সহজে আসে না কেউ আজকাল আমার নিকট,
একদা আসত অনেকেই। তথ্যে তত্ত্বে কিংবা গল্পে
কেটেছে প্রচুর বেলা, সারা ঘরে কখনো সমৃদ্ধ নীরবতা।
এখন আসে না কেউ, বড় ব্যস্তবাগীশ সবাই-
কেউবা পতিতালয়ে, কেউ মত্ত তাসের আড্ডায়,
মাতায় পাঁচটি পাড়া পিটিয়ে নিজের ঢাক কেউ,
কেউ কেউ গ্রন্থদাস, কেউ রাজনীতির কুমার
রাখছে সোনার কাঠি সন্তর্পণে বঙ্গের শিয়রে।
সহজে আসে না কেউ আজকাল আমার নিকট,
যেন আমি চিহ্নিত চাঁড়াল। দৃষ্টিপথে দেয়ালের
ছবি, ঘড়ি, আসবাবপত্র সব ম্লান হয়ে এলে
চোখ বুজে বসে থাকি। কখন একটি খাপছাড়া
সারস তারার মতো করে, আমি উচ্ছ্বসিত পালক নিকুঞ্জে
তার জ্বলজ্বলে নগ্নতায় করি চকিতে প্রস্থান।
অত্যন্ত বরদ হ্রদ আছে এক, যেখানে পাখির বংশাবলি
পালক ঝরিয়ে গেছে যুগে যুগে, সেখানে শব্দেরা
ধ্যানী, জাতিস্মর, আমি তার বুকে কাটবো সাঁতার
এবং পুলিনে তার পাতবো আসন সিদ্ধার্থের।
আমার হ্রদয় ফুঁড়ে জেগে ওঠে জলজ প্রাসাদ,
চিত্রিত মিনারে যার বয় শুধু বাতাসের স্বর,
ঝরে নীল। শূন্যে গাছ, শূন্যে টেলিগ্রাফ তার, ভুরুর সাঁকোয়
ক্ষুধিত পাখিরা শুধু নিরুপম সূর্যাস্তকে খায়,
নিঃসঙ্গতা অবিরাম আমাকে গভীর করে চায়।