Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » স্বাধীনতা || Samarpita Raha

স্বাধীনতা || Samarpita Raha

প্রতাপ বাবুর দুই ছেলে অসিত ও সুস্মিত ।দুই ছেলে বিবাহিত।প্রতাপ বাবুর স্ত্রী প্রচন্ড রাগী।তিনি সংসারে যা করবে,সেটাই ঠিক।

বৌমারা আধুনিকা ,লেখাপড়া জানে।।কিন্ত তাঁর অভিমত বৌমারা চাকরী করতে পারবে না।ছোট ছেলে বি টেক ইঞ্জিনিয়ার ,তার বৌ পলিটেকনিক ইঞ্জিনিয়ার।নিজেরা পছন্দ করে বিয়ে করেছে। শ্বশুর বাড়ি এসে চাকরি বন্ধ।ছোট বৌ গুমরিয়ে মরে।স্বাধীনতার হীনতায় কে বাঁচতে চাই!

বিয়ের তিনমাস বাদে সুস্মিত ও তার বৌ হনিমুন করতে সিমলাতে যায়। ওখান থেকে ফেরার পথে দুষ্কৃতীদের কবলে পড়ে সুস্মিত মারা যায়।

নতুন বৌকে সবাই অপয়া বলতে শুরু করে।শাশুড়ি বললেন তোমাকে চুলের জন্য সুন্দরী লাগে,তাই এখন ছেলে নেয় তোমাকে আর সুন্দর থাকতে হবে না।আগের দিনে ঐ জন্য বর মরলে চুল কেটে কুৎসিত করা হতো।মায়ের মেজাজের কাছে বাড়ির সবাই ভয়ে থাকত।এমনকি শ্বশুরমশায় ও ভয় পেতেন।একদিন বৌমার বড় বড় চুলগুলো কাঁচি দিয়ে কেটে দেয়।বৌকে কুৎসিত করতে চেয়েছিল।বৌ চুল কেটে আরো অন্য রকম লাগতো ,আসলে বৌমা খুব সুন্দরী।

সবাই বলতে লাগল বৌকে চাকুরী করতে দিতে।শ্বশুর ও বলেন ওকে ছেড়ে দাও,চাকুরী করুক ও মুক্ত বিহঙ্গের মতো উরুক।সবে পঁচিশ বছর ।কে কার কথা শোনে।এদিকে নিজে মহিলা হয়ে আরেক নারীর কষ্ট বুঝবেন না,এদিকে নিজে নারী কল‍্যান সমিতির সদস্যা।বৌমার পরণে সাদা শাড়ি দেখলে খুব খুশী হন।তাঁর ছেলে নেই তখন বৌমা সব নিয়ম পালন করবে।খাবার সবার আমিষ খাবে।তাতে আপত্তি নেই।
ছোটবৌ ,বরজাকে ভাসুরের সাথে দেখলে কষ্ট পাই।
শ্বশুর মশায় শাশুড়ির সাথে পারেন না।উনিও বলতেন ওকে মুক্তি দিয়ে দাও।বৌমাদের স্বাধীনতা দাও,চাকরি করতে দাও,যুগ পাল্টে গেছে।

ছোট বৌ ঘরে বন্দি থাকলে মারা পড়বে।ওদিকে বাড়িতে ফিরে যাবে সেটাও অসম্ভব।সৎমার অত‍্যাচার আরও বেশী।
শাশুড়ি বলেন বৌ কি পাখি খাঁচা খুলে মুক্তি দেব!!
না ও চাকরি করবে না।আমাদের টাকায় খাবে।কে কাকে বোঝাবে।
বড় বৌ মুখরা,সে শাশুড়িকে বলেই বসে আপনি যে নারী কল‍্যান সমিতি যান,কত নারীদের নিয়ে বক্তৃতা দেন।নিজের ছেলের বৌদের বেলায় সব আপত্তি।

শ্বশুর ছোট বৌয়ের বায়োডাটা নিয়ে বন্ধুর কাছে যায়।চাকরি করলে মন ভালো থাকবে।ব‍্যাস ভালো রেজাল্ট চাকরি হয়ে যায়।যেখানে চাকরি পায়,তার পাশেই একটা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে ছোট বৌয়ের থাকার ব‍্যাবস্হা করেন।কিছুই বলেন নি শাশুড়ীকে।
শ্বশুর বাড়িতে তুলকালাম,ছোট বৌ পলিয়েছে।
শ্বশুরমশায় বিপ্লবী সতীশ চক্রবর্তীর ছেলে,উনি স্বাধীনতা মানে ভালো করে জানেন।উনি খাঁচার থেকে পাখি উন্মুক্ত করে বলেন ,যা পাখি তোরে উড়তে দিলাম।জেনে রাখিস তোকে পুনরায় বিবাহ দেবো।আমি তোকে তখন সম্প্রদান করব।
ছোট বৌয়ের কাছে শ্বশুর অফিস থেকে দেখা করে বাড়িতে ফেরে।শাশুড়ি ওদিকে ছোট বৌয়ের বাপের বাড়ি খোঁজ নেন।তাদের জানিয়ে দেন তাদের মেয়ে পালিয়ে গেছে।বড় বৌ মাঝে মাঝে বাপের বাড়ি যাবার নাম করে ছোট জার কাছে থেকে আসে।প্রথম মাসের মাহিনে পেয়ে শ্বশুরবাড়ি এসে জানায় সে চাকরি পেয়েছে।শ্বাশুড়ি বলেন তুমি চলে গেলে আমাদের বলে যেতে পারতে।আমি এই এক মাস লজ্জায় নারী কল‍্যান সমীতিতে যায় নি।তারপর সব ঘটনা শুনে বলে তোমার ভাড়া ফ্ল্যাট থাক ,আমিও মাঝে মাঝে থাকব।আমি এইরকম খিটখিটে হয়ে গেছি,বাড়ি ছাড়া কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।আজ থেকে তোমরা স্বাধীন।হ‍্যাঁ অফিসে ড্রেস পরে যাবি,শাড়ি নয়।শ্বশুর বলে আজ থেকে আমার বৌমারা মুক্ত বিহঙ্গ।স্বাধীন যুগে সবাই স্বাধীন,আর বন্দিদশা নয়।শ
শাশুড়ী বলেন যা তাঁর করার কথা সেটা তোমাদের বাবা করে দেখিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress