সময়ের অপেক্ষা
অনেক দিন চলে গেছে কালের অতলে। তাকে মনে রাখেনি কেউ। যে দীঘির জলে ঠাঁই হয়েছিল চিরজীবনের জন্য, ভুলে গেছে সেও। ছেলেটা তার গ্রামের সীমানা ছাড়িয়ে, সারা দেশ ময় ঘুরে বেড়ায় আপন খেয়ালে। আত্মিয় পরিজন বলতে এখন সবাই ছেড়ে চলে গেছে। খুব মনে পড়ে, শান বাঁধানো ঘাট টাকে। সারা দুপুর জলের সাথে সখ্যতা। গ্রামের বৌ- ঝি রা আদর করে ডাকত মীন কুমার। যেমন রূপ তেমন সাঁতারে পটু। ভোর রাতে খেজুর রসের মিষ্টতা, আজও লেগে আছে মুখে। তার রাখালিয়া সুর, মাতিয়ে দিত মেঠোপথ। সময় পেরিয়েছে আপন খেয়ালে।
অগ্রহায়ণ মাস তবে শীতটা আর অনুভব হয়না তেমন করে, শিশির রেখা যদিও দেখা যায় ঘাসে তবে পরিযায়ী পাখি রা পথ বদলেছে কয়েক বছর ধরে। গ্রামের ক্রম পরিবর্তন নজর এড়ায়নি ছেলেটার। মন খারাপ হয়েছে, তার আকুতি শুনতে পায়নি কেউ।
কিছুদিন ধরে চোখে আর দেখতে পায় না সে। অনুভব করতে পারে শুধু হৃদস্পন্দন। আঁধার, চারিপাশ শুধু আঁধার। একটা ঘরের মধ্যে যেন সে আবদ্ধ হয়ে গেছে। এপাশ ওপাশ করতে পারলেও যেতে পারে না কোথাও…….. শান বাঁধানো ঘাটের স্মৃতি লুপ্তপ্রায়। কারা যেন কথা বলছে! কান পেতে শোনে অন্ধ মন “মিসেস স্যান্যাল, বাচ্চা খুব ভালো আছে। একটু সাবধানে থাকবেন। প্রথমবার মা হতে চলেছেন আর কয়েকমাস পরেই।” তবে কি তার ফিরে আসার সময় হয়ে এলো? ভাবতে থাকে ছেলেটা!!