Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » হত্যা রহস্য || Panchkari Dey » Page 26

হত্যা রহস্য || Panchkari Dey

অক্ষয়কুমার কিয়দ্দূর আসিয়া বলিলেন, “আসুন, একবার গুরুগোবিন্দ সিংহের সঙ্গে দেখা করিয়া যাই।”

উভয়ে গুরুগোবিন্দ সিংহের বাসায় আসিলেন। সৌভাগ্যের বিষয়, তিনি তখন বাসায় ছিলেন। তিনি তাঁহাদের উভয়কে সমাদরে বসাইলেন। অক্ষয়কুমার বলিলেন, “নোট সম্বন্ধে আপনাকে দুই- একটা কথা জিজ্ঞাসা করিবার জন্য আসিলাম।”

গুরুগোবিন্দ বলিলেন, “বলুন, কি জানিতে চাহেন?”

“যে দারোয়ান আপনার নামের চিঠীসহ নোট আপনার চাকরকে দিয়াছিল, তাহাকে এখন দেখিলে সে চিনিতে পারিবে?”

“সে বলে যে, লোকটা ছদ্মবেশ পরিয়া আসিয়াছিল। তাহার বড় লম্বা দাড়ী ছিল; বোধ হয়, সে দাড়ী পরচুলের হইবে।”

“তবে সে তাহাকে তখনই ধরিল না কেন?’ “সে লোকটা এক মিনিটও দেরী করে নাই।”

“যাহা হউক, নোটগুলি কি দেখিতে পাইব?”

“পাইবেন,” বলিয়া গুরুগোবিন্দ অন্য গৃহ হইতে নোটগুলি আনিয়া অক্ষয়কুমারের হাতে দিলেন। তিনি নোটগুলি বিশেষরূপে দেখিয়া বলিলেন, “এই দশখানা নোটই কি আপনি হুজুরীমলবাবুকে রাখিতে দিয়াছিলেন?”

“না।”

অক্ষয়কুমার সবিস্ময়ে বলিলেন, “তবে এ নোট কোথা হইতে আসিল?”

“গুরুগোবিন্দ সিং বলিলেন, “আমিও ইহার কিছুই ভাবিয়া পাই নাই। এ নোট আমি হুজুরীমলের

নিকট জমা রাখি নাই; সে নোটের নম্বর আমার কাছে আছে—সে এ নোট নয়।”

“ইহার মধ্যে কি একখানিও আপনার সেই নোট নয়?”

“একখানিও না।”

“তবে এ নোট কোথা হইতে আসিল?”

‘কেমন করিয়া বলিব? বোধহয়, যে চুরি করিয়াছিল, সে নোট বদলাইয়া ফেলিয়াছিল, এখন সেই বদ্‌লান নোট ফেরৎ দিয়াছে।”

“কেন ফেরৎ দিয়াছে?”

“হয়ত ভয়ে–হয়ত বা অনুতাপে।”

“যে এই দশ হাজার টাকা পাইবার জন্য দুইটা খুন করিয়াছিল, সে কি সহজে টাকা ফেরৎ দেয়?”

“আমি ত কিছুই বুঝিতে পারিতেছি না।”

“যাহা হউক, আপনার নোট কে ভাঙাইয়াছিল, জানিতে পারিলে খুনীর সন্ধানও হইবে। আপনার সেই নোটের নম্বরগুলি দিন।”

গুরুগোবিন্দ উঠিয়া গিয়া আবার একখানি কাগজ লইয়া আসিলেন।

অক্ষয়কুমার নোটের নম্বর লইয়া গুরুগোবিন্দের বাড়ী হইতে বহির্গত হইলেন। নগেন্দ্রনাথ পথে আসিয়া বলিলেন, “এ নোট সম্বন্ধে আপনি কি মনে করেন?”

অক্ষয়কুমার বলিলেন, “আমি এখন কিছুই মনে করি না। আশ্চর্য্যের বিষয়, এই নোট কে ভাঙাইয়াছিল, তাহা এখনও প্রকাশ পায় নাই।”

“হয়ত সে নোট এখনও কেহ ভাঙায় নাই।”

“এমন কে মহাত্মা যে, ঘর থেকে দশ হাজার টাকা দান করিবে?”

“ইহাও ত গুরুগোবিন্দ সিং-এর একটা ফন্দী হইতে পারে।”

“নগেন্দ্রবাবু ইহা উপন্যাস লেখা নয়—ইহাতে অনেক গোলযোগ—ক্রমেই গোলযোগের বৃদ্ধি রহস্য ক্রমেই জটিল হইতেছে। যাহাই হউক, আমি আপনাকে একটা কাজের ভার দিতেছি।”

“বলুন।”

“এ নোট কেহ কোথায়ও ভাঙাইয়াছে কি না, আপনি এখন তাহারই সন্ধান করুন।”

“যথাসাধ্য চেষ্টা করিব।”

“যদি কেহ নোট ভাঙাইয়া থাকে, নিশ্চয়ই জানিতে পারা যাইবে।”

“তাহা হইলে কি আপনি খুনী ধরিতে পারিবেন?”

“খুব সম্ভব। আমার বিশ্বাস। হুজুরীমল যখন খুন হয়, তখন তাহার নিকট গুরুগোবিন্দ সিং-এর দশ হাজার টাকার নোট ছিল। যে খুন করিয়াছে, সে সেই নোটগুলি লইয়াছিল।”

“তাহাই যদি হয়, তবে সে বেনামী করিয়া নোট ভাঙাইতে পারে।”

“সম্ভব; তবুও তাহাকে বাহির করিতে পারিলে অনেক সন্ধান পাওয়া যাইবে। আপনার উপরে এই ভার থাকিল।”

“প্রাণপণে চেষ্টা করিব।”

“এদিকে আমি অন্য চেষ্টায় রহিলাম। যতদূর যাহা করিতে পারেন, সংবাদ দিবেন।”

“দিব, তবে মধ্যে মধ্যে আপনার সঙ্গে দেখা হওয়া প্রয়োজন।”

“দেখা করিব বই কি।”

তখন উভয়ে উভয় দিকে প্রস্থান করিলেন। নগেন্দ্রনাথ সেইদিন হইতে সেই নোট কোথায় কে ভাঙাইয়াছে, তাহারই সন্ধানে ঘুরিতে লাগিলেন।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *