জন্মেছিলেন এই দেশেতে ভারত মাতার কোলে,
সর্ব কনিষ্ঠ বিল্পবী তিনি নির্ভিক চিত্তে,
ফাঁসির মঞ্চে দিয়েছেন প্রাণ
দেশমাতার জয়ধ্বনি তুলে।
উদাত্ত কণ্ঠে সেই মঞ্চে দাঁড়িয়ে গেয়েছেন –
” একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি”।
নির্ভিক বলিষ্ঠ স্বরে বিচারকের
সব প্রশ্নের উত্তর দেন গর্বে,
যা শুনে চমকে গেছেন ব্রিটিশ বিচারক কনর্ডফ।
হাসি মুখে জল্লাদকে প্রশ্ন করেছিলেন,
ফাঁসির দড়িতে মোম কেন লাগানো হয়?
তাজ্জব বনে গিয়েছিলো জল্লাদও।
তিন কন্যার পর দুই পুত্রের পর পর মৃত্যু হওয়ায় তিন মুঠো খুদের বিনিময়ে বেচে দেন বড়দদি’র কাছে জননী লক্ষ্মীদেবী, যাতে পুত্রের জীবন রক্ষা পায়।
খুদের বিনিময়ে পাওয়া তাই দিদি নাম রাখে ক্ষুদিরাম।
মাত্র ছয় বছর বয়সে পিছুটানহীন ক্ষুদিরাম বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে যোগ দেয়।
অসম্ভব তেজ ও সাহসের সঙ্গে বিভিন্ন সমিতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে ক্ষুদিরাম অচিরেই বোমা বানানো শিখে ফেলেন।
এই নির্ভিক ভারত মাতার সন্তান জীবনে বিপ্লবী সত্তার ও স্বরাজের
বীজ বপন করেছিলেন সেই সময়ই।
তাই যখন শুনতে পেলেন বিপ্লবী সুশীল সেনকে চাবুক মারার নির্দেশ দিয়ছে অত্যাচারী ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ড;
তখনই তাকে মারবার জন্য সিন্ধান্ত নেয় ক্ষুদিরাম।
সঙ্গে পেয়ে যায় তরুণ
বিল্পবী প্রফুল্ল চাকি’ কে।
দুজনে মিলে ব্রিটিশ বিচারক ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ডকে
হত্যার জন্য তার গাড়িতে ছুঁড়লেন বোমা,
দুর্ভাগ্যবশত সেই গাড়িতে সেদিন ছিলোনা কিংসফোর্ড।
মৃত্যু হয়েছিল কিংসফোর্ডের স্ত্রী ও কন্যার।
গ্ৰেপ্তারের আগেই গুলিতে আত্মহত্যা করে প্রফুল্ল চাকি।
ক্ষুদিরাম ধরা পড়ে। বিচারে তাঁর ফাঁসির আদেশ হয়।
বয়স তখন তার মাত্র ‘আঠারো বছর সাত মাস এগারো দিন’।
এই ছেলেই প্রথম ভারতের বুকে স্বাধীনতার সোপান দিয়েছিলেন এঁকে।
সর্বকনিষ্ঠ বিপ্লবী ক্ষুদিরামকে মুজফফরপুর সংশোধনাগারে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল।
এখন সেই কারাগারের নাম বদলে ক্ষুদিরাম বসুর নামে নামকরণ হয়েছে।
আজ ক্ষুদিরাম বেঁচে নেই , বেঁচে আছে তাঁর বলিদান
প্রয়াণ দিবসে তাঁকে জানাই সশ্রদ্ধ প্রণাম।