সেই বর্ষায় পুঁতেছিল চাষীরা–
সযত্নে আমন ধানের চারা,
এই অগ্রহায়ণে পাকা ধান ভরা-
চাষীরা আনন্দে আত্মহারা।
মাঠ ভরে গেছে সোনার আভায়,
ঘরে ঘরে আজ বুঝি উচ্ছ্বাস বয়,
ব্যস্ত চাষীরা আজ যে ধান কাটায়,
সোনার ধানে দেখো গোলা উপচায়।
হেমন্ত লক্ষ্মী আজ বড়োই উদার,
সবার গোলা ভরেছে ভারে ভার,
সময় এখন তাই নবান্ন উৎসবের;
পূজোর জন্য মন ব্যাকুল সবার।
নতুন ধান যে মা লক্ষ্মীর প্রতীক,
সেই অন্নে সুবাসিত দিগ্বিদিক,
গাঁয়ের ঘরে ঘরে বাজিয়ে শাঁখ;
বধূরা দেয় নবান্ন উৎসবের ডাক।
চালের গুঁড়োর আল্পনায় সাজে-
দূয়ার দালান আর ঘরের মেঝে,
নবধান্যের সাজে এসেছেন মা যে;
নবান্ন উৎসবের সুর গাঁ-ঘরে বাজে।
নলেনগুড়ের নানান পিঠা ও পরমান্ন-
প্রসাদ দিয়ে আজ বধূরা সব ধন্য,
চাষীদের অন্তরে আজ আনন্দ অনন্য;
লক্ষ্মী মায়ের কৃপায় এসেছে স্বর্ণধান্য।
তবু কেন মনে হয় শহুরে মানুষ হায়-
এ আনন্দ থেকে সত্যিই বঞ্চিত হয়,
শহরে নবান্ন উৎসবের ধারাবাহিকতায়-
গ্রাম্য মজদুরির ভাব বুঝি চুরি যায়।
তবু আনন্দ উৎসবে সবার অধিকার,
নবান্ন উৎসব আনুক ভোরের শিশির,
হেমন্ত লক্ষ্মী ভরাক গোলা সবাকার;
মানুষ হোক সে গ্রামের বা শহরের।।