সবাই চিন্তিত
বিকেলে বাণীদের বাড়ি যেতেই বাণীর মা বিলাপ করে বলছেন জানো মেয়ে, আমাদের কী সর্বনাশ হয়ে গেল? এখন আমার মেয়ের কী হবে? সমাজে আমরা মুখ দেখাবো ক্যামনে?
আমি স্বান্তনা দিয়ে বললাম ক্ষ’তি যা হওয়ার হয়ে গেছে।ওই প্রতারক যুবককে খুঁজে বের করে তার বি’চার করতে হবে।
বাণীর বাবা বললেন, সম্প’ত্তি তেমন কিছুই নেই। দিন আনি দিন খাই। মেয়ের বিয়ের জন্য জমি বিক্রি করে দিয়েছি। টাকা পয়সা খুইয়ে শেষ পর্যন্ত মেয়ের বিয়ে দিতে পারলাম না। আমাদের মান ইজ্জত সব গেছে।
দেখলাম বাণী তাদের বসতঘরের বারান্দায় নির্বাক হয়ে বসে আছে। হাতে মেহেদীর রং। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। নাওয়া-খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। লজ্জায় কারো কাছে মুখ দেখাতে পারছে না।
বাণীকে সোহম বলেছিল পুলিশে চাকরি করে। তাই বাণী দুইবার দেখাও করেছিল। তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে বাণীর পরিবার ওই যুবক ও তার কাকা পরিচয়ে এক ব্যক্তির সঙ্গে মোবাইলে আলাপ আলোচনার পর বিয়েতে মত দেন।
বিয়ের তারিখ ঠিক হওয়ার পর জানায় আইডি কা’র্ড হারিয়ে যাওয়ায় সে তার বেতনের টাকা তুলতে পারছে না। বিয়ের খরচের জন্য তাই লাখখানেক টাকা চায়। বিয়ের আগে টাকা না পেলে নাকি তার বিয়ে করা সম্ভব হবে না।
তার কথায় বিশ্বাস করে টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সে প্রতারণা করেছে।
এসময় বাণী তার মোবাইলে ওই যুবকের একটি ছবি দেখায়,কোনো এক কোম্পানির সিকিউরিটি গার্ডের ইউনিফর্ম পড়ে আছেন ওই যুবক। ইউনিফর্মে লেখা আছে সোহম ও সিকিউরিটি। আর কিছু ফোন নম্বর। এসব নম্বরে ওই যুবকের সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানায় বাণী ও তার পরিবার।
বিয়ের আগের রাত পর্যন্ত বাণী ও তার পরিবারের সঙ্গে ওই যুবকের ফোনে যোগাযোগ ছিলো।
বিয়ের দিন সকাল থেকে বাড়িতে বিয়ের আয়োজন চলতে থাকে এবং অতিথিরাও আসতে থাকেন। গায়ে হলুদ আসতে কত দেরি তা জানার জন্য ওই যুবকের ফোনে কল করলে ফোনটি ব’ন্ধ পাওয়া যায়। এরপর একাধিক নম্বর দিয়ে বার বার কল করেও কোনো কাজ হয়নি।
বরের মোবাইল ফোন বন্ধ জানতে পেরে বাড়ির সবাই চিন্তিত হয়ে পড়েন।