Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।

তণ্ডুর কর্কশ নীরস কণ্ঠস্বরে স্মৃতিতন্দ্রা ভাঙিয়া গেল। সচেতন হইয়া দেখিলাম, সে শীর্ণ অঙ্গুলির প্রান্তে আমার অসির ধার পরীক্ষা করিতেছে, আর কেশহীন ভ্রূ উত্থিত করিয়া শুষ্ক স্বরে কহিতেছে, অসির ধার আর বনিতার লজ্জা পরের জন্য, কি বলেন পত্তিনায়ক?

বলিলাম, অসির ধার বটে। বনিতার লজ্জার কথা বলিতে পারি না, আমি অনূঢ়।

আমি বলিতে পারি, আমি অনূঢ় নহি হা হা তণ্ডুর ওষ্ঠাধর তৃষ্ণার্ত বায়সের মতো বিভক্ত হইয়া গেল—কিন্তু আপনি যদি অনূঢ়, তবে এত তন্ময় হইয়া কাহার ধ্যান করিতেছিলেন? পরস্ত্রীর?

আকস্মিক প্রশ্নে নির্বাক্‌ হইয়া গেলাম, সহসা উত্তর যোগাইল না। তণ্ডু কি সত্যই আমার মনের অভিপ্রায় বুঝিতে পারিয়াছে? আত্মসংবরণ করিয়া তাচ্ছিল্যভরে বলিলাম, কাহারও ধ্যান করি নাই, তোমার শিল্প-নৈপুণ্য দেখিতেছিলাম।

বিকৃত হাস্য করিয়া তণ্ডু পুনশ্চ অসি অঙ্গার মধ্যে প্রোথিত করিল, বলিল, অহিদত্ত রঞ্জুল, আপনি সুন্দর যুবাপুরুষ, এই দীন অসিধাবকের কারু-নৈপুণ্য দেখিয়া আপনার কি লাভ হইবে? বরং নগর-উদ্যানে গমন করুন, সেখানে বহু রসিকা নগর-নায়িকার কলা-নৈপুণ্য উপভোগ করিতে পারিবেন।

আমার মনে একটু ক্রোধের সঞ্চার হইল। এই হীনজাত বৃদ্ধ আমাকে ব্যঙ্গ করিতেছে। ঈষৎ রুক্ষ স্বরে বলিলাম, আমি কোথায় যাইব না-যাইব তাহা আমার ইচ্ছাধীন। তুমি সেজন্য ব্যস্ত হইও না।

তণ্ডু আমার পানে একটা চকিত-গুপ্ত চাহনি হানিয়া আবার কার্যে মন দিল।

কিয়ৎকাল পরে বলিল, ভাল কথা, পত্তিনায়ক, আপনি তো যোদ্ধা; শত্রুর উপর অসির ধার নিশ্চয় পরীক্ষা করিয়াছেন?

গম্ভীর হাসিয়া বলিলাম, তা করিয়াছি। দুই বৎসর পূর্বে দেবপাদ কণিষ্ক যখন তোমাদের এই উজ্জয়িনী নগরী অধিকার করেন, তখন নাগরিকের কণ্ঠে আমার অসির ধার পরীক্ষা করিয়াছি।

তণ্ডুর চক্ষু দুটা ক্ষণেক আমার মুখের উপর নিপলক হইয়া রহিল; তারপর শীৎকারের মতো স্বর তাহার কণ্ঠ হইতে বাহির হইল, পত্তিনায়ক, আপনি বীর বটে। কিন্তু সেজন্য কৃতিত্ব কাহার?

কাহার?

আমার—এই হীনজন্মা অসিধাবকের। কে আপনার অসিতে ধার দিয়াছে? আমারই মার্জিত অস্ত্রের সাহায্যে আপনারা আমার ভ্রাতা-পুত্রকে হত্যা করিয়াছেন, স্ত্রী-কন্যাকে অপহরণ করিয়াছেন।

আমার মুখ উত্তপ্ত হইয়া উঠিল। বলিলাম, শকজাতি বর্বর নয়। তাহারা যুদ্ধ করিয়াছে কিন্তু নারীহরণ কদাপি করে নাই।

তণ্ডু কণ্ঠে খলতার বিষ মিশাইয়া বলিল, বটে! তবে বোধ হয় শকজাতি পরস্ত্রীকে চুরি করিতেই পটু।

ক্রোধের শিখা আমার মাথায় জ্বলিয়া উঠিল। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে তণ্ডুর অভিপ্রায়ও বুঝিতে পারিলাম; সে আমার সহিত কলহ করিতে চাহে—যাহাতে আমি আর তাহার গৃহে আসি। রল্লার লালসায় আমি তাহার গৃহে আসি—ইহা সে বুঝিয়াছে। কিন্তু বুঝিল কি করিয়া?

কষ্টে ক্রোধ দমন করিয়া বলিলাম, তণ্ডু, তুমি বৃদ্ধ, তোমার সহিত বাগবিতণ্ডা করিতে চাহি না। আমার অসি যদি তৈয়ার হইয়া থাকে, দাও।

সে অসি জলে ড়ুবাইয়া আবার অঙ্গুলির সাহায্যে ধার পরীক্ষা করিল। বলিল, অসি তৈয়ার হইয়াছে।

তণ্ডুর সহিত কলহ করিয়া আমার লাভ নাই। তাহাকে তুষ্ট করিবার অভিপ্রায়ে আমি পাঁচটি স্বর্ণমুদ্রা তাহার সম্মুখে ফেলিয়া দিয়া বলিলাম, এই লও পঞ্চ নাণক—তোমার পুরস্কার।

তণ্ডুর চক্ষু সহসা তাহার অঙ্গারকুণ্ডের মতোই জ্বলিয়া উঠিয়া আবার নিবিয়া গেল। সে চেষ্টাকৃত ধীর স্বরে বলিল, আমার পরিশ্রমের মূল্য এক নাণক মাত্র। বাকি চার নাণক আপনি রাখুন, অন্যত্র প্রমোদ ক্রয় করিতে পারিবেন। কিন্তু অসির ধার পরীক্ষা করিবেন না?

উদ্গত ক্রোধ গলাধঃকরণ করিয়া আমি বলিলাম, করিব, দাও। বলিয়া হাত বাড়াইলাম।

তণ্ডু কিন্তু অসি দিবার কোনও চেষ্টাই করিল না, তির্যক চক্ষে চাহিয়া বলিল, পত্তিনায়ক, নিজের উপর কখনও নিজের অসির ধার পরখ করিয়াছেন? করেন নাই! তবে এইবার করুন।

বৃদ্ধের হস্তে আমার অসি একবার বিদ্যুতের মতো ঝলসিয়া উঠিল। আমার শিরস্ত্রাণের উপর একটি শিখিপুচ্ছ রোপিত ছিল, দ্বিখণ্ডিত হইয়া তাহা ভূতলে পড়িল।

এইবার আমার অবরুদ্ধ ক্রোধ একেবারে ফাটিয়া পড়িল। এক লম্ফে প্রাচীর হইতে খড়ঙ্গ তুলিয়া লইয়া বলিলাম, তণ্ডু, বৃদ্ধ শৃগাল, আজ তোর কর্ণচ্ছেদন করিব। জ্বলন্ত ক্রোধের মধ্যে একটা চিন্তা অকস্মাৎ সূক্ষ্ম সূচীর মতো মস্তিষ্ককে বিদ্ধ করিল—তণ্ডুকে যদি হত্যা করি তাহাতেই বা দোষ কি? বরং আমার পথ পরিষ্কার হইবে।

কিন্তু তাহাকে আক্রমণ করিতে গিয়া দেখিলাম কঠিন ব্যাপার। বিস্ময়ে আমার ক্রোধ ড়ুবিয়া গেল। জরা-শীর্ণ তণ্ডুর হস্তে অসি ঘুরিতেছে রথ-নেমির মতো, অসি দেখা যাইতেছে না, কেবল একটা ঘূর্ণমান প্রভা তাহাকে বেষ্টন করিয়া রাখিয়াছে। আমি হটিয়া গেলাম।

গরলভরা সুরে তণ্ডু বলিল, পত্তিনায়ক অহিদত্ত রঞ্জুল, লতামণ্ডপে লুকাইয়া চপলা পরস্ত্রীর অঙ্গস্পর্শ করা সহজ, পুরুষের অঙ্গ স্পর্শ করা তত সহজ নয়।

আবার তাহাকে আক্রমণ করিলাম। বুঝিতে বাকি রহিল না, তণ্ডু আরম্ভ হইতেই আমার অভিপ্রায় জানে। লতাবিতানে চুরি করিয়া আমাদের দেখিয়াছিল। কিন্তু এতদিন প্রকাশ করে নাই কেন? আমাকে লইয়া খেলা করিতেছিল?

অসিতে অসি লাগিয়া স্ফুলিঙ্গ ঠিকরাইয়া পড়িতে লাগিল। কিন্তু আশ্চর্য বৃদ্ধের কৌশল, সে একপদ হটিল না। আমি যোদ্ধা, অসিচালনাই আমার জীবন, আমি তাহার অসি-নৈপুণ্যের সম্মুখে বিষহীন উরগের ন্যায় নির্বীর্য হইয়া পড়িলাম। অপ্রত্যাশিতের বিস্ময় আমাকে আরও অভিভূত করিয়া ফেলিল।

অকস্মাৎ বজ্র-নিঘোষের মতো তণ্ডুর স্বর আমার কর্ণে আসিল, অহিদত্ত রঞ্জুল, শক-লম্পট, এইবার নিজ অসির ধার নিজবক্ষে পরীক্ষা কর?

তারপর কি যেন একটা ঘটিয়া গেল।

অবাক হইয়া নিজের দিকে তাকাইলাম। দেখিলাম, অসির শাণিত ফলক আমার বক্ষপঞ্জরে প্রোথিত হইয়া আছে!

তণ্ডু আমার পঞ্জর হইতে অসি টানিয়া বাহির করিয়া লইল। আমি মাটিতে পড়িয়া গেলাম। একটা তীব্র দৈহিক যন্ত্রণা যেন আমার চেতনাকে দেহ হইতে বিচ্ছিন্ন করিয়া দিল। আর কোনও ক্লেশ অনুভব করিলাম না। স্বপ্নাচ্ছন্নের মতো অনুভব করিলাম, তণ্ডু কর্কশ উল্লাসে বলিতেছে, অহিদত্ত রঞ্জুল, রল্লা তোমাকে বধ করে নাই,—বধ করিয়াছে তণ্ডু–তণ্ডু—তণ্ডু—

আমার দেহটার সহিত আমার যেন একটা দ্বন্দ্ব চলিতেছে। সে আমাকে ধরিয়া রাখিবার চেষ্টা করিতেছে, আমি বায়ুহীন কারা-কূপে আবদ্ধ বন্দীর মতো প্রাণপণে মুক্ত হইবার জন্য ছটফট করিতেছি। এই টানাটানি ক্রমে অসহ্য হইয়া উঠিল। তারপর হঠাৎ মুক্তিলাভ করিলাম।

প্রথমটা কিছুই ধারণা করিতে পারিলাম না। তণ্ডুর যন্ত্রগৃহে আমি দাঁড়াইয়া আছি, আমার পায়ের কাছে একটা বলিষ্ঠ রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়িয়া আছে। আর, তণ্ডু ঘরের কোণে খনিত্ৰ দিয়া গর্ত খুঁড়িতেছে এবং ভয়ার্ত চোখে বারবার মৃতদেহটার পানে ফিরিয়া তাকাইতেছে।

ক্রমে মননশক্তি ফিরিয়া আসিল। বুঝিলাম, তণ্ডু আমাকে হত্যা করিয়াছে। কিন্তু আশ্চর্য! আমি তো মরি নাই! ঠিক পূর্বের মতোই বাঁচিয়া আছি। অনির্বচনীয় বিস্ময় ও হর্ষে মন ভরিয়া উঠিল।

অনুভব করিলাম, আরও কয়েকজন ঘরের মধ্যে আসিয়া দাঁড়াইয়াছে। তাহাদের মধ্যে কাহাকেও চিনিলাম, কাহাকেও বা চিনিতে পারিলাম না। একজন আমার কাছে আসিয়া মৃদুহাস্যে বলিল, চল, এখানে থাকিয়া আর লাভ নাই।

রল্লার কথা মনে পড়িয়া গেল। মুহূর্তমধ্যে তাহার নিকটে গিয়া দাঁড়াইলাম। একটি বদ্ধ কক্ষে ক্ষুদ্র গবাক্ষপথে সে বাহিরের দিকে চাহিয়া আছে; শুষ্ক চোখে ছুরির ঝলক, ক্ষণে ক্ষণে তীক্ষ্ণ দশনে অধর দংশন করিতেছে। কিন্তু তাহাকে দেখিয়া, তাহার অত্যন্ত কাছে দাঁড়াইয়াও আমার লেশমাত্র বিকার জন্মিল না। সেই তপ্ত লালসা-ফেনিল উন্মত্ততা আর নাই। দেহের সঙ্গে দেহ-জাত আবিলতাও যেন ঝরিয়া গিয়াছে।

অতঃপর আমার নূতন জীবন আরম্ভ হইল। পার্থিব সময়ের প্রায় দুই সহস্র বর্ষব্যাপী এই জীবন পুত্থানুপুঙ্খরূপে বর্ণনা করা সহজ নয়। আমার স্বপ্নে আমি এই দুই হাজার বৎসরের জীবন বোধ হয় দুই ঘণ্টা বা আরও অল্প সময়ের মধ্যে যাপন করিয়াছিলাম; কিন্তু তাহা বর্ণনা করিতে গেলে দুই হাজার পৃষ্ঠাতেও কুলাইবে না।

জীবিত মানুষ স্থান এবং কালের আশ্রয়ে নিজের সত্তাকে প্রকট করে। কিন্তু প্রেতলোকে আত্মার স্থিতি কেবল কালের মধ্যে। নিরবয়ব বলিয়া বোধ করি তাহার স্থানের প্রয়োজন হয় না।

শরীর নাই; তাই রোগ কামনা ক্ষুধা তৃষ্ণাও নাই। দেহ-বোধ প্রথম কিছুদিন থাকে, ক্রমে ক্ষয় হইয়া যায়। গতির অবাধ স্বচ্ছন্দতা আছে, অভিলাষমাত্রেই যেখানে ইচ্ছা যাওয়া যায়। সূর্যের জ্বলন্ত অগ্নি-বাষ্পের মধ্যে প্রবেশ করিয়াছি, লেশমাত্র তাপ অনুভব করি নাই। শৈত্য-উত্তাপের একান্ত অভাবই এ রাজ্যের স্বাভাবিক অবস্থা।

এখানকার কালের গতিও পার্থিব কালের গতি হইতে পৃথক। পৃথিবীর এক অহোরাত্রে এখানে এক অহোরাত্র হয় না; পার্থিব এক চান্দ্র মাসে আমাদের অহোরাত্র। এই কালের বিভিন্নতার জন্য পার্থিব ঘটনা আমাদের নিকট অতিশয় দ্রুত বলিয়া বোধ হয়।

অবাধ স্বচ্ছন্দতায় আমার সময় কাটিতে লাগিল। কোটি কোটি বিদেহ আত্মা এখানে আমারই মতো ঘুরিয়া বেড়াইতেছে। নারী আছে, পুরুষ আছে; সকলেই স্বেচ্ছানুসারে বিচরণ করিতেছে! আপাতদৃষ্টিতে কোনও প্রকার বিধি-নিষেধ লক্ষ্য করা যায় না। কিন্তু তবু, কোথায় যেন একটা. অদৃশ্য শক্তি সমস্ত নিয়ন্ত্রণ করিতেছে। সেই শক্তির আধার কে, জানি না; কিন্তু তাহার নিঃশব্দ অনুশাসন লঙ্ঘন করা অসাধ্য।

সময় কাটিয়া যাইতে লাগিল। এখানে জ্ঞানের পথে বাধা নাই; যাহার মন স্বভাবত জ্ঞানলিন্দু সে যথেচ্ছ জ্ঞানলাভ করিতে পারে। মর্তলোকে যে-জ্ঞান বহু সাধনায় অর্জন করিতে পারা যায় না, এখানে তাহা সহজে অবলীলাক্রমে আসে। আমি আমার ক্ষুদ্র মানবজীবনে যে-সকল মানসিক সংস্কার ও সংকীর্ণতা সঞ্চয় করিয়াছিলাম তাহা ক্রমশ ক্ষয় হইয়া গেল। অকলঙ্ক জ্ঞান ও প্রীতির এক আনন্দময় অবস্থার মধ্যে উপনীত হইলাম।

রবি চন্দ্র গ্রহ তারা ঘুরিতেছে, কাল অগ্রসর হইয়া চলিয়াছে। শনৈশ্চর শনিগ্রহ বোধ করি ষাট বারেরও অধিক সূর্যমণ্ডলকে পরিক্রমণ করিল। তারপর একদিন আদেশ আসিল—ফিরিতে হইবে।

অদৃশ্য শক্তির প্রেরণায় চন্দ্রলোকে উপস্থিত হইলাম। সেখান হইতে সূক্ষ্ম চন্দ্রকর অবলম্বন করিয়া আলোকের বেগে ছুটিয়া চলিলাম।

পৃথিবীতে ফিরিয়া আসিলাম। হরিবর্ণ বিপুল শস্য-প্রান্তর চন্দ্রকরে দুলিতেছে; পরমানন্দে তাহারই অঙ্গে মিলাইয়া গেলাম।

আমার সচেতন আত্মা কিন্তু অস্তিত্ব হারাইল না—একটি আনন্দের কণিকার মতো জাগিয়া রহিল।

তারপর এক অন্ধকারলোকে প্রবেশ করিলাম। স্থাণুর মতো নিশ্চল, আত্মস্থ কিন্তু আনন্দময়।

সহসা একদিন এই যোগনিদ্রা ভাঙ্গিয়া গেল। ব্যথা অনুভব করিলাম; দেহানুভূতির যে যন্ত্রণা ভুলিয়া গিয়াছিলাম তাহাই নূতন করিয়া আমাকে বিদ্ধ করিল!

যন্ত্রণা বাড়িতে লাগিল; সেই শ্বাসরোধকর কারাকূপের ব্যাকুল যন্ত্রণা! তারপর আমার কণ্ঠ বিদীর্ণ করিয়া এই যন্ত্রণা অভিব্যক্তি লাভ করিল—তীক্ষ্ণ ক্রন্দনের সুরে।

পাশের ঘর হইতে জলদমন্দ্র শব্দ শুনিলাম, লিখে রাখ, ৩রা চৈত্র রাত্রি ১টা ১৭ মিনিটে জন্ম।

১৭ চৈত্র ১৩৪৩

Pages: 1 2

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress