সুদের দাম বেশি
ঋষিকেশ বাবুর ছেলে সৌগত নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ থেকে ডাক্তারি পাশ করে ।তারপর হায়দরাবাদ থেকে এম এস করে সল্টলেক অ্যাপোলো হাসপাতালে বাইশ সালে পাঁচই এপ্রিল জয়েন করে।
দাদু, ঠাকুমার একমাত্র ছেলের ঘরের নাতি। নাতি ডাক্তার ,এতে দাদু , ঠাকুমার গর্বে বুক ফেটে যায়।
অলীক সুখ পেতে যেন তাঁদের বেঁচে থাকা।
সৌগত হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ফিরে হাত পা ধুয়ে দাদুর সঙ্গে গল্প জুড়ে দেয়।মা এদিকে ছেলের জন্য খাবার নিয়ে বসে থাকে। মাঝেমধ্যে উঠে গিয়ে শ্বশুর মশাই ও ছেলেকে কটুকথা শোনায়।
একদিন দাদুর সাথে কথা বলে সৌগত খেতে বসেছে। হঠাৎ ঠাকুমার চিৎকার ঋষিকেশ, এদিকে আয় তোর বাবা পড়ে গেছে। সবাই ছুটে যায় ,আম্বুলেন্স আসে। অ্যাপোলোতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরীক্ষা করে জানা যায় হার্টে ব্লকেজ আছে।স্ট্রেন বসাতে হবে। হৃদযন্ত্রের অবস্থা ও ভালো নয়। অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাবার সময় নাতির কানে কানে তুই হা্র্ট স্পেশালিস্ট,আজ তোর পরীক্ষা!
বাড়িতে থমথমে পরিবেশ। বৌমা ও শাশুড়ি ঠাকুরের ঘরে। অপারেশন শেষে ডঃ সৌগত তার বাবাকে বলে ,আরে ইয়াং ম্যান চিয়ার আপ। দাদুর একটু পরে জ্ঞান ফিরবে , তারপর সিস্টার কে বলা আছে,তুমি দাদুকে দেখে এসো বাবা। সৌগত কিছুক্ষণ পর ফ্রেশ হয়ে বাবা কে নিয়ে ক্যান্টিনে চা ,কফি খায়।
বাবা বাড়িতে চলে যায়।সৌগত ইচ্ছে করে রাত্রের কাজ নিয়ে নেয়।রথ দেখা কলা বেচা ওই একসঙ্গে চলবে। পরদিন চোখ খুলে দাদু ছেলে ,বৌমা ও নিজের বুড়ি বৌয়ের সামনে বলে এ যাত্রায় বেঁচে গেলাম,এ যেন অলীক সুখ, ভেবেছিলাম এ যাত্রায় আর ফেরা হবে না।।এ জীবন আজ ধন্য হলো। দাদু বলেন,জানিস হৃষিকেশ তোকে ডাক্তারি পড়ানোর ইচ্ছে ছিল। তুই তো হলি না ,দেখ তোর ছেলে আমার শেষ ইচ্ছা পূরণ করল।এ জীবন আজ পরিপূর্ণতা পেলো। জীবনের শেষ ইচ্ছে সবার যতটা সম্ভব পরিপূর্ণতা পাক।এটা ভগবানের কাছে একান্ত কাম্য।