Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » সেরা পাত্র || Maya Chowdhury

সেরা পাত্র || Maya Chowdhury

সেরা পাত্র

কলেজের ক্যান্টিনে বসে আড্ডা দেওয়া, টেবিল বাজিয়ে জীবনমুখী গান আজও নিখিলের মনে পড়ে। উঠতি প্রেমে হাবুডুবু। নিজের ক্লাসের মধ্যেই প্রেমপত্রের আদান প্রদান । যদিও ব্যর্থ প্রেমে ভাঙা হৃদয় বারবার মৃত্যুর মুখোমুখি হতে চেয়েছে।না- প্রেম নয়, এবার চাকরি খুঁজতে হবে। রোজগার। মা বাবাকে একটু ভালো রাখতে হবে।
– – অনেকগুলো বছর কোথা দিয়ে চলে গেল ।নিখিল কিছুদিন সোনার কাজ শিখতে মুম্বাই পাড়ি দিয়েছিল। আধপেটা খাওয়া ,অমানুষিক পরিশ্রম, ছোট্ট একটা ঘরে পা মেলা যায়না, চারজন একসাথে পাখা ছাড়া থাকা। এ জীবনটা অতীত হলেও নিখিলের কাছে এটাই শ্রেষ্ঠ জীবন।
– নিখিল। এই নিখিল- কে যেন ডেকে উঠল ।হঠাৎ করেই নিখিল পিছনে ফিরে দেখল ,তার ক্লাসের সব থেকে ভালো ছেলে মানস।
– একগাল হাসি হেসে ; ‘আরে মানস কেমন আছিস?’।
– – ভালো আছি ।নতুনবাজারে তোর দোকানের উদ্বোধন হয়েছে পয়লা বৈশাখ ,দেখলাম ।খুব ভালো সাজিয়েছিস।
– – হ্যাঁরে তুই আসলে ভালো লাগতো ।মনে ছিলনা, নিমন্ত্রণ কার্ড পাঠিয়ে দিতাম।
– আরে না ,বন্ধুর দোকান যখন খুশি যাব। তবে সোনা কেনার টাকা নেই ।এমনিই যেতাম। একটা কাজ পেয়েছি বেশি পাই না।
– – ওই জন্যই কষ্ট করে হাতের কাজ শিখেছিলাম। খাওয়া-পরার অভাব হবে না – কথাগুলো বলল নিখিল।
– – আমি পড়া করতে ভালোবাসি আমার দ্বারা হতো না নিখিল।
– কষ্ট করলে কেষ্ট মেলে – এটা মানিস তো মানস। কষ্টের ফল। বিনি পয়সায় পাইনি।
– – খুব ভালো করেছিস নিখিল।
– – খোকন, সুমন ওরা কি করছে?
– – ওরা জামা কাপড়ের দোকান খুলেছে ফুটপাতে।
ভালো রোজগার হয় ভালো আছে ওরা।
– – পৃথিবীটা বদলেছে ভাই। নয় খুব ভাল ছাত্র হবে, নয়তো হাতে কলমে শিক্ষা নেবে। মাঝের দলে থাকলে অসীম দুঃখ।
– – ঠিকই বলেছিস নিখিল। মধ্যদের সবক্ষেত্রেই কষ্ট। একেবারে ওপরে ওঠো, নয় তো একদম নিচে থাক। বর্তমান সমাজে মধ্যমমানের মানুষদের কষ্ট দেখে এটা শিখেছি। লকডাউন এর সময় না পেরেছি হাত পাততে, না পেরেছি কাউকে বলতে খাবার নেই। অথচ একেবারে নিচের তলার মানুষেরা বাড়তি খাবার বিক্রি করে দিচ্ছিল। প্রশাসন এনজিও সবাই তাদের সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিল।

– – বিয়ে করেছিস মানস?
– না! রোজগার নেই ।বাবা মারা গেল। মা আর বোন আমার কাছে। ওদেরই ভালো রাখতে পারিনা।
– আমি এক বছর হলো বিয়ে করেছি। আমার বউ কলেজে পড়ায়। খুব ভালো স্টুডেন্ট ছিলবলল নিখিল।
– বাহ্ ! তুই খুব একটা পড়াশোনা ভালোবাসতিস না। কিন্তু তোর বউ কত শিক্ষিত, খুব ভালো লাগলো । তোদের দুজনের জন্য অনেক শুভেচ্ছা রইল।
– – হুম। ও ভালো গান করে ।জানিস মানস, হাতে কাঁচা পয়সা না থাকলে সহজে সবাই ভালো পাত্র বলেনা। বিয়ের আগে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে প্রচুর খরচ করেছি ,বুঝে গেছে আমি মালদার।তাদের মেয়ে ভাল পাত্রর হাতে পড়েছে ।এখনকার মেয়েরা বাড়িতে রান্না করতে চায়না, খাবার অর্ডার করে। বড় পেমেন্ট করতে হয়। তারপর তো শ্বশুর বাড়ির লোকজন নিয়ে হৈ হুল্লোড় আছেই।ওর টাকা ওর হাতেই থাকে। আমার প্রয়োজন পড়ে না।
– – মানস শুনতে চাইছিল না, তবু নিখিলকে রাগিয়ে লাভ নেই। কখন কি দরকার পড়ে।
– – নিখিল চলি রে।মাকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যেতে হবে। অন্যদিন তোর দোকানে আড্ডা দেব,চলি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress