হাটে যাবার প্রস্তুতি, হারাণ কাকা
কাপড়ের বোঁচকা চাপিয়ে দেয় গাড়িতে
তিন মাইলের পথ,সে হেঁটেই চলে।
সকালের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সবাই
আমি ও বাবা সকালের চা খেয়ে
সাইকেলে চাপি, আমার হাতে থাকে
টিফিন কেরিয়ার, মায়ের তৈরি গমের রুটি
আর আলু চচ্চরি।
পরাণ জ্যেঠু দই ও মিষ্টির ভাঁড় নিয়ে
দুলতে দুলতে চলে, ছিদাম চাচা গরু নিয়ে
চলে হাটের দিকে। সমীর মামার হাতে
পাম্পার আর সাইকেলের টিউব, সাথে আরো
সাইকেল সারানোর যন্ত্রপাতি,রিক্সায় চেপে চলে সে।
রিক্সা বলতে তখন সেই গোপাল হিন্দুস্থানি
ভারি আজব লোক, পদবী কি ছিল জানা নেই
হিন্দি বলত তাই হিন্দুস্থানি হয়ে যায়।
সেই প্রথম রিক্সা চড়ার আনন্দ আর জীবনে পাইনি,
প্রথম রিক্সা চেপে হাটে পৌঁছেছিলাম, সবুজ ধানের
খেতের পাশ দিয়ে সেই যে নদী,তার পাড়
ধরে চলার আনন্দ আজো বুক ভরে আছে,
আজও সেই হাটের স্বপ্ন জাগে হৃদয়ে ।
একটি সোনালি হাটের ছবি,বহুদিন দেখিনি-
আমার তখন কত বয়স, ছয় সাত,কান্তা নাপিতের
কাছে সেই হাটে চুল কাটতে হত, সাথে থাকত
আদরী লজেন্স এক পয়সার,
বিলিতি সেন্টের বোতল একবার পুজোয় এসেছিল ঘরে
সেই হাট থেকে।
সে সব রঙিন হাটের ছবি এখনো ভেসে ওঠে,
দীর্ঘতর হয়, আজ জোছনা রাতে
বাইরে দাঁড়ালে
আমি নিঃসঙ্গ একা
উদ্দেশ্যহীন ভাবে হেঁটে বেড়াই হাট ভাঙ্গা
মাঠের ওপর দিয়ে !