Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » “সরস্বতী” – বৈদিক ও পৌরাণিক || Purabi Dutta

“সরস্বতী” – বৈদিক ও পৌরাণিক || Purabi Dutta

“সরস্বতী” – বৈদিক ও পৌরাণিক (পুরাণ  কথা,বিজ্ঞান ও বেদ)

(ঋগ্বেদ সংহিতা ,
ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ )

“সরস্বতী” কথাটি প্রতি হিন্দু জনের মনে গেঁথে আছে, (১)বিদ্যাদেবী আর (২)ভারতে প্রবাহিত এক লুপ্ত  নদী। ঋগ্বেদে উল্লেখ্য দেবতারা, সকলই কিন্তু প্রকৃতি — আকাশ, বায়ু বা পবন , মাটি, জল, নদী, অগ্নি, বজ্র, বৃষ্টি, কিছু বৃক্ষ, পক্ষী ইত্যাদি। অর্থাৎ জীবন ধারণের জন্য যা যা অপরিহার্য এবং বাস্তবমুখী।

বিনা প্রতীতিতে শুধু স্মরণ —যজ্ঞপ্রথায় বন্দনা, অর্চনা, আহুতি। সর্ব্বচ ঈশ্বরেরও সন্ধান করেছিলেন বৈদিক ঋষিরা কিন্তু সক্ষম হননি। কোন দেব- দেবীদের  মূর্তি স্বাক্ষরিত ছিল না। প্রসঙ্গত  বলা দরকার বৈদিক যুগে “কুর্মক ” শ্রেণী মাটির তৈরী পুতুল গড়তেন কিন্তু দেবদেবী নয়, ধাতব কাজ করতেন যারা বলা হতো “দ্রবি” তারাও মূর্তি করতেন কিন্তু  না, কোন দেবদেবী নয়।

“দুর্গা ” নামে এক দেবতাকে স্মরণ করে যজ্ঞ করতেন বৈদিক ঋষিরা, কিন্তু এ “দুর্গা” ছিলেন রাত্রি , “দেবী দুর্গা” নন। এবং দুর্গা স্ত্রীলিঙ্গ তার পুলিঙ্গ হলো “দুর্গি”। বৈদিক ব্যাকরণ ত আলাদা। ঊষা ও রাত্রি দুইয়েরই উপাসনা হতো তখন। ঋগ্বেদ  ঋক্ আছে বিভিন্ন  ঋষিদের লেখা নানা ছন্দে। কতকগুলি ঋক্ কে একসঙ্গে বলে “সুক্ত” আর কতকগুলি সুক্ত” মিলে  হয় মণ্ডল। সেজন্য  উদ্ধৃতি বুঝে নিতে হয়, মন্ডল/সুক্ত/ঋক্  দ্বারা, যেমন সরস্বতীর নদীর বর্ণনা পাওয়া যায়– ১০/৬৪/৯ তাঁকে অন্নবতীবলে বর্ণনা—২/৪১/৬৮ সরস্বতীর  বন্দনা , আহ্বান– ১০/ ১৭ /৭,৮,৯

বৈদিক যুগে সরস্বতী দেবী ছিলেন এক নদী , যা ছিল অতি পবিত্র  এবং  ভারতের প্রধান জলপথে বানিজ্যিক ব্যবহারে। ভৌগলিক কারণে বর্তমানে লুপ্ত, এ সত্য  বৈজ্ঞানিক।

কিন্ত  পুরাণ  কি বলে? স্মৃতিকথা বিবৃত পুরাণে  মোট আঠারোটি অধ্যায় আছে, প্রতি অধ্যায়ই স্বয়ংসম্পূর্ণ  অথচ একটির সাথে অপরটির অবিচ্ছেদ্য যোগসূত্র।

অবিভক্ত  ভারতের  তিনটি নদীর নাম এখানে উঠে আসছে—- গঙ্গা , পদ্মা, সরস্বতী। নদীর কথা পরে, আগে বলি ব্যক্তিত্ব অনুযায়ী অবশ্যই  গঙ্গা ও সরস্বতী প্রায় সমান্তরাল, তুলনামূলকভাবে পদ্মা বা যিনি লক্ষ্মী কিছু সহিষ্ণু ছিলেন। এই তিনজনই নারায়নের স্ত্রী। স্বাভাবিকভাবেই নারায়নদেবের অসমদৃষ্টি , অনুরাগ- বৈষম্য  ইত্যাদি  নিয়ে সরস্বতী ও গঙ্গার কিছু সন্দেহ , কটাক্ষ বা অসন্তোষ  মাঝে মাঝেই  প্রকাশ পেতো। লক্ষ্মী ত সর্বদাই  চুপ।

তেমনই  এক পরিস্থিতিতে, সরস্বতী গঙ্গাকে অভিশাপ  দেন যে, সে মর্তে গিয়ে এক নদী হয়ে থাকবে, স্বামী নারায়নের সঙ্গ থেকে দূরে। ইতিমধ্যে লক্ষ্মী এ বিবাদে, নীরব থাকেন ও সরস্বতীকে বিরত  হতে বলেন, কিন্ত  এতে কুপিত হয়ে সরস্বতী লক্ষ্মীকেও গাছ ও নদী হয়ে মর্তে থাকতে হবে বলে । এতে গঙ্গাও কুপিত হয়ে সরস্বতীকে  মর্তে নদী হয়ে থাকার অভিশাপ দেন।

গঙ্গা ও সরস্বতীর অভিশাপ ত নিষ্ফল হবার কথা নয়—- মর্তে সরস্বতী  পদ্মা গঙ্গা — তিন নদী । লক্ষ্মী আবার তুলসী বৃক্ষও। তিনজনের কেউই গোলকধামে নারায়নের পাশে আর থাকবেন না। অতি দুঃখে লক্ষ্মী নারায়নের শরণাপন্ন  হন। নারায়নদেব আশ্বাস দেন, “লক্ষ্মী মর্তে  পবিত্র পদ্মা নদী নামে ও তুলসী বৃক্ষরূপে বিরাজ করবে।

সরস্বতী এই নামেই মর্তে পবিত্র  স্রোতস্বিনী নদীরূপে প্রবহমান হবে এবং ব্রহ্মা ও আমার স্পর্শেই থাকবে। গঙ্গা বিরাজ করবে শিবের জটায় পরে ভগীরথ তাকে মর্তভূমিতে আনবে, এতে তাঁর পবিত্রতা আরও  বৃদ্ধি পাবে। এইভাবে কলিযুগে পাঁচ হাজার বছর পর শাপমুক্ত হয়ে আবার  আমার কাছে ফিরে আসবে।” আবার পুরাণে আছে সীতার এক অভিশাপ। সে ভারী সুন্দর এক উপাখ্যান, বটবৃক্ষ , তুলসী বৃক্ষ ,  সরস্বতী নদী, গাভী ও ব্রাহ্মণ — এই পাঁচজনকে সাক্ষী রেখে সীতা বনবাসে রাজা দশরথের মৃত্যু সংবাদে তাঁর জন্য তর্পণ করেন, যেহেতু রাম লক্ষণ খাদ্যসংগ্রহে অন্যত্র ছিলেন, পিতার মৃত্যু সংবাদ ত তারা তখনও পান নি।

তারা ফিরে এলে ভাতৃদ্বয়ককে তর্পনের  কথা সীতা বলেন এবং বিশ্বাস অর্জনের জন্য সীতা সাক্ষীদের সমর্থন চাইলে একমাত্র বটবৃক্ষ ছাড়া বাকি চারজনই মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়। তাই সীতার অভিশাপ ” সরস্বতী নদী, তুমি একদিন শুকিয়ে যাবে”, “পবিত্র তুলসী, তোমার দেহে সারমেয় সর্বদা প্রস্রাব করবে”, “হে গাভী, তোমার মুখ অপবিত্র থাকবে তাই পেছন দিকে তোমায় সবাই পূজা করবে”, “আর ব্রাহ্মণ, তোমার ভোগলিপ্সা কোনদিন প্রশমিত হবে না”। বটবৃক্ষকে অভিশাপ নয়, আশীর্বাদ করেন “অক্ষয় বট ” হয়ে থাকবে।

ইতিহাস  অনুসারে সরস্বতী নদী একদিন ছিল, এখন সে নদী ত লুপ্ত ।

জগৎ প্রকৃতি সবসময়ই  পরিবর্তনশীল। এ পরিবর্তন  বিজ্ঞান সম্মত ত বটেই আর কারণ অনুসন্ধানে গবেষণারও ফসল।

কিন্ত  মন্দ কি পুরাণগত বিষয়গুলি  জানতে যেখানে জড় ও জৈব বস্তু সব একাকার। আমাদের রসায়নে ত  সব কিছুরই মূল উপাদান  ঐ অনু ও পরমানু।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress