হৃত দুল
দঃ২৪ পরগণা জেলার এক গ্রামে সমিতার সংসারে স্বামী শাওনের সাথে দেড় বছরের শিশু কন্যা সীথির বসবাস। মোটামুটি ঝামেলা বর্জিত গ্রামটিতে ওদের সংসারটা শান্তির তপোবন।
কিন্তু সুখের অপার সাগরে দুঃখও মাঝেসাঝে উঁকিঝুকি দেয়। তরুণী মা তার সোনার দুলজোড়া
বিছানার একপাশে রেখে নৈশঘুমের তোড়জোড় করে।কিন্তু ভোরে উঠে তাজ্জব।একটা দুল লা-পতা।কিভাবে হল? কিছুতেই বোধগম্য হয় না।
তাই বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে শাওনকে শুধোয়, আমার একটা দুল কি দেখেছ?
-না, তোমার দুলের খবর আমি কি করে জানব? শাওনের জবাব।
সেও খুব বিচলিত হয়ে বাড়ীর সম্ভাব্য জায়গাগুলো তন্নতন্ন খোঁজে। তবে ব্যর্থতার ক্ষোভ মনে বিন্দু বিন্দু জমে।
সমিতাও সেসব বুঝে অন্য আশঙ্কায় ভোগে।সে ভাবে, কেউ কি দুলটা চুরি করল? সাঁতপাঁচ ভেবেও কোনো কূলকিনারা পায় না।
এদিকে নিদ্রাভঙ্গের পর সীথি তারস্বরে কান্না জোড়ে।সে কেঁদেই চলে। তখুনি মা-বাবার ঘোরতর সন্দেহ,তবে কি মেয়েটা সেই দুলটা গিলেছে?
তাড়াতাড়ি কলকাতায় এসে এক চিকিৎসকের শরণাপন্ন হল। ওনাকে সব ব্যাপারটা খুলে বলে সমিতা।এরপর শিশুর খাদ্যনালীর এক্স-রে করা হল। হ্যাঁ, ঠিক তাই। কোনভাবে শিশুটি সেটা গিলেছে। এরপর শিশুটিকে অজ্ঞান করে ‘ইসোফ্যাগোস্কপি’র মাধ্যমে খাদ্যনালীতে পাইপ ঢুকিয়ে ফরসেপ করলে দুলটি বেরিয়ে আসে। চিকিৎসকদের মতে, শিশুটির খাদ্যনালী পাতলা হওয়ায় দুলটি সেখানেই আটকে ছিল।
সমিতার মুখে বিজয়ী-হাসি। বিজয়িনী। কান্না উধাও। বরং হাসি হাসি মুখে বাবা-মার সাথে সীথি বাড়ী ফেরে।