সমকামি – আঠাশতম পর্ব
অন্যন্যা ঘরে ঢুকতেই কৃষ্ণেন্দু বলে: কি গো দিদিমণি বৌদিমনি হবে? অন্যন্যা গম্ভীর হয়ে বলে: তুমি ও শুরু করলে? মালতি দি না হয় আমার সম্পর্কে কিছু জানে না তুমি তো জানো? পারবে সব জেনে আমাকে সত্যি কোনোদিন ভালোবাসতে? কৃষ্ণেন্দু অন্যন্যার সামনে এগিয়ে এসে বলে: তুমি বলো না তোমার কি মনে হয় আমি সত্যি তোমায় ভালোবাসি না? কিন্তু অনু আমার সম্পর্কে তো কিছুই জানো না তুমি। তুমি কি পারবে আমাকে মানতে সব টুকু জেনে? অনু আজ সাত বছর আমি একা অবশ্য যতদিন মা ছিল সেটা তেমন ভাবে ফিল করিনি। মা চলে যাবার পর আমার আর নিজের বলে কেউ নেই। রূপসার সাথে সম্মন্ধটা ফুল কাকিমা এনেছিল আমরা তখন আলিপুরদুয়ারে। নতুন চাকরি অনেক বেশী ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম বাবা ও মারা যান তখন মাত্র ছয় মাস। মা ভীষণ একা হয়ে পড়ে। একদিন ফুল কাকিমা রূপসার সাথে সম্মন্ধটা নিয়ে আসেন। প্রথমে রাজি না হলে ও পরে মার জন্য রাজি হয়ে যাই। অন্তত সারাদিন মার সাথে কথা বলার দেখে রাখার একজন মানুষ থাকলে আমি নিশ্চিন্তে বাইরের কাজ করতে পারবো। তখন অফিসের কাজে প্রায়ই আমাকে বাইরে যেতে হতো আর যখন আমি বাইরে যেতাম মা তখন একদম একা। সে সব চিন্তা করেই আমি আর আপত্তি করিনি। আর সত্যি বলতে রূপসাকে দেখে আমার বেশ ভালোই লেগেছিল মার ও খুব পছন্দ হয়েছিল ওকে। বিয়ে ও হয় আমাদের বেশ ধুমধাম করে।আপাত দৃষ্টিতে সবকিছু ঠিক থাকলে ও আসলে কিছুই ঠিক ছিল না। রূপসার একজন নয় একাধিক পুরুষের সাথে সম্পর্ক ছিল। আমার অনুপস্থিতে ও তাদের সাথে দেখা করতো কথা বলতো এমন কি আমি বাইরে গেলে ও বাপের বাড়ি থাকার নাম করে তাদের সাথে বাইরে রাত ও কাটাতো। আমি না থাকলে ও থাকতো না বাড়িতে। প্রথমে আমরা ভাবতাম ও হয়তো সত্যি বাপের বাড়িতেই যায়। অনেক বার বোঝানোর পরে ও আমি না থাকলেই ও থাকতো না।আমি বলতাম আমি বাড়ি থাকতে ও যেনো যায় ও শুনতো না। সেইবার আমার মুম্বাই যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু এয়ারপোর্টে পৌঁছানোর পর জানতে পারি সেদিনের ফ্লাইট ক্যান্সেল গিয়ে গেছে ওয়েদার এর জন্য। রূপসাকে সারপ্রাইজ দেবার জন্য কোনো খবর না দিয়েই আমি বাড়ি ফিরে যাই। যতক্ষনে আমি বাড়ি পৌঁছাই রূপসা ও বেরিয়ে যায়। ঘরে ঢুকে রূপসাকে না দেখে ওকে ফোন করি কিন্তু ওকে ফোনে না পেয়ে ওর বাপের বাড়িতে ফোন করি। ফোনটা রূপসার বাবা ধরেছিলেন আমি ওনাকে রুপসাকে ফোনটা দিতে বলায় উনি আমাকে বলেন আজ প্রায় ছয় মাস রূপসা সেখানে যায়নি কারণ আমি বাইরে গেলে মা একা থাকে তাই। আমি বেশ কিছুক্ষন কিছু বুঝতে পারিনি জানো অনু। তিন দিন পর রূপসা বাড়ি ফেরে সেইবার বাইরের টুরটা আমি ক্যান্সেল করেছিলাম কারণ তার থেকে ও বেশী ইম্পর্ট্যান্ট ছিল রূপসার সাথে কথা বলা। ও বাড়ি ফিরলে প্রথমে আমি ওকে কিছু ধরা দিনি। কটাদিন ছুটি নিয়েছিলাম অফিস থেকে ওর উপর নজর রাখবো বলে কিন্তু ওকে বলি আমার শরীর ভালো না তাই ছুটি নিয়েছি। খেয়াল করতাম লুকিয়ে ফোনে কথা বলে। আমি বাড়িতে আছি সেটা যে ওর খুব একটা পছন্দ হচ্ছে না সেটা ও বুঝতে পারতাম। একদিন ও স্নানে গেলে ওর ফোন ঘেটে সব জানতে পারি বুঝতে পারি যা ভেবেছিলাম সেটাই সত্যি কিন্তু সম্পর্কটা কোনো একজনের সাথে নয়। সরাসরি রূপসাকে প্রশ্ন করলাম: ও পরিষ্কার করে জানালো যে আমাকে ওর পছন্দই ছিল না। বাবা মার চাপে ও বিয়েটা করতে বাধ্য হয়। সংসারের এতো রকম বাঁধন ওর কোনোদিন পছন্দ ছিল না। তারপর আর আমি পারিনি অনু আমার ভালোবাসা অতগুলো মানুষের সাথে ভাগ করে নিতে। আমি খুব ভালোবাসতাম ওকে কিন্তু আমার বা আমার ভালোবাসার কোনো মূল্য যে ওর কাছে ছিল না সেটা ও জানলাম। ডিভোর্সটা হয়ে গেলে মাকে নিয়ে কলকাতায় চলে আসি। তারপর মা আর আমি এই টুকুই আমার পৃথিবী। আর মা চলে যাবার পর। এখন মনে হয় আমি বা কেনো বেচেঁ আছি কার জন্য। আমি যদি নাই থাকি কার কি নষ্ট হবে? কিন্তু… চুপ করে যায় কৃষ্ণেন্দু। অন্যন্যা কৃষ্ণেন্দুকে বলে: কেনো এই যে বললে আমাকে ভালবাসো, তাহলে আমার জন্য বাঁচবে। আমার জন্য বাঁচা যায় না? কৃষ্ণেন্দু অবাক হয়ে তাঁকিয়ে থাকে অন্যন্যার দিকে। বিস্ময়ে বলে ওঠে: অনু তুমি সত্যি বলছো? অন্যন্যা আরো কাছে এগিয়ে এসে বলে কেনো তোমার বিশ্বাস হচ্ছে না? দুজন ঠোকে যাওয়া মানুষ কি একে অপরকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে পারে না!! ভালোবাসি তোমায়, আমাকে কি গ্রহণ করবে তুমি? অনু বলে জড়িয়ে ধরে কৃষ্ণেন্দু। অন্যন্যা ও জড়িয়ে ধরে কৃষ্ণেন্দুকে। দুজনের মুখে চোখে এক অদ্ভুত পরিতৃপ্তির হাঁসি। অনেকদিন বাদে যেনো দুজন মানুষ তাদের সঠিক মানুষের সন্ধান পেয়েছে। এভাবে যে কতক্ষন কেটে গেছে ওদের করো সেদিকে খেয়াল নেই। মালতি দি বাইরে থেকে ডাক দেয়: ও বৌদিমনি একবার কি ঘরে আসবো? মালতির ডাকে ঘোর ভেঙ্গে কৃষ্ণেন্দু অন্যন্যার দিকে তাঁকালে লজ্জায় রাঙা হয়ে ওঠে অন্যন্যা। কৃষ্ণেন্দু বলে: হ্যাঁ তুমি এসো ভিতরে। মালতি ঘরে ঢুকে বলে: আমার কাজ শেষ গো এখন দুজনে একটু একা থাকো আমি যাই। একটু পরে তো আবার বৌদিমনি ও চলে যাবে। ও দাদাবাবু এবার নিয়ে চলে এসো তো আর কতদিন দূরে থেকে কষ্ট পাবে দুজন। অন্যন্যা আর কৃষ্ণেন্দুর মুখে হাঁসি। মালতি চলে গেলে কৃষ্ণেন্দু দরজা বন্ধ করে ঘরে এসে দেখে অন্যন্যা জানলার কাছে দাঁড়িয়ে আছে। কৃষ্ণেন্দু অন্যন্যার কাছে গিয়ে জানতে চায়: কি ভাবছো অনু? তুমি খুশি তো এই সম্পর্কে? অন্যন্যা কৃষ্ণেন্দুর বুকের উপর মাথা রেখে বলে খুব খুশি জানো। আমাকে ছেড়ে চলে যাবে নাতো? অন্যন্যাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে: কোনোদিন না অনু। কখনো না কথা দিলাম। আমি খুব তাড়াতাড়ি আমার ছোট্ট বউটাকে আমাকে কাছে নিয়ে আসবো। আমি যাবো অনু তোমার বাবা মার কাছে আমাদের বিয়ের কথা বলতে। ডিভোর্সটা হয়ে গেলেই আমরা বিয়ে করে নেবো। আমার যে আর একা থাকতে ভালো লাগছে না। আমি পারছি না তোমাকে ছেড়ে। অনেকগুলো বছর অনু আমি আমার ভালোবাসার মানুষটাকে খুঁজে বেড়িয়েছি। অন্যন্যার চোখ ছলছল করছে দেখে কৃষ্ণেন্দু প্রশ্ন করে: কি হলো অনু আজ এমন একটা দিনে তোমার চোখে জল কেনো? আমি কি তোমাকে কষ্ট দিয়ে ফেললাম? মাথা নাড়িয়ে অন্যন্যা বললো নাতো। কিন্তু স্যার আমাকে যে এবার যেতে হবে। আমাকে ছাড়ো। কৃষ্ণেন্দু আরো শক্ত করে অন্যন্যাকে জড়িয়ে ধরে বলে: না, ছাড়বো না। সেদিন না বলে অফিস থেকে বেরিয়ে গেলে জানো কতো ভয় পেয়ে গেছিলাম। আজকে ছাড়বো না এটাই তোমার শাস্তি। অন্যন্যা উত্তরে বলে: একটু অপেক্ষা করো আমি সারা জীবন তোমার এই শাস্তি মানতে রাজি আছি। কিন্তু এখন তো যেতেই হবে যে। কৃষ্ণেন্দু আলতো করে অন্যন্যার গালে চুমু খায়, লজ্জা পায় অন্যন্যা মাথা নীচু করে নেয়। একটা শর্তে ছাড়তে পারি কৃষ্ণেন্দু বলে। কি শর্ত পাল্টা প্রশ্ন করে অন্যন্যা। আমি তোমাকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসবো। বলো রাজি? অন্যন্যা বলে: কিন্তু!!! কোনো কিন্তু না অনু প্লিজ তাহলে আরো একটু সময় তোমার সাথে থাকতে পারবো । আর হ্যাঁ কাল থেকে আমি অফিস যাচ্ছি না করা যাবে না। এই ভাবে সারাটা দিন তোমাকে না দেখে আমি পারবো না থাকতে। আমি সব নিয়ম মেনে চলবো কথা দিচ্ছি। অন্যন্যা কৃষ্ণেন্দুর গাল টিপে বলে উফ্ আচ্ছা বেশ সব মেনে নিলাম এবার চলো আমার দেরী হয়ে যাচ্ছে। তৈরী হয়ে বেরোনোর সময় কৃষ্ণেন্দু অন্যন্যার হাত টেনে ধরে বলে : কি হলো আমারটা দাও!! অন্যন্যা অবাক হয়ে জানতে চায়: কি দেবো? কৃষ্ণেন্দু হেঁসে বলে: কেনো ওই যে আমি দিলাম আমারটা কোথায়? ধ্যাৎ, তুমি না যাতা লজ্জা পেয়ে ঘরের বাইরে গিয়ে দাঁড়ায় অন্যন্যা।
গাড়িতে বসে আড় চোখে অন্যন্যার দিকে তাঁকিয়ে কৃষ্ণেন্দু বলে: আজকে ফাঁকি দিলে দাও, এরপর সুদে আসলে নেবো তখন দেখো কেমন লাগে। অন্যন্যা কৃষ্ণেন্দুর দিকে না তাঁকিয়েই বলে অসভ্য। কৃষ্ণেন্দু গাড়ি চালাতে চালাতে উত্তর দেয়!! সে তুমি আমাকে যাই বলো না কেনো? আজ মা থাকলে খুব খুশি হতো অনু। মানুষটা এই দুঃখে শেষ হয়ে গেলো যে তার দেখা মেয়ের সাথে বিয়ে হয়ে আমার জীবনটা নষ্ট হয়ে গেলো!!! দীর্ঘশ্বাস ফেলে কৃষ্ণেন্দু। চুপ করে থাকে অন্যন্যা ও কি বলবে ও বুঝতে পারে না। কিছুটা রাস্তা যাওয়ার পর কৃষ্ণেন্দু আবার প্রশ্ন করে: আচ্ছা অনু তুমি তখন বলছিলে তোমার বাড়িতে ঝামেলা। কি হয়েছে অনু কি নিয়ে ঝামেলা? আমাকে কি বলা যায়? অন্যন্যা কৃষ্ণেন্দুর দিকে তাঁকিয়ে বলে: তোমাকে না বলে কাকে বলবো? তবে আজ থাক আজকের দিনটা এই সময় টা শুধু ভালো স্মৃতিতেই ঘেরা থাক। কালকে বলবো কথা দিলাম। কৃষ্ণেন্দু আর কথা না বাড়িয়ে তাতেই রাজি হয়ে যায়। অন্যন্যা গাড়ীর জানলা দিয়ে বাইরের দিকে তাঁকিয়ে আছে। কৃষ্ণেন্দু অন্যন্যার হাতটা নিজের হাতের মুঠোয় শক্ত করে ধরে বলে: কথা দিলাম প্রাণ থাকতে এই হাত আমি ছাড়বো না অনু। অন্যন্যা ও কৃষ্ণেন্দুর হাতটা শক্ত করে ধরে। অন্যন্যাকে পৌঁছে দিয়ে কৃষ্ণেন্দু বলে কালকে এখানেই অপেক্ষা করবো চলে এসো। তোমাকে আর বাসে ট্রামে ট্রাভেল করতে হবে না। আমার বউ আমার দায়িত্ব আজ থেকে। অন্যন্যা বলে: এই যে মশাই বউ এখনও হয়নি। ভুল অনু মনে মনে তুমি আমার অনেক আগেই হয়ে গেছিলে শুধু স্বীকার করতে ভয় পাচ্ছিলে। অন্যন্যা হাঁসে।
বাড়িতে ঢোকার পর রিনা দেবী বলে এবার থেকে একটু তাড়াতাড়ি ফেরার চেষ্টা করো। তাতে সকলেরই মঙ্গল। কোনো উত্তর দেয় না অন্যন্যা। ও আজকের দিনটা শুধু ওই মুহূর্তটুকুর আবেশ নিয়ে থাকতে চায়। ওর সমস্ত মন টুকু জুড়ে শুধুই কৃষ্ণেন্দু। ও আজ আর কিছু ভাবতে চায় না। নিজের ঘরে গিয়ে দরজা দেয় অন্যন্যা। তারপর ফ্রেশ হয়ে তৃনাকে ফোন করে। তৃণা ম্যাসেজ করে জানায় অফিসের একটা মিটিংয়ে আটকে আছে ফ্রি হয়ে ওকে কল করবে। কিছুক্ষন বাদে কৃষ্ণেন্দু ফোন করে। ফোন ধরে অন্যন্যা বলে: খেয়েছো তোমার কিন্তু ওষুধ আছে। খেয়েছি !! ঘরে ঢুকে খেয়ে তারপর তোমাকে ফোন করছি। অনু ভীষণ দেখতে ইচ্ছে করছে তোমায়। লেখার পাশে একটা লাভ সাইন পাঠায় কৃষ্ণেন্দু। অন্যন্যা উত্তরে লেখে এতো অস্থির কেনো হচ্ছো? কাল সকাল হলেই তো দেখা হবে। আমি তোমার পাশে সবসময় আছি। চোখ বুঝে দেখো আমি তোমার সাথেই আছি। কটাদিন আমাদের একটু অপেক্ষা করতে হবে তারপর আর কেউ থাকবে না আমাদের মাঝখানে। কৃষ্ণেন্দু এবার জানতে চায়: তুমি খেয়েছো অনু? তারপর বলে এই অনু নামটা নয় একটা খুব মিষ্টি নাম ভাবতে হবে আমার মিষ্টি প্রেয়সীর জন্য। যেই নামটা শুধু আমার হবে যে নামে শুধু আমি ডাকবো। অন্যন্যা চুপ করে থাকে। কিছুক্ষণের নিস্তব্ধতা কাটিয়ে কৃষ্ণেন্দু বলে: যাও সোনা খেয়ে নাও। তারপর একটু কথা বলে শুয়ে পড়। আমি শুধু ভাবছি জানো কখন সকাল হবে কখন তোমায় দেখতে পাবো? আমার সময়গুলো কেমন যেনো থমকে গেছে। অন্যন্যা উত্তর দিলো: আমি খেতে এসে ফোন করছি। আর এই যে সিগারেট কিন্তু একদম নয়। মনে থাকবে? কৃষ্ণেন্দু বলে: থাকবে থাকবে ম্যাডাম সব মনে থাকবে আগে যাও খেতে এসো। ফোন রেখে খেতে যায় অন্যন্যা। গিয়ে দেখে টেবিলে খাবার সাজানো কিন্তু কেউ নেই। তিয়াসা ও আজ খেতে আসেনি এখনো। মা বাবাকে ডাকবে বলে ওদের ঘরের দিকে যেতে গিয়ে অন্যন্যার কানে আসে দুজনের তর্ক। এভাবে তর্কাতর্কি করতে অন্যন্যা ওদের কখনো দেখেনি। বিকাশ বাবু বার বার রিনা দেবীকে বোঝানোর চেষ্টা করছে মেয়ে বড় হয়েছে ওর নিজের জীবন নিজের ভালো লাগা নিজের বোধবুদ্ধি তৈরী হয়েছে। নিজেদের সিদ্ধান্ত ওর উপর চাপিয়ে দেওয়া অন্যায়। একবার ওরা দেখেশুনে দিয়েছে তাতে যখন ভালো হয়নি। এরপর আর ঠিক না কোনো কিছু জোড় করে চাপিয়ে দেওয়া। কিন্তু রিনা দেবীর ওই এক কথা কেউ যদি নিজের ভুল স্বীকার করে এগিয়ে আসে তাহলে তাঁকে একটা সুযোগ অন্তত দেওয়া উচিত। ওই সামান্য টাকার চাকরি করে ও কি উন্নতি করতে পারবে? গিয়ে যদি দেখে কিছু ঠিক হয়নি তখন তো রাস্তা খোলাই আছে। বিকাশ বাবু পরিষ্কার স্ত্রীকে জানিয়ে দেয় যে তার কথায় বিকাশ বাবুর কোনো মত নেই। সে জোড় ইচ্ছের বিরুদ্ধে অন্যন্যার উপর কিছু চাপিয়ে দেবেন না আর না রিনা দেবীকে সেটা করতে দেবেন। অয়ন আসার পর যদি অন্যন্যা নিজে থেকে যেতে চায় তাহলে ভালো নাহলে এই নিয়ে তাকে কোনো জোড় করা যাবে না এটাই তার শেষ কথা। রিনা দেবী কিছু বলতে যাবে বিকাশ বাবু তাকে থামিয়ে দিয়ে বলে: এই নিয়ে অনেক কথা হয়ে গেছে। আর কোনো কথা সে শুনতে চায় না। এখন খেতে গেলে ভালো হয়। রিনা দেবীর আর সাহস হয় না কথা বাড়ানোর।