এখনও আমি বেঁচে আছি ঘুরে বেড়াচ্ছি ভাবতেই অবাক লাগে কেমন
কিরোর মতে আমার মরে যাওয়া উচিত ছিলো গতবছরেই
অথচ এখনও—ফুরফুরে হাওয়া লাগছে গায়ে প্রতিদিন
এই নিয়ে তোমাকে একটা মজার চিঠি লিখবো ভেবেছিলাম
সেই চিঠি আজও আমার লেখা হলো না
ক্যাপ্টেন ঘোষের বাড়ি গিয়েছিলাম আমি সেদিন
ক্যাপ্টেন ঘোষের মেয়ে, রীনা—হারমোনিয়ম বাজিয়ে গান শোনালো তিনটে
রীনা সপ্তাহে দু’বার গীতবিতানে যায়, চুলে কেয়ো-কার্পিন মাখে
টুকিটাকি সাহিত্যও পড়ে শুনলাম—
ক্যাপ্টেন ঘোষ বাংলা ছবি একটাও দ্যাখেন না
মোড় বেঁকানোর সময়, মোটরগাড়ি, একটু আস্তে চালানো উচিত
এক শিকারী ভদ্রলোকের সঙ্গে সেদিন আলাপ হলো আমার
চওড়া একটা চাতালে আমরা দাঁড়িয়েছিলাম—
তিন টোক পুরোনো মদে তিনি হঠাৎ চিৎকার করে উঠলেন :
আমার চামড়া আগে কালো ছিলো
আপনি জানেন, কোন্ আবহাওয়ায় বাঘের চামড়া মোটা হয়?
সারা বছর—কলকাতার প্রত্যেকটা গলি, কানাগলি, ঘুরে বেড়িয়েছি আমি
ক্যারাম্-ও খেললাম কয়েকদিন আগেকার মতো—
যেসব বইগুলো কিনবো ভেবেছিলাম আজও আমার কেনা হয়নি সেসব
যেখানেই গেছি, হৈ-হট্টগোল চিৎকার আর বাজিমাৎ
হৈ-হট্টগোল চিৎকার, আর সারাটা বছর
কতো বিদেশী অতিথি এলো কলকাতায়—স্কুলের মেয়েরা
এক রঙের কাপড় পরে গাইলো জাতীয় সঙ্গীত—
হাওয়ায় ফুলে উঠলো সাতষট্টি
তোমার মুখ শব্দহীন ছড়িয়ে পড়লো চারপাশে