আয়ুর সোপানমার্গ বহু কষ্টে অতিক্রম করি
উন্মুক্ত মৃত্যুর প্রান্তে ঊর্ধ্বমুখে দাঁড়ায়েছি এসে ;
সিন্ধুর ভাস্বর আঁখি খোঁজে মোরে নিম্নে নিরুদ্দেশে ;
আমার আরতিদীপ মহাশুন্যে সাজায় শর্বরী ।।
সম্মুখে নিখিল নাস্তি, পৃষ্ঠদেশে মৌল নীরবতা ;
প্রশান্তি দক্ষিণে, বামে ; জনহীন, অন্তর,বাহির।
তবু কার আবির্ভাবে কণ্টকিত আমার শরীর ;
অবচেতনার তলে গুমরে কী জাতিস্মর কথা?
তবে কি বিরাট শূন্য শূন্য নয়, সাগরের প্রেত ;
উদ্বেল বিক্ষোভ তার পরিণত বিদেহ ঈথারে?
তবে কি দুর্মর মর্ত্য ক্রন্দসীতে ক্রন্দন বিথারে;
শস্যের মিসরী শবে উপ্ত সম্ভাবনার সংকেত ?
নির্লিপ্ত আলোর দ্বীপ নয় ওই দিব্য নীহারিকা,
কালের প্রপাতে মগ্ন বাসনার ভাসমান ফেনা ?
অবচ্ছিন্ন তারারাশি, ওরা চিরদিনকার চেনা
পশুদের স্থুল সত্তা, লালসার মূর্ত বিভীষিকা ?
নাই নাই মৌন নাই, সর্বব্যাপী বাঙ্ময় জগৎ ;
নির্বাণ বুদ্ধির স্বপ্ন, মৃত্যুঞ্জয় জ্বলন্ত হৃদয় ;
হয়ত মানুষ মরে, কিন্তু তার বৃত্তি বেঁচে রয় ;
জন্ম হতে জন্মান্তরে সংক্রমিত প্রত্ন মনোরথ ।।
কপোল কল্পনা ত্যাগ ; নিরাসক্তি অসাধ্যসাধন;
অনন্তপ্রস্থান মিথ্যা ; সত্য শুধু আত্মপরিক্রমা ;
বিদ্রোহে স্বাতন্ত্র্য নাই ; মুক্তি মানে নিরুপায় ক্ষমা ;
সৃষ্টির রহস্য মাত্র আলিঙ্গন, পুনরালিঙ্গন।।