Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » হত্যা রহস্য || Panchkari Dey » Page 15

হত্যা রহস্য || Panchkari Dey

নগেন্দ্রনাথ ও অক্ষয়কুমার উভয়ে ষ্টেশনে আসিয়া আবার ট্রেনে উঠিলেন। অক্ষয়কুমার কোন কথা কহেন না দেখিয়া নগেন্দ্রনাথ বলিলেন, “যমুনাদাসের সঙ্গে এক সময়ে পড়িয়াছিলাম; অনেকদিন তাঁহার সঙ্গে আর দেখা হয় নাই।”

অক্ষয়কুমার সে কথায় আর কোন কথা কহিলেন না। তখন নগেন্দ্রনাথ বলিলেন, “আপনি যমুনাদাসকে কিরূপ দেখলেন?”

অক্ষয়কুমার গম্ভীরভাবে বলিলেন, “ফক্কোড়—এসব লোক দিয়া সংসারের কোন কাজ হইতে পারে না।”

“কিন্তু লোক মন্দ নয়—মন ভাল।”

“যাহারা বেশী বাচাল হয়, তাহারা প্রায়ই এক-একটি প্রকাণ্ড গাধা।”

“হুজুরীমলের সহিত ইহার বিশেষ আত্মীয়তা ছিল; হুজুরীমল খুন হওয়ায় এ বড় প্রাণে আঘাত পাইয়াছে। তাঁহার হত্যাকারীকে ধরিবার জন্য ব্যগ্র হইয়াছে। বলিতেছিল যে, আপনি যদি ইহাকে এই অনুসন্ধানে লয়েন।”

“এ না গঙ্গাকে বিবাহ করিবে?”

“হাঁ, তাতে আপত্তি কি?”

“আছে—এই গঙ্গাই সে রাত্রে হুজুরীমলের সঙ্গে তার বাড়ীতে দেখা করিয়াছিল। মাঝে মাঝে রাত্রে যাইত!”

“আপনি কেমন করিয়া জানিলেন?”

“হুজুরীমলের চাকর বলিয়াছিল, “একটি স্ত্রীলোক মধ্যে মধ্যে রাত্রে হুজুরীমলের সহিত দেখা করিতে যাইত,—তাহার হাতে একটা তিনখানা নীলপাথর বসান আংটী ছিল। এই গঙ্গার হাতে সেই আংটী আছে।”

“গঙ্গার হুজুরীমলের সহিত সাক্ষাৎ করা কি বিশেষ কোন আশ্চর্য্যের বিষয়?”

“তাহা নয়, যদি যমুনা —”

“আপনি যমুনার বিরুদ্ধে কিছু বলিবেন না, সে ইহার কিছুই জানে না।”

অক্ষয়কুমার হাসিয়া বলিলেন, ঔপন্যাসিক—উপন্যাসে সুন্দর মুখ—যাহা হউক, সে কথায় আর কাজ নাই। এখন কথা হইতেছে, রাঙ্গা শিব দেখিয়া সে মূৰ্চ্ছা যায় কেন?

“উমিচাঁদও মূৰ্চ্ছা গিয়াছিল।”

“সেই কথাই বলিতেছি। উমিচাঁদও মূৰ্চ্ছা যাইবার যে কারণ বলিয়াছিল, যমুনাও ঠিক তাহাই বলিল—আশ্চর্য্যের বিষয় সন্দেহ নাই। কাজেই বলিতে হয়, দু’জনের কথাই ঠিক নহে।

“তবে কি আপনি বলিতে চাহেন, যমুনা এই খুন করিয়াছে?”

“অতদূর বলি না। বোধহয়, উমিচাঁদ বা যমুনা খুন সম্বন্ধে জড়িত নহে; তবে ইহাও ঠিক, ইহারা খুন সম্বন্ধে অনেক কথা জানে।”

“এ কথা ঠিক নয়।”

“তাহা হইতে পারে—সে এ সম্বন্ধে সকল কথা জানে না। সে অর্দ্ধেক জানে, আর অর্দ্ধেক উমিচাঁদ জানে।”

“যদি তাহারা জানে, তবে প্রকাশ করিতেছে না কেন?”

“সম্ভবতঃ তাহারা কাহাকে রক্ষা করিবার চেষ্টা করিতেছে।”

“এমন কে আছে যে, তাহারা তাহাকে রক্ষা করিবার চেষ্টা পাইতেছে।”

“অনেকে হইতে পারে। এই মনে করুন, হুজুরীমলের স্ত্রীকে।”

নগেন্দ্রনাথ বিস্মিত হইয়া বলিলেন, “এ কথা হইতেই পারে না।”

অক্ষয়কুমার মৃদু হাসিয়া বলিলেন, “অনেক বিষয়ে পারে। এই দেখুন না, দুই কারণে হুজুরীমল খুন হইতে পারে; প্রথম কারণ টাকা—দ্বিতীয় কারণ ঈর্ষা।’

“টাকা সে রাত্রে তাঁহার নিকট ছিল না।”

“কোন মূল্যবান্ কাগজ-পত্রও থাকিতে পারে। যাহা হউক, এজন্য যদি কেহ তাহাকে খুন করিয়া না থাকে, তবে ঈর্ষাবশে খুন করিয়াছে।”

“আপনি কি মনে করেন যে, হুজুরীমলের স্ত্রী দাসীর উপর ঈর্ষা করিয়া স্বামীহত্যা করিয়াছে?”

“দাসীর উপর ছাড়া কি আর কাহার উপরে হইতে পারে না—এই মনে করুন না গঙ্গা।“

“গঙ্গার সঙ্গে যে তাহার কোন সম্বন্ধ ছিল, বোধ হয় না।”

“তবে সে লুকাইয়া রাত্রে তাহার নিকট আসিত কেন? সবই পরে জানা যাইবে। এখন আপনার বন্ধুকে দলে লওয়া যাওয়া যাক। তাহার দ্বারা গঙ্গার বিষয় অনেক জানা যাইবে।”

“সে কখনও তাহা প্রকাশ করিবে না।”

“মহাশয়ের বন্ধুটি যেরূপ বাচাল, তাহাতে তাহার নিকট হইতে কথা বাহির করিতে বিশেষ কষ্ট পাইতে হইবে না।”

নগেন্দ্রনাথ এ কাজটা ভাল বোধ করিলেন না। এইরূপে ভুলাইয়া কাহারও নিকট হইতে কোন গোপনীয় কথা বাহির করিয়া লওয়া বড়ই অন্যায়।

অক্ষয়কুমার তাহার মনের ভাব বুঝিয়া মৃদুহাস্য করিয়া বলিলেন, “নগেন্দ্রনাথবাবু, ডিটেকটিভগিরি করিতে হইলে এত ন্যায়-অন্যায়ের বিবেচনা করিতে গেলে চলে না।”

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *