Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » সম্বোধন || Kajal Mukherjee

সম্বোধন || Kajal Mukherjee

অনিত এক মেডিসিন প্রোডাকশন কোম্পানীর ম্যানেজার।

তার কাজ ছিল, ওই কোম্পানির প্রোডাকশন ইউনিটের দৈনন্দিন কাজের তত্ত্বাবধান করা ।

অনিতের শিক্ষা দীক্ষার সাথে ব্যবহারও ছিল খুব সুন্দর।

ছোট বড় সবাইকে যথাযথ সম্মান করত, এমনকি তার অধস্তন কারোকেও কোনদিনও তুমি বা তুই করে কথা বলত না।

অফিসের অধতন কর্মী থেকে ঊর্ধ্বস্তন অফিসার পর্যন্ত সবাই অনিতের ব্যবহারে এবং কাজে খুব সন্তুষ্ট ছিল ।

অনিত অফিসে আসার সময় তার সামনে থাকা সকলকে গুড মর্নিং আর অফিস থেকে বেরোনোর সময় তার সামনে থাকা প্রত্যেককে গুড ইভিনিং সম্বোধন করত।

একদিন কাজ শেষ হবার কিছু সময় আগে অনিত রুটিন চেকআপের জন্য প্রোডাকশন ইউনিটের একটা ল্যাবরেটরি রুমে ঢুকল,
যেটা মূলত রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট ল্যাবরেটরি।

ওই রুমে রুটিন চেকআপের সময় হঠাৎ ওখানে কোনো গ্যাস লিকেজের কারণে অনিতের মাথা ঝিমঝিম করছিল আর তখন কোন কিছুতে ধাক্কা লেগে অনিত পড়ে যায় আর সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলে।

ওই আর এন্ড ডি রুম প্রোডাকশন ইউনিটের এক প্রান্তে ছিল,আর ততক্ষণে ওই প্রোডাকশন ইউনিটের অন্যান্য সব কর্মী কাজ শেষ করে ফ্যাক্টরি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন।

অনিত এইভাবে কতক্ষন জ্ঞান হারিয়ে পড়েছিল তা সে নিজেও জানে না ।

তার জ্ঞান যখন ফিরল, সে নিজেকে দেখল তাদের অফিসের রিসেপসান রুমের সোফাতে শুয়ে আছে ,আর মাথার কাছে সিকিউরিটি গার্ড পাখার হাওয়া করছে,তার চোখে মুখে প্রবল উৎকন্ঠা!

অনিত সোফায় উঠে বসল, তার জ্ঞান ফিরতে দেখে সিকিউরিটি গার্ড স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল।

এরপর এক গ্লাস জল খেয়ে আর সব কথা শুনে অনিতা বলল,’আপনার তো ওই আর এন্ড ডি রুমে যাওয়ার কথা নয়। হঠাৎ কি মনে করে সেই সময় ওখানে গেলেন?’

গার্ড উত্তর দিলেন,’ আমি অনেকদিন হল এই কোম্পানিতে সিকিউরিটি গার্ডের কাজ করছি,তা প্রায় ৩০ বছর।
কিন্তু আমি আপনার মত মানুষ খুব কম দেখেছি যে প্রতিদিন সকালে আমাকে ‘গুড মর্নিং’ বলে সম্বোধন করেন আর সন্ধ্যায় বের হবার সময় ‘গুড নাইট’ বলে সম্বোধন করেন।

বেশিরভাগ মানুষ এমন আচরণ করেন যেন তাঁরা আমাকে দেখতেই পান না। কিন্তু আপনি হলেন সেই মানুষ যিনি প্রতিদিন আমাকে হাসিমুখে সম্বোধন করেন এবং যথারীতি আজ সকালেও করেছেন।

কিন্তু আজ সন্ধ্যায় আমি আপনাকে দেখিনি আর আপনার কাছ থেকে গুড ইভিনিংও শুনিনি।

তার মানে আমি বুঝেছিলাম,আপনি অফিস থেকে বের হন নি।

অফিসের ছুটির অনেকক্ষণ পরেও আপনি বেরোচ্ছেন না দেখে , কিছু একটা ঘটেছে ,সেটা আমি বুঝতে পেরে আপনাকে খুঁজতে শুরু করেছিলাম আর তারপর খুঁজতে খুঁজতে ওই রুমে আপনাকে অঞ্জান অবস্থায় দেখে এখানে নিয়ে এলাম পাঁজাকোলা করে।
এখন একটু ভালো বোধ করছেন তো , স্যার? ‘

অনিত শুধু মাথা নেড়ে হ্যাঁ বলল, কৃতজ্ঞতায় তখন আর কিছু বলতে পারল না সে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress