সত্যিকারের বাণী বন্দনা
ছোট্ট সিংহল পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে।বাবা জেলে,খুবই গরিব।সিংহল একদিন মা’কে বলে, একটা ভালো জামা কিনে দিও তো, স্কুলে সরস্বতী পূজা দেখতে যাবো। মা বলে, আমাদের তেমন আয় নেই বাবা! স্কুলে গিয়ে ঠাকুর প্রণাম করে বলো, “মা আমরা খুব গরিব, তুমি আশীর্বাদ করো, যেনো আমি ভালো পড়াশুনা করে প্রতিষ্ঠিত হই,বড় হয়ে চাকরি পাই”। দেখবে বিদ্যার দেবী সরস্বতী দয়া করবেন।
সিংহল বোঝে, তার বাবা-মায়ের অক্ষমতা। সরস্বতী ঠাকুরকে প্রণাম করে মায়ের বলা কথাগুলো প্রার্থনায় জানায়। তারপর ভাবে সে সরস্বতী পূজা করবে।
পরদিন সমুদ্র সৈকতে গিয়ে বালি দিয়ে সরস্বতী মূর্তি তৈরি করে একমনে পূজা দেয়।প্রতিদিনই সিংহল এমন কাজ করে চলে। তাঁর প্রার্থনায় তুষ্ট হয়ে দেবী সরস্বতী কন্যা রূপে দেখা দিয়ে ফুল পূজা নেয়। সিংহল ভালো ফুল রাস্তার ধার থেকে তুলে পূজা দিয়ে সেই কন্যাকে দেয়। কন্যা হাসি মুখে নিয়ে চলে যায়।
একদিন স্কুলের এক মাস্টার মশাই প্রাতঃভ্রমণ করতে গিয়ে দেখে সিংহল কার সঙ্গে যেন কথা বলছে, অথচ কেউ সেখানে নেই। অবাক হয়ে সিংহলের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করেন, এখানে কি করছো, কার সঙ্গে কথা বলছো?
সিংহল বললো, মাস্টারমশাই, সরস্বতীর পূজা করছি, আর এ আমার বন্ধু। প্রতিদিন আসে, পুজোর ফুল নিতে।
মাস্টারমশাই বললেন, কাউকে তো দেখছি না!
সিংহল, এই তো দাঁড়িয়ে। মাস্টারমশাই সিংহলকে স্পর্শ করতেই দেখলেন স্বয়ং সরস্বতী কন্যারূপে দাঁড়িয়ে, মুহূর্তে অদৃশ্য হয়ে গেলেন। মাস্টারমশাই আবাক! বললেন, তুই-ই সত্যিকারের ভক্তিতে বাণী বন্দনা করিস, তাইতো কন্যারূপে দেবী ফুল নিতে আসেন। মাস্টারমশাই খুশিতে সিংহলকে জড়িয়ে ধরলেন এবং তার পড়াশুনার দায়ভার নিজে নিলেন।