Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » হত্যা রহস্য || Panchkari Dey » Page 4

হত্যা রহস্য || Panchkari Dey

নগেন্দ্রনাথ সেই শিবলিঙ্গ মূৰ্ত্তিটি হাতে তুলিয়া লইয়া বিশেষরূপে দেখিতে লাগিলেন। ক্ষণপরে বলিলেন, “এটি আপনি কোথায় পাইলেন?”

“একটি পাই নাই—দুটি পাইয়াছি,” বলিয়া অক্ষয়কুমার আর একটি ঠিক সেইরূপ শিবলিঙ্গ নগেন্দ্রনাথের সম্মুখে রাখিলেন।

নগেন্দ্রনাথ বিস্মিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “এদুটি আপনি কোথায় পাইলেন?”

অক্ষয়কুমার বলিলেন, “একটি মৃতব্যক্তির পার্শ্বে কুড়াইয়া পাইয়াছি, আর একটি সেই মৃত স্ত্রীলোকের আঁচলে বাঁধা ছিল।”

“আশ্চর্য্যের বিষয় সন্দেহ নাই। ইহার অর্থ কি, বুঝিতে পারা যায় না। সম্ভবতঃ এই দুটির বিষয় বিশেষ জানিতে পারিলে কেন এই দুইজন লোক খুন হইয়াছে, তাহা জানিতে পারা যাইবে।”

“আপনি এসম্বন্ধে কিছু জানেন?”

“না, তবে আমার একটি বন্ধু আছেন, তিনি এদেশের দেবদেবী সম্বন্ধে অনেক কথা জানেন, তিনি হয়ত কিছু সংবাদ দিতে পারেন।”

“আপনি একটা কাছে রাখুন তাঁহাকে দেখাইবেন। আমি আপনার সমস্ত কথার উত্তর দিয়াছি, এখন আমি আপনাকে দুই-চারিটা কথা জিজ্ঞাসা করিতে চাই।”

“স্বচ্ছন্দে।”

“কাল রাত্রিতে প্রথমে আপনি যাহা যাহা দেখিয়াছিলেন, সকল কথা আমায় খুলিয়া বলুন।” নগেন্দ্রনাথ সমস্ত বলিলেন, ডিটেটিভ মহাশয় নীরবে বিশেষ মনোযোগের সহিত সকল শুনিয়া বলিলেন, “লোকটা বুকের পকেটে বরাবর হাত দিয়াছিল?”

“হাঁ।”

“সে একটা পিস্তল—রিভলবার। আমরা যেটা তাহার পকেটে পাইয়াছি; কিন্তু মূল্যবান্ যাহা ছিল তাহা কিছু পাই নাই।”

‘কেমন করিয়া জানিলেন, কোন মূল্যবান্ সামগ্রী তাহার পকেটে ছিল?”

“তাহা না হইলে সে-লোক রিভলবার পকেটে করিয়া বাহির হইত না।”

“হয়ত আত্মরক্ষার জন্যই পিস্তল সঙ্গে রাখিতে পারে।”

“তা হ’তে পারে। কিন্তু সে যে ছদ্মবেশ ধারণ করিয়াছিল তাহাতে তাহার নিকটে যে মূল্যবান্ কিছু আছে, তাহা কেহ ভাবিত না। মৃত ব্যক্তির নিকটে হয় অনেক টাকার নোট বা কোন মূল্যবান্ কাগজ ছিল। ইহাতে আমি যাহা স্থির করিয়াছি, তাহাই আসিতেছে।”

“আপনি কি স্থির করিয়াছেন?”

“এই ভদ্রলোক হিন্দুস্থানী সাজিয়া রাণীর গলিতে রাত বারটার সময়ে আসিয়াছিল। স্ত্রীলোকটির সঙ্গে এত রাতে এই নির্জ্জন স্থানে দেখা ‘করিবার কথা ছিল; পাছে কেহ তাহাকে চিনিতে পারে বলিয়া ছদ্মবেশে আসিয়াছিল। এই লোক, নিজের কাছে টাকাই থাক্ বা মূল্যবান্ কোন কাগজ‍ই থাক্‌ স্ত্রীলোকটিকে দেয়—সে তাহাকে এই শিব ঠাকুরটি দেয়।”

“কেন?”

“কেন? রসীদের মত। স্ত্রীলোকটি যে টাকা—মনে করুন টাকাই পাইল—তাহার প্রমাণস্বরূপ পুরুষটিকে এই সিন্দূরমাখা শিব দেয়। সেই লোক শিবটিকে নিজের পকেটে যেমন রাখিতে যাইবে অমনি স্ত্রীলোকটি টাকা তাহার হস্তগত হওয়ায় তাহার বুকে ছুরি মারে। লোকটির হাত হইতে শিব পড়িয়া যায়—সে তখন স্ত্রীলোকের কাপড় টানিয়া ধরে। কিন্তু স্ত্রীলোক কাপড় টানিয়া লইয়া ছুটিয়া পালায়; সেই টানাটানিতে কতকটা কাপড় সেই মৃত ব্যক্তির হাতের মধ্যে রহিয়া যায়।”

“এ কেবল আপনার ধারণা মাত্র, ইহার কোন প্রমাণ নাই।”

“এখন ধারণা মাত্র, কিন্তু আপনাকে পরে স্বীকার করিতে হইবে যে, আমার ধারণা মিথ্যা নয়।”

“দ্বিতীয় শিবলিঙ্গের বিষয় কি?”

“হাঁ, স্ত্রীলোকটি প্রথম ব্যক্তিকে খুন করিয়া টাকা লইয়া সত্বর গঙ্গার ধারে আসে। সেখানে এক ব্যক্তি তাহার নিকট হইতে টাকা লইবার জন্য অপেক্ষা করিতেছিল। স্ত্রীলোকটি তাহাকে টাকা—মনে করিবেন না যে, আমি স্থির নিশ্চয় হইয়া বলিতেছি যে, টাকাই ইহাদের নিকটে ছিল—সম্ভবতঃ কোন খুব মূল্যবান কাগজ ছিল—যাহাই হউক, স্ত্রীলোকটি ঐ ব্যক্তিকে টাকা দিলে সেও রসীদের মত তাহাকে একটা সিন্দূর মাখা শিব দেয়। সে শিবটি আঁচলে বাঁধিয়া চলিয়া আসিতেছিল, ঠিক এমনই সময়ে ঐ ব্যক্তি তাহার বুকে ছোরা মারে। তৎপরে মৃতদেহ টানিয়া আনিয়া গঙ্গায় ফেলিবার চেষ্টা করিতেছিল; সেই সময়ে কোন লোকের পায়ের শব্দ শুনিয়া পলাইয়া যায়।”

“কিন্তু এই ব্যক্তি এই স্ত্রীলোককে কেন খুন করিল?”

অক্ষয়কুমার কোন উত্তর না দিয়া শিষ দিতে লাগিলেন। ক্ষণপরে চিন্তিতভাবে “এটা জানিতে পারিলেই আমি খুনী ধরিতে পারি, ঐখানেই যত গোল।”

নগেন্দ্রনাথ কোন কথা কহিলেন না। তখন অক্ষয়কুমারবাবু হাসিয়া বলিলেন, “আপনি ডিটেটিভ উপন্যাস লিখেন, এ-ব্যাপারটা কিরকম বুঝিতেছেন?”

নগেন্দ্রনাথ বলিলেন, “উপন্যাস অপেক্ষাও এ খুনের ব্যাপার রহস্যজনক বলিয়া বোধ হইতেছে।”

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *