Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » সম্মানের কাছে অর্থ মূল্যহীন || Ranjana Guha

সম্মানের কাছে অর্থ মূল্যহীন || Ranjana Guha

সম্মানের কাছে অর্থ মূল্যহীন

সম্মানের কাছে অর্থ যে মূল্যহীন এই অবধারণার সার্থকতা অতীতকাল থেকে স্বীকৃত হয়ে এসেছে,তাই সূক্তি বলে;-
“বিদ্বত্বঞ্চ নৃপত্বঞ্চ নৈব তুল্যং কদাচন।
স্বদেশে পূজ্যতে রাজা বিদ্বান সর্বত্র পূজ্যতে।।”—একথা সত্যি রাজার অর্থের প্রাচুর্য আছে, কিন্তু বিদ্বান ব্যক্তির সেই প্রাচুর্য নেই। তথাপি এই তথ্য অতীতের আর্থ-সামাজিক পরিপ্রেক্ষে যতটা গ্রহণযোগ্য বর্তমানে কি তাই?সংশয় জাগে বইকি!এখন সম্মান আর অর্থের মূল্যায়ন যেন সমানুপাতিক।দেখা যায় যার অর্থ আছে জনগণ তার কাছেই নতি স্বীকার করে।ভাবে বুঝি সম্মান অর্থের পিছনে ঘোরে। আবার অর্থের উদ্গম যদি সৎ পথে না হয় তবে অর্জিত সম্মানও হঠাৎ অসম্মানে পরিণত হয়। সাম্প্রতিক নেতা মন্ত্রীদের দুরাচারিতা তারই প্রমাণ।
তাই সার্বিক ভাবে দেখলে বোঝা যায় সম্মান যদি সৎ পথে অর্জিত হয় তাহলে আমৃত্যু তথা মৃত্যুর পরেও সেই সম্মান কেউ কেড়ে নিতে পারে না।কারণ;-“কীর্তিমানের মৃত্যু নেই” বা “কীর্তির্যস্য সঃ জীবতি”।বিত্তবান ব্যক্তি অর্থের বিনিময়ে তাৎক্ষণিক সম্মান অর্জন করতে সক্ষম হয় কিন্তু যেহেতু “চলচ্চিত্রং চলদ্বিত্তং”-তাই অসার অর্থের স্থায়িত্ব সম্বন্ধে সন্দিহান হতেই হয়।তাই অর্থ যে সম্মানের থেকে মূল্যবান হতে পারে না সেকথা অনস্বীকার্য।
বলাবাহুল্য অর্থ আর সম্মানকে একাসনে বসানোও যায় না ,কারণ অর্থ আজ আছে কাল নেই। কারণ অর্থ দৃশ্যমান আর সম্মান অনুভবপ্রধান।সম্মান জ্ঞান নির্ভর,তাই কথায় আছে;-“অর্থ-সম্পদের বিনাশ আছে,কিন্তু জ্ঞান-সম্পদ কখনো বিনষ্ট হয় না “। জ্ঞানের সাথে অর্থের কোনো তুলনা হয় না। প্রকৃত বিচারে অর্থবিত্তের চেয়ে জ্ঞানের মূল্য অনেক বেশি । অনেক সময় আমরা অর্থ বড় না জ্ঞান বড় এমন বিতর্কেও জড়িয়ে পড়ি এবং স্বাভাবিকভাবে রায় চলে যায় অর্থ – সম্পদের দিকে । তার অবশ্য বাস্তব ভিত্তিও আছে । কেননা মানুষের বেঁচে থাকার জন্য অর্থের প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি । অর্থ দিয়েই সমস্ত বস্তুগত চাহিদা পূরণ করা যায় । অর্থের সামাজিক উপযোগ আছে । আছে নগদ মূল্যও। সেজন্যই অর্থ দিয়ে আমরা ব্যক্তি ও সমাজজীবনে মানুষের অবস্থানকে নির্ণয় করে থাকি । কিন্তু একথা সত্য , অর্থ – সম্পদ কেবল মানুষের বাইরের দিকটাকেই প্রকাশ করে । তাছাড়া অর্থ অনেক ক্ষেত্রে অনর্থের কারণ হয়ে দাঁড়ায় । পৃথিবীর সকল দ্বন্দ্ব – সংঘাতের পেছনে রয়েছে অর্থের অবদান । অর্থ – সম্পদ যতই শক্তির অধিকারী হোক , জ্ঞান – সম্পদের কাছে তা নিষ্প্রভ । সত্যিকারের জ্ঞানী ব্যক্তি বিত্তশালী লোকের চেয়ে অনেক বেশি সম্মানীয় ও শক্তিমান।অর্থ – সম্পদের কোনো স্থায়িত্ব নেই । কিন্তু প্রতি মুহূর্তে জ্ঞানী ব্যক্তি জ্ঞানের দীপ্তিতে সজীব – সুন্দর হয়ে উঠেন । কালের বিবর্তনে বিত্তবানের ধনভাণ্ডার এক সময়ে নিঃশেষ হয়ে আসে , কিন্তু বিদ্বানের জ্ঞানভাণ্ডার ক্রমাগত সমৃদ্ধ হতে থাকে । তাই অর্থ – সম্পদ নয় , জ্ঞান – সম্পদের মাপকাঠিতে মানুষের মূল্যায়ন হওয়া উচিত । কারণ অর্জিত অর্থ নিঃশেষ হয়ে যায় , কিন্তু অর্জিত জ্ঞান চিরস্থায়ী কারণ জ্ঞান দ্বারাই সম্মান অর্জন করা যায়।সেই সম্মান হয় চিরস্থায়ী এবং অর্থের চেয়ে অধিক মূল্যবান।তাই তো উইলিয়াম শেক্সপিয়ার বলেছিলেন;-“আমি মৃত্যুকে যতটা ভয় করি,সম্মানকে ততটাই ভালবাসি।”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress