সংক্রান্তি
আজকাল মা’কে নিয়ে আর পারা যায় না। যত বয়স হচ্ছে, কেমন যেন অবুঝ হয়ে উঠছেন। সংক্রান্তির দিন এসেছে বলে কিছুতেই চুঙাপিঠা না খাইয়ে ছাড়লো না। গ্রামের বাড়ি থেকে ফিরে আসতে আসতে জয়নাথের প্রায় সন্ধ্যে হয়ে এলো। আজ রাতে রমলার বাবার বাড়িতে সংক্রান্তির রাতের ভোজ। জয়নাথ দ্রুত পা চালালো।
প্রতিমাসেই গ্রামে আসতে হয় মার পেনশনের থেকে দুই হাজার টাকা নিতে। কি উপায় না নিয়ে। শহরে পৃথক সংসার, ফ্ল্যাট ভাড়াবাড়ী, ছেলের দামী স্কুলের মাসান্তে মোটা খরচ। বউ রমলা প্রাইভেট স্কুলে পড়িয়ে যা মাইনে পায়, তাতে কসমেটিকের খরচও উঠে কি না সন্দেহ। দ্রব্য মূল্যের এই আগুনছোঁয়া বাজারে বেতনের এই কয়টি টাকা আর কতদিনই বা চলে।
রমলা সেজেগুজে ছেলে টুটুলকে সাক্ষী রেখে জয়নাথের শাপান্ত করছিলো। শ্বশুরবাড়ী যখন পৌঁছালো, ইতিমধ্যে ভায়রা ভাইয়েরা এসে গেছে। আসর জমে উঠেছে। শাশুড়ির হাতে গনেশগুড়ি বাজার থেকে হাজার টাকার চিতল মাছ ও মিষ্টি-দইয়ের হাড়ি দিয়ে জয়নাথ বলল, ‘
মা, আজ আর না করবেন না, জামাই হিসাবে এতোটুকু আমার কর্তব্য।’