেল। সময় দিতে পারিনি নিজের শখের জন্য, লেখালেখি পড়ে রইল স্রেফ খাতার পাতায়। অথচ এর মধ্যেও কত সুখ-দুঃখের স্মৃতি জমেছে। মা-বাবাকে হারানোর বেদনা, প্রিয়জনের সঙ্গে দূরত্ব—সবকিছু মিলে একটা ঘূর্ণাবর্তের মতো।

এখন ৫৫-এর দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে মনে হয়, জীবনের অর্ধেকটা পেরিয়ে এলাম। বাকি সময়টুকু কতটা, কে জানে? কিন্তু এবার নিজেকে কিছুটা সময় দেওয়ার ইচ্ছা। আবার লিখতে চাই, নিজের ভেতরের মানুষটার সঙ্গে কথা বলতে চাই। সেই ছোটবেলার নদী, পুকুর, মাঠ,মাটির গন্ধ ফিরে পেতে চাই।

জীবন একটা উপন্যাস, আর ৫৫-টা যেন তার নতুন অধ্যায়। এই অধ্যায়ে হয়তো দৌড় কম, ভাবনা বেশি। একটু ধীরে চলা, একটু পুরনো স্মৃতির পাতা উল্টানো। একটা সোজা কথা—সময় বয়ে যাবে, কিন্তু তার প্রতিটা মুহূর্ত বেঁধে রাখতে পারলে তবেই জীবনের মানে খুঁজে পাওয়া যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *