Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » হত্যা রহস্য || Panchkari Dey » Page 24

হত্যা রহস্য || Panchkari Dey

অক্ষয়কুমার নগেন্দ্রনাথকে কি বলিতে যাইতেছিলেন, এই সময়ে সবেগে তথায় যমুনাদাসের দ্রুতবেগে প্রবেশ। তিনি অতি ক্রুদ্ধভাবে অক্ষয়কুমারের দিকে চাহিয়া হাঁপাইতে হাঁপাইতে বলিলেন, “আমি আপনার সন্ধানেই এখানে আসিয়াছি।”

অক্ষয়কুমার অতি গম্ভীরভাবে বলিলেন, “আমি ত উপস্থিতই আছি।”

যমুনাদাস ক্রোধভরে বলিলেন, “মহাশয় আপনি আমাদের গঙ্গার সহিত এরূপ ব্যবহার করিয়াছেন—কোন্ সাহসে?”

অক্ষয়কুমার মৃদুহাস্য করিয়া বলিলেন, “ওঃ! তিনি কি আপনাকে আমায় শাসন করিতে পাঠাইয়াছেন?”

“না, আমি নিজেই আসিয়াছি। আপনি জানেন গঙ্গা আমার ভাবী স্ত্রী।”

“তাহা অবগত আছি।”

“তবে আপনি কোন্ সাহসে তাহাকে অপমান করিয়াছেন?”

“তাঁহাকে অপমান করি নাই—কর্তব্যের অনুরোধে তাঁহাকে দুই-একটা কথা জিজ্ঞাসা করিয়াছি মাত্ৰ।”

বন্ধুর সহিত অক্ষয়কুমারের একটা বিবাদ ঘটে দেখিয়া নগেন্দ্রনাথ বলিলেন, “যমুনাদাস, অক্ষয়বাবু যাহা জিজ্ঞাসা করিয়াছেন, প্রকৃতই তাহা তিনি কর্তব্যের অনুরোধে করিয়াছেন।”

“তবে কি উনি মনে করেন যে, গঙ্গা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত?”

অক্ষয়কুমার ধীরে ধীরে বলিলেন, “তা না হলে তিনি তাঁহার কাপড় পরাইয়া রাত্রি বারটার সময়ে রঙ্গিয়াকে রাণীর গলিতে হুজুরীমলের সঙ্গে দেখা করিতে পাঠাইয়াছিলেন কেন?”

যমুনাদাস অতিশয় রুষ্ট হইয়া বলিলেন, “না, গঙ্গা পাঠায় নাই।”

অক্ষয়কুমার কোনরূপ চাঞ্চল্য প্রকাশ না করিয়া গম্ভীরভাবে বলিলেন, “প্রমাণ লইয়া আমাদের কাজ—আমরা ইহার প্রমাণ পাইয়াছি। আপনার কথা শুনিব কেন?”

“আপনি কি মনে করেন, গঙ্গা এই দুইটা খুন করিয়াছে?”

“না, তাহা বলি না—তবে তিনি ভিতরের অনেক রহস্য জানেন।”

“মিথ্যাকথা।”

“মহাশয়, মিথ্যাকথা নহে। রাত্রে হুজুরীমলের সঙ্গে তাঁহারই দেখা করিবার কথা ছিল; তাঁহাকে লইয়াই হুজুরীমল পলাইবে মনে করিয়াছিলেন। যে কারণেই হউক, তিনি অনুগ্রহ করিয়া না গিয়া তাঁহার কাপড় পরাইয়া রঙ্গিয়াকে পাঠাইয়াছিলেন।”

“বুড়া হুজুরীমলের সঙ্গে সে পলাইতে যাইবে কেন?” বিশেষতঃ তাহার সহিত আমার বিবাহ স্থির হইয়াছে।”

“মহাশয়ের এক পয়সারও সঙ্গতি নাই; কিন্তু হুজুরীমলের টাকা অনেক ছিল।”

যমুনাদাস ক্রোধে উন্মত্তপ্রায় হইয়া বলিলেন, “আমি জানি, জুয়া খেলিয়া হুজুরীমলের এক পয়সাও ছিল না। গঙ্গাও তাহা জানিত।”

অক্ষয়কুমার মৃদু হাসিয়া বলিলেন, “তবে গঙ্গা আরও জানিত যে, সেই খুনের রাত্রে হুজুরীমলের কাছে দশ হাজার টাকা ছিল।”

যমুনাদাস সে কথায় কান না দিয়া বলিলেন, “আমার কোন কাজ কৰ্ম্ম ছিল না বলিয়া আমি এই সন্ধান করিব মনে করিয়াছিলাম। এখন গঙ্গার অপযশ ও মিথ্যা অপবাদ দূর করিবার জন্য আমি প্রাণপণে চেষ্টা করিয়া যে খুন করিয়াছে, তাহাকে বাহির করিব।”

অক্ষয়কুমার বলিলেন, “ভগবান্ আপনার সাহায্য করুন, আমরা ত এক রকম হাল ছাড়িয়া দিবার মত হইয়াছি।”

যমুনাদাস সবেগে বলিলেন, “আমি জানি, এই খুন কে করিয়াছে। পঞ্জাবের সম্প্রদায় হইতে যে এ খুন হইয়াছে, তাহা আমি বেশ শপথ করিয়া বলিতে পারি। আমি জানি, গুরুগোবিন্দ সিংহই খুন করিয়াছে, আমি শীঘ্রই ইহার প্রমাণ দিব —দেখিবেন।”

এই বলিয়া যমুনাদাস উঠিয়া গেলেন। তখন নগেন্দ্রনাথ বলিলেন, “যমুনাদাস যাহা বলিল, আমার মনেও তাহাই লয়।”

অক্ষয়কুমার বিরক্তভাবে বলিলেন, “ও কথা অনেকবার শুনিয়াছি; আমি বলিতেছি, আপনার সম্প্রদায়ের সঙ্গে এ খুনের কোন সম্বন্ধ নাই।”

নগেন্দ্রনাথ বলিলেন, “কিছুই ত স্থির হইতেছে না।”

অক্ষয়কুমার বলিলেন, “একটা কিছু স্থির করিতে হইবে; এখন আমার সঙ্গে একবার আসুন, একটা কাজ আছে।”

নগেন্দ্রনাথ সত্বর বেশ পরিবর্ত্তন করিয়া অক্ষয়কুমারের সহিত বাহির হইলেন। তাঁহারা উভয়ে ললিতাপ্রসাদের পিতার সহিত সাক্ষাৎ করিতে চলিলেন।

হুজুরীমলের খুনের সময়ে ললিতাপ্রসাদের পিতা কলিকাতায় ছিলেন না। পশ্চিমে গিয়াছিলেন। এখন তিনি কলিকাতায় ফিরিয়াছেন। অক্ষয়কুমার এ পর্য্যন্ত তাঁহার সহিত দেখা করিবার সুবিধা পান নাই; আজ তাহাই একবার তাঁহার সঙ্গে দেখা করা নিতান্ত প্রয়োজন মনে করিলেন। ভাবিলেন, যদি তাঁহার নিকটে কোন সন্ধান পান।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *