Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » সুখ || Shankarlal Bhattacharya

সুখ || Shankarlal Bhattacharya

আমি লণ্ডনের ওয়াটারলু স্টেশন থেকে ঠিক দুপুর বারোটার ট্রেন ধরলাম পোর্টসমাথের দিকে। ইংল্যাণ্ডে তখন গ্রীষ্ম, কাজেই সন্ধ্যা হতে হতে সাড়ে নটা, দশটা। রাত এগারোটাতেও গোধূলির মতন একটা আভা ছড়িয়ে থাকে আকাশে। গ্রীষ্মকালে দুপুর বারোটা, তাই রীতিমতো সকাল-সকাল ব্যাপার। তার ওপর দিনটা ছিল রৌদ্রোজ্জ্বল, আকাশ নীল, বাতাসে সামান্য একটা ঠাণ্ডা কামড়। ইংল্যাণ্ডের পক্ষে খুব অসাধারণ কম্বিনেশন। আমি ইচ্ছে করেই স্লো-ট্রেন বেছে নিলাম যাতে দু-ঘণ্টার জায়গায় ধিকিয়ে আড়াই ঘন্টায় পৌঁছোতে হয় পোর্টসমাথ।

পোর্টসমাথ ইংল্যান্ডের এক আশ্চর্য সুন্দর বন্দর শহর। ওখানে থাকেন আমার মাসি যিনি বিয়ে করেছেন পোর্টসমাথ বন্দরের কমিশনার সাহেব জেফরি পিনচেসকে। জেফরিকে আমি দেখিনি, তাই জেফরি আমাকে দেখার জন্য ব্যাকুল। টেলিফোনে জানিয়েছেন তিনি গাড়ি নিয়ে বারোটার ট্রেনটির জন্য অপেক্ষা করবেন স্টেশনে। কিন্তু আমি ব্যাকুল মূলত মাসির দুই ছেলে এবং মেয়েকে দেখার জন্য, যারা কথা দিয়েছে আমাকে পোর্টসমাথ হারবারে রাখা লর্ড নেলসনের জাহাজ ‘ভিকটরি’ দেখাতে নিয়ে যাবে এবং স্টিমারে করে বেড়াতে নিয়ে যাবে আইল অফ হোয়াইটে।

আমি স্বভাবকুঁড়ে লোক। সময় রক্ষা আমার দ্বারা হয় না। কোনোমতে একটা স্যাণ্ডউইচ চিবোতে চিবোতে ছোট্ট একটা অ্যাটাচি আর কোকা কোলার কৌটো নিয়ে যখন আমি কামরায় উঠলাম ঠিক তক্ষুনি ছেড়ে দিল ট্রেন। ভাবলাম, যাক! তা হলে মেসো-মাসিকে সমস্যায় ফেলা হল না।

কামরায় তোক বেশ কম। আমি জানালায় পাশেই একটা সিট বেছে বসে পড়লাম। সুন্দর দিন আর বাইরের সুন্দর গাছপালার দিকে চোখ পড়তে নিজেকে ভারি সুখী সুখী লাগল। ওই দৃশ্য দেখব বলে আমি আর বাক্সে রাখা আগাথা ক্রিস্টির বই বার করলাম না। আড়াই ঘণ্টা ধরে ইংল্যাণ্ডের প্রকৃতি দেখাই বিরাট আনন্দ আমার কাছে। ইংল্যাণ্ডের গ্রামের দৃশ্য মুহূর্তের জন্য আমাকে কখনো ক্লান্ত করেনি কোনোদিন। দেখতাম আর ভাবতাম, এ তো গ্রাম নয়, শিল্পী কনস্টেবলের আঁকা কোনো ছবি।

ইংল্যাণ্ডে একটা জিনিস আমি শিখেছি। ইংলিশরা ট্রেন জার্নি তারিয়ে উপভোগ করে। কাগজ পড়ে কি বই উলটিয়ে, পাইপ খেয়ে কিংবা স্রেফ জানালার বাইরে তাকিয়ে থেকে। বাক্যালাপ করে তাদের আনন্দ নষ্ট করা ঠিক না। আর আমিও যেহেতু লাজুক, প্রকৃতি বিলাসী লোক তাই আমারও বেশ সুবিধে হয় এই ‘একলা চলো রে’ পদ্ধতিতে। ট্রেনের মধ্যে আমি নিজেই নিজেকে মশগুল রাখতে ভালোবাসি এবং সেভাবেই আমি কোকা কোলার কৌটোয় ছোট্ট ছোট্ট চুমুক আর সিগারেটে ছোট্ট ছোট্ট টান দিতে দিতে এগোচ্ছিলাম। হঠাৎ সামনে বসে থাকা প্রৌঢ় ইংরেজ ভদ্রলোক বললেন, আপনি প্রকৃতি দেখতে খুব ভালোবাসেন? বহুক্ষণ নীরবতার পর একটা মানুষের স্বরে বুঝি খুশিই হয়েছিলাম, বিশেষ করে প্রশ্নটা যখন প্রকৃতির বিষয়েই। বলে উঠলাম খুব; ভদ্রলোক তাঁর পাইপটা ঠোঁট থেকে নামিয়ে বললেন, সে আপনার হাবভাব দেখেই বুঝেছি।

—কীরকম?

–প্রকৃতি দেখার আনন্দের ছাপ আপনার গোটা মুখে।

–তাই নাকি? সেটা ধরা যায় নাকি?

—বিলক্ষণ। ভদ্রলোক এবার তাঁর সবল দৃঢ় হাতটা বাড়িয়ে বললেন, আপনার সঙ্গে আলাপ হয়ে খুশি হলাম। আমার নাম এডওয়ার্ড ড্রব। আমি তখন ওঁর কথাটাই রিপিট করে আমার নামটাও জানিয়ে দিলাম। ভদ্রলোক তখন চমকে উঠে বললেন, আপনি ভারতীয় ব্রাক্ষণ?

—হ্যাঁ।

—তা হলে আমি কার কাছে প্রকৃতি বিলাসের ফন্দি বিতরণ করছি? গোটা ভারতই তো আশ্চর্য প্রকৃতির দেশ।

—আপনি ভারতে গেছেন?

–না, বইতেই সব পড়েছি। যা হোক আমাকে বলুন আপনি কী দেখতে ভালোবাসেন?

—সমুদ্র।

–ওঃ ফ্যান্টাসটিক! একেবারে আমারই ধারার লোক আপনি। তা কোথায় যাচ্ছেন?

—পোর্টসমাথ।

-বাঃ বাঃ চমৎকার। পোর্টসমাথ ইজ লাভলি। ইউ’ল বি ভেরি প্লিজড। রাদার ইউ’ড বি হ্যাপি। তবে তার আগে সাউথ সি দেখতেও ভুলবেন না।

ভীষণ পুলকিত হয়ে জিজ্ঞেস করে বসলাম, সাউথ সি এই পথেই? মানে চার্লস ল্যামবের প্রবন্ধে যে সাউথ সি-র কথা পড়েছি?

ড্রব এবার খুব তৃপ্তির সঙ্গে বললেন, এগজ্যাক্টলি! জানি না এরপর কতক্ষণ চার্লস ল্যামব আর তাঁর এসেজ অফ ইলায়া’-তে বর্ণিত সাউথ সি-র মধ্যে মনে মনে ডুবেছিলাম আমি। জানি না এই সময় আমি ড্রবের সঙ্গে কথাবার্তা চালিয়ে গিয়েছিলাম কি না। জানি না কী প্রশ্নের কী জবাব দিয়েছিলাম। জানি না নিজের থেকেও কোনো অচিন্তিত প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছিলাম কি না।

হঠাৎ ঘোর ভাঙল ড্রবেরই কথায়। আমায় সম্ভবত সামান্য টোকা দিয়ে সাহেব জিজ্ঞেস করলেন, আপনি খুব আত্মসুখী মানুষ, না? বললাম, খুব!

—তা হলে সামনের হাভানট স্টেশনে নেমে পড়ুন।

—কিন্তু আমার জন্য পোর্টসমাথে লোক অপেক্ষা করবে।

–করুক। যা বলছি করলে আপনি এক অনিন্দ্যসুন্দর সুখের মুখ দেখবেন।

–কী করতে হবে আমাকে? আপনি হাভানটে নেবে স্টেশন থেকে বেরিয়ে ডান হাতের রাস্তা ধরে পাঁচশো গজ হাঁটুন। তারপর একটা ওভারব্রিজ ক্রস করে বাঁ-দিকে নেমে আরও পঞ্চাশ গজ। দেখবেন ওখানে একটা কটেজ আছে। এবার ওই কটেজের পিছনে যে ঝিল আছে সেটার পাড় ধরে হাঁটতে থাকুন। দেখবেন রাস্তাটা ক্রমশ চড়াইয়ের দিকে যাচ্ছে। যেতে যেতে একটা টিলায় পৌঁছে যাবেন আপনি। ওই টিলার চুড়োয় চড়ে আপনি সামনের দৃশ্য দেখুন। তা হলে খুব সুখ হবে আপনার।

বুঝলাম না ড্রব আমাকে খুশি করার জন্য এরকম গজ মেপে মেপে জায়গার ডিরেকশন দিচ্ছেন কেন। আমি কী দৃশ্য দেখে সুখী হব তা কি ওঁর পক্ষে জানা সম্ভব? আর আমি সুখী হলে ওঁরই বা কী লাভ? আমি এ সবই গভীরভাবে চিন্তা করছিলাম যখন ড্রব বললেন, ওয়েল! আমি যতটুকু সাহায্য করার করলাম, এবার আপনার ইচ্ছা-অনিচ্ছার ব্যাপার।

কেন জানি না প্রৌঢ়কে দুঃখ দিতে ইচ্ছে হল না আমার। মনে হল আমি হাভানটে নেমে ওই দৃশ্য না দেখলে উনি দুঃখ পাবেন। ট্রেন স্টেশনে ইন করছিল। আমি আমার জিনিসপত্র হাতে নিয়ে, সিগারেটটা ছাইদানিতে ফেলে ড্রবের দিকে হাত বাড়িয়ে বললাম, থ্যাংকস ভেরি মাচ। হোপ টু সি ইউ এগেইন।

ড্রব এবার একটু পিতৃসুলভ গাম্ভীর্যে বললেন, ইউ’ল বি হ্যাপি বয়। অল দ্য লাক!

আমি হাভানটে নেমে ড্রব বর্ণিত রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে একেবারে অবাক হয়ে গেলাম। লোকটা কি ফিতে দিয়ে জরিপ করে গেছে নাকি এই রাস্তা। যেটা পাঁচশো গজ সেটা পাঁচশো গজ, যেটা পঞ্চাশ সেটা পঞ্চাশ। যেখানে যা যা বলেছেন সেখানে ঠিক ঠিক সেই জিনিস! এবং অবশেষে আমি চড়ে বসলাম টিলার সেই সর্বোচ্চ চুড়োয়। ড্রব বলেছিলেন এখানে পোঁছোতে আমার লাগবে ঠিক বারো মিনিট এবং লাগলও কাঁটায় কাঁটায় বারো মিনিট, সেকেণ্ড পর্যন্ত হিসেব করে।

আমি ড্রবের কথা ভাবতে ভাবতে এতদূর এলাম। তাই সামনে যে কী প্রকৃতি আমার অপেক্ষায় আছে আমি কল্পনাও করতে পারিনি। যখন খেয়াল হল তখন মুহূর্তের মধ্যে আমার মন অবর্ণনীয় আনন্দে টইটম্বুর হয়ে উঠল। একী! এই দৃশ্যই তো আমি ছোটোবেলায় এক বইয়ের পাতায় দেখেছি। হুবহু সেই জায়গা। প্রতিটি ডিটেলে। যেন পটে আঁকা টিলার পরেই একটা সবুজ ঘাসের মাঠ। তার মধ্যিখান দিয়ে সরু একফালি নদী। নদীর ওপর ছোট্ট কাঠের সাঁকো। সাঁকোতে একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে জল নাকি মাছ দেখছে। নদীর ওপারে অপর একটা টিলার পিছনে গাছ, কিছু উইলো, কিছু ওক, কিছু এভারগ্রিন। আর ওই বন পেরোলেই, আমি না গিয়েই জানতে পারছি, মহান, সুবিস্তৃত সমুদ্র।

আনন্দে আমার মন ধুয়ে যাচ্ছে। এ দৃশ্য আমি ছোটোবেলায় অসংখ্যবার দেখেছি বইতে আর স্বপ্নে। বাবা বলতেন, এই হচ্ছে ইংল্যাণ্ডের আসল রূপ। আসল স্বর্গ।

আমি জানি না এ দৃশ্য দেখার পর আমার কী করা উচিত। আমি কি হেঁটে নেমে যাব ওই নদীতে? পারলে ডুব দেব জলে? রৌদ্রোজ্জ্বল টিলাতে কোট মেলে দিয়ে শুয়ে পড়ব আর ধন্যবাদ দেব ঈশ্বরকে, বাবাকে, এডওয়ার্ড ড্রবকে?

সহসা পিঠের ওপর আলতো একটা হাতের স্পর্শ পেলাম। চমকে উঠে ঘুরে দেখলাম এডওয়ার্ড ড্রব! এ কী! মানুষটি তো ট্রেনেই বসেছিলেন। নামলেন কখন?

–ট্রেন ছেড়ে দেবার পর?

—হ্যাঁ চেন টেনে।

-কেন?

—ভয় হল আপনার যদি ভীষণই ভালো লেগে যায় এই দৃশ্য।

–তাতে ক্ষতি কী!

—যদি অতিরিক্ত আনন্দের ঝোঁকে আপনার এই ছোট্ট নদীতে ডুব দিয়ে মরতে ইচ্ছে করে।

গা-টা হঠাৎ শিরশির করে উঠল ভয়ে। আমার তো সত্যি ডুবে মরার ইচ্ছে জেগেছিল। উনি না এলে কী জানি হয়তো তাই করতাম। কিন্তু ড্রব সেকথা জানলেন কী করে জিজ্ঞেস না করে পারলাম না, আপনার কেন মনে হল আমি মরতে চাইতে পারি?

কারণ এর আগে একটি ফরাসি মেয়েকে আমি এই দৃশ্য দেখার জন্য বলেছিলাম। পরে কাগজে পড়লাম মেয়েটি ওই ছোট্ট নদীতে ডুবে মরেছিল। আমার মাথার মধ্যে সাঁ করে খেলে গেল সাঁকোয় দাঁড়ানো মেয়েটির মুখ। আমি সঙ্গে সঙ্গে পিছন ঘুরে সাঁকোর দিকে তাকালাম। কিন্তু সেখানে কোনো মেয়ে নেই। আশেপাশে কোথাও সে নেই। যদিও এইটুকু সময়ের মধ্যে তার পক্ষে কোথাও গিয়ে লুকিয়ে পড়া অসম্ভব। আমি ভয় পেয়েছি। আমি ডুবকে বললাম, কিন্তু কেন আপনি আমাকে বাঁচাতে চাইলেন?

কারণ আপনার মুখটা খুব সরল, নিষ্পাপ, সুন্দর। আমার মনে হল, প্রকৃতি হয়তো আপনাকে হাতছানি দিয়ে ডাকবে। খুব ভয় হল, চলে এলাম।

—একটা কথা আমায় বলবেন?

–বলুন।

—আপনি কি জার্মান? আপনি কি নাৎসি আর্মিতে ছিলেন? ভদ্রলোক যৎপরোনাস্তি আশ্চর্য হয়ে বললেন, আপনি সেকথা কী করে জানলেন?

বললাম, আপনার দেওয়া রাস্তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা থেকে। ওরকম মাপা বর্ণনা নাৎসিবাহিনীর লোকেরাই নাকি দিতে পারত শুনেছি। ভদ্রলোক হাসলেন, হ্যাঁ। গা বাঁচাতে যুদ্ধের পর ইংল্যাণ্ডে নাগরিক হয়ে থেকে গিয়েছিলাম। ড্রব আমার ইংরেজ নাম। আমি জন্মাবার পর নাম হয়েছিল রাইনার স্টরাট। যাকগে, আপনি আর দেরি করবেন না, চেষ্টা করলে পরের ট্রেনটাই আপনি ধরে ফেলতে পারেন। যদি জোরে হাঁটেন! আর আট মিনিট পরে প্ল্যাটফর্মে গাড়ি লাগবে।

এরপর আমরা চুপ করে খানিকক্ষণ হাঁটলাম। ওভারব্রিজের নীচে এসে ড্রব, থুড়ি, স্টরাট বললেন, আপনি এখোন। আমি এই ট্রেনটা নেব না। আমি ওই টিলার উপরে গিয়ে একটু বসতে চাই। ইট মেকস মি হ্যাপি।

স্টরাটকে অসংখ্য অকৃত্রিম ধন্যবাদ জানিয়ে এবং বার আটেক করমর্দন করে আমি স্টেশনের দিকে প্রায় দৌড়োত লাগলাম।

বড্ড দেরি করে ফেলেছি। স্টেশনে পৌঁছেছি যখন তখনও ট্রেনের হদিশ নেই। যদিও ছোট্ট হাভানট স্টেশন রীতিমতো গিজ গিজ করছে মানুষে, পুলিশে, অ্যাম্বুলেন্সের লোকে। ব্যাপার কী? এক ভদ্রলোক নাকি ট্রেন ছাড়ার পর হুড়োহুড়ি করে দরজা খুলে নামতে গিয়েছিলেন। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে ঝাঁপ, কিন্তু প্ল্যাটফর্মে নয়, চাকার পাশে রেলের লাইনে।

আমার শিরদাঁড়া দিয়ে ঠাণ্ডা হাওয়া বইতে লাগল। হাত, পা যেন এখুনি খসে পড়ে যাবে। মাথাটা সবে ঘুরতে শুরু করেছে। ভিড় ঠেলে আমি ছুটতে লাগলাম লাশটার দিকে। ঠিক তখনই তার মুখের ওপর টেনে দেওয়া হল সাদা লং ক্লথ। কিন্তু তার আগে এক ঝিলিক আমি দেখে নিয়েছি রাইনার স্টরাটের অদ্ভুত প্রশস্তিময় মুখ। না, উনি তো ট্রেনে কাটা পড়েননি, উনি হাভানটের একটি অলৌকিক পরিবেশে বসে অপার আনন্দে চেয়ে আছেন একটা ছোট্ট নদী আর সবুজ বনের দিকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *