Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » শ্বেত পাথরের থালা || Bani Basu » Page 11

শ্বেত পাথরের থালা || Bani Basu

অষ্টমঙ্গলায় বাড়ি ফিরে কলি শুনল বউমণি কাকার কাছে গেছে। খোকা নেই, বউমণি নেই। বাড়িটা কিরকম খালি-খালি লাগছে। শ্রীহীন। এ ক’দিনের মধ্যেই শ্বশুরবাড়িতে বেশ মানিয়ে নিয়েছে কলি। খুব আমুদে বাড়ি। তাদের বাড়ির মতো গুমোরও নেই। গুমোটও নেই। চার ভাইয়ের পরিবার। সে বড় বউ। শাশুড়ি-শ্বশুর কেউ নেই। আছেন এক অবিবাহিত জাঠশ্বশুর। তিনি দিলদার লোক। ভাইপোদের সঙ্গে একত্রে বসে আড্ডা দ্যান। নিজেদের বাড়িতে মাথার ওপর সব সময়ে একটা চাপ টের পেতো। এটা বলতে নেই, সেটা করতে নেই। ওটা করতেই হবে। এ বাড়িতে ও সবের বালাই-ই নেই।

বিয়ের প্রথম তিনদিন কাটতেই জাঠশ্বশুর সবাইকে সামনে রেখে বললেন—‘দ্যাখো বাপু। আমরা পাঁচটি ছোকরা শাসনের অভাবে একেবারে বখে যাচ্ছি। দু-দিন পর আর কেউ আমাদের বাড়ি পদার্পণ করবে না। কাজে কাজেই আমাদের ইহকাল-পরকালের ভার নেবার জন্যে তোমাকে কষ্ট করে আনা। তুমি নতুন বউটি হয়ে থাকলে আমাদের একদম চলবে না।’

সবচেয়ে ছোট ছোকরাটি চোদ্দ বছরের, টেবিল চাপড়ে বলল—‘হিয়ার, হিয়ার। জেঠু আমরা কি বউদিকে শাসনকার্যে সহায়তা করতে পারি?’

—‘তুই আবার কি সহায়তা করবি রে ব্যাটা।’

—‘বউদি, সবচেয়ে বড় ছোকরাটি নানারকমের নেশা করেন, সিগারেট খান এনতার, সিগারেট লুকোলে সিগার, সিগার লুকোলে নস্যি, নস্যি লোপাট করে দিলে, দোকান থেকে জর্দা পান খেয়ে আসেন, এঁর কিঞ্চিৎ লাঠৌষধির দরকার হয়ে পড়েছে। দ্যাখো তুমি তোমার শাসনদণ্ড ব্যবহার করবে কি না!’

কলি ভীষণ অপ্রস্তুত। কিন্তু জেঠু একটুও টসকালেন না। বললেন—‘আরে বউমা, তোমাকে এখন অনেক কাজ করতে হবে। তুমিও মা একটা নেশা না হলে এতে পেরে উঠবে না, জর্দা পান ধরো, মুস্কিপাতি জর্দা। একটু একটু করে ডোজটা বাড়াবে।’ সবাই হই-হই করে উঠতে জেঠু হাসতে হাসতে চলে গেলেন, মুখ ফিরিয়ে বলে গেলেন—‘আর আমার পেছনে লাগবি তোরা? সর্ষেতে ভূত ধরিয়ে দোব।’ কলির বর সঞ্জয়ও খুব রসিক মানুষ। ফাজিলই বলা চলে। কাউকে দু-মিনিটগম্ভীর থাকতে দেয় না। বাসি-বিয়ের দিন কলি গম্ভীর হয়ে ছিল, মন খারাপ স্বভাবতই। সঞ্জয় তার পরের ভাইকে বললে বিজু, এই বিজু চট করে পান্তুয়া নিয়ে আয় তো ক’টা। ভাই সঙ্গে সঙ্গে আদেশ পালন করল। সঞ্জয় পান্তুয়াগুলো কলির মুখের পাশে ধরে, ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখে, আর মাথা নেড়ে ‘উঁহু’ বলে রেখে দেয়। ঘরশুদ্ধ লোক হাসছে। জিজ্ঞেস করছে, ‘কি হল?’ ‘কি দেখছিস রে সঞ্জয়?’ ‘কি করবি রে দাদা?’ সঞ্জয় বলল, ‘দেখছি কোনটা বেশি গোল, নতুন বউমার চোখ, না ভানু ঠাকুরের পান্তুয়া।’ কলি হেসে ফেলতেই তার মুখের মধ্যে একটা পান্তুয়া গুঁজে দেওয়া হল। পেছন থেকে কে একজন হাত দুটো ধরে রেখেছে। কলিকে পান্তুয়া গলাধঃকরণ করতেই হল। সঞ্জয় বলল, ‘দেয়ার য়ু আর। আমাদের বাড়িতে কাউকে মুখ গোমড়া করে থাকতে দেওয়া হয় না। মুখ গোমড়া করলেই পান্তুয়া খেতে হয়।’

এতো তাড়াতাড়ি, নতুন জামাইয়ের সঙ্গে আলাপ-সালাপ না করেই বউমণি কাকার কাছে চলে গেছে শুনে কলির একটু অভিমান হল। বাড়িতে আর সবাই তো বুড়োবুড়ি। মিলি, ছোড়দা আর বউমণি। মেজদা তো কর্মস্থল থেকে ছুটিই পেল না। বউমণির ঘরেই কলিদের থাকবার ব্যবস্থা হয়েছে। কলির মনে হল ঘরটা দরকার হবে বলেই কি বউমণি চলে গেল? কেন আর কি ঘর ছিল না? এতো বড় বাড়ি তাদের!

মিলিটাকে একা পাওয়াই যাচ্ছে না। জামাইবাবুর সঙ্গে আঠার মতো সেঁটে আছে। জামাইবাবুটিও তেমনি। কথায় কথায় ছ্যাবলামির ফোয়ারা। একবার সামনে দিয়ে যেতে-যেতে শুনতে পেল মিলিকে অফার দেওয়া হচ্ছে—‘আরে বাবা, আমার একলারই তো বিয়ে হয়ে গেছে? আমার তো আরও তিনটে ভাই রয়েছে। যাকে ইচ্ছে তুমি গলায় মালা দাও। ব্যাস দিদির কাছেও থাকতে পাবে, জামাইবাবু মানে সঞ্জয়দার কাছেও থাকতে পাবে।’

সঞ্জয়ের পরের ভাই বিজু এবার মিলির সঙ্গেই বি এস সি দিয়েছে। তার পরের জন সবে মেডিক্যাল কলেজে ঢুকেছে, ছোট জন তো ক্লাস নাইনে পড়ে। যদিও এঁচড়ে পক্ব।

মিলি বলছে— ‘ইঃ, আপনার সব তো-পুঁচকে পুঁচকে ভাই! তাদের বিয়ে করতে হবে আমায়? কেন, আমায় বিয়ে পাগলা ঠাউরেছেন না কি?’

—‘না, না, সে কথা না, আমাকে তোমার খুব পছন্দ হয়েছে কি না, তাই বলছিলুম। আমার প্রোটোটাইপ কিন্তু আর ভূভারতে খুঁজে পাবে না।’

কলি ঘরে ঢুকে বলল—‘এই মিলি। গাছে জল দিয়েছিস?’

—‘এমা একদম ভুলে গেছি।’ মিলি উঠে পড়ল। ছাদের গাছগুলো দুই বোনেরই সমান প্রিয়।

কলি বলল—‘দ্যাখ, মনে হচ্ছে কতদিন তোতে-আমাতে গাছে জল দিইনি। এ ক’দিন দিয়েছিলি তো?’

—‘হ্যাঁ’ মিলি বলল, ‘ওতে আমার ভুল হয় না। তোর ফুলশয্যের দিন তত্ত্ব সাজাতে সাজাতে হাত ভেরে গেছিল, তা-ও দিয়েছি ঠিক।’

কলি বলল—‘হ্যাঁ রে, আমাদের পড়ার ঘরটাতে কিম্বা ছোড়দা-মেজদার ঘরটাতে বুঝি থাকবার ব্যবস্থা করা যেত না!’

—‘কার থাকা?’

—‘এই আমাদের!’

—‘যাঃ। ও ঘরে আবার নতুন জামাইকে থাকতে দেওয়া যায় না কি? তক্তাপোশ গায়ে ফুটবে না?’

—‘তো তাই বুঝি বউমণি কাকার কাছে চলে গেল? বউমণি শেষ কবে বাপের বাড়ি গেছে ভুলেই গেছি। এমনি যাক, যাক। এই কারণে যেতে হলে আমার খুব খারাপ লাগবে।’

—‘তোকে বলেছে!’ মিলি ঠোঁট উল্টোল, ‘কে তোকে বললে নতুন জামাই থাকবে বলে বউমণি বাপের বাড়ি গেছে। তাই জন্যে না আরও কিছু! জ্যাঠামশাই তো বউমণিকে তাড়িয়ে দিয়েছে।’

—‘তাড়িয়ে দিয়েছে মানে?’ কলি ভীষণ অবাক হয়ে বলল।

—‘বউমণিকে, বউমণির কাকাকে। কাকা এসেছিলেন। রাত্তিরে খেতে বসে সেকি ঝগড়া! যদি শুনতিস। আমি শুয়ে পড়েছিলুম। উঠে বসে ঠকঠক করে কাঁপছি। বউমণির শরীর খারাপ হয়ে গেছে, ভালো করে খাওয়া-দাওয়া করে না এই নিয়ে কি বলেছিলেন, বাস আর যায় কোথায়!’

—‘বউমণির শরীর খারাপ হয়ে গেছে, খায় না এতো সত্যি কথা!’

—‘জানি না বাবা, সব খেপে লাল। জেঠিমা বললে অলক্ষণ, জ্যাঠামশাই বললে যত তাড়াতাড়ি যায় তত ভালো।’

—‘বলিস কি রে? কলির চোখ বড় বড় হয়ে উঠেছে, নিঃশ্বাস ঘন, ‘তুই কিছু বললি না?’

মিলি অবাক হয়ে তাকিয়ে বলল—‘আমি? আমি কি বলব?’

মাত্র সাতদিন বিয়ে হয়েই কলি যেন অনেক বড়, অনেক পরিণত, আত্মবিশ্বাসে ভরপুর হয়ে উঠেছে। বলল—‘তুই না হয় চিরকালের খুকুমণি। ছোড়দা? ছোড়দা কোথায় ছিল?’

—‘ছোড়দা? তবেই হয়েছে? আমি যদি খুকুমণি হই তবে ছোড়দাটা কি রে? নবজাত শিশু? গোলমাল শুনে নিজের ঘর থেকে বেরিয়ে এসে বলল—‘এই মিলি মিলি, এতো গোলমাল কিসের রে?’ আমি বললুম—‘কি জানি বউমণিকে নিয়ে কি সব হচ্ছে।’ ছোড়দাটা কি বলল জানিস? বলল —‘বুড়োগুলো জ্বালালে। আমি ছাদে যাচ্ছি। গোলমাল থেমে গেলে, কোস্ট ক্লিয়ার দেখলে সাইরেন বাজাবি, আমি নেমে আসব।’ পরদিন বউমণি যখন ন’টা নাগাদ চলে যাচ্ছে, তার আগেই ছোড়দা না-খেয়ে-টেয়ে অফিসে তাড়া আছে বলে পগার পার।’

—‘এ বাড়ির কেউ মানুষ হল না। বড়দাই একমাত্র ছিল, যাকে ভক্তি শ্রদ্ধা করা যায়।’

—‘আর সব মেনিমুখো, না রে?’ মিলি উৎসাহের সঙ্গে বলল।

কলির মনের মধ্যে ব্যথা আর রাগ প্রতিযোগিতা করে বাড়ছে। সে মিলির কথার জবাব দিল না। তরতর করে নেমে এল। মিলি ব্যস্ত হয়ে পেছন পেছন নামতে নামতে বলল—‘এই দিদি। কাউকে বলিসনি আমি বলেছি, প্লীজ, মা আমাকে মেরে ফেলবে।’

কলি একেবারেই দাঁড়াল না। নিচে নেমে এসে রান্নাঘরে মাকে পেয়ে গেল। জামাই খাবে, মা ঘি-ভাত চাপিয়েছে, ডেকচির ঢাকনির ওপর জ্বলন্ত কয়লা সাজাচ্ছে। কাকিমাকে দেখতে পাওয়া গেল না। কলি বিনা ভূমিকায় বলল—‘মা এসব কি শুনছি?’

—‘কি শুনছিস?’

—‘বউমণিকে নাকি তোমরা তাড়িয়ে দিয়েছ?’

—‘কে বললে?’ আঁচলের চাবির গোছা সশব্দে কাঁধে ফেলে ঘুরে দাঁড়ালেন কলির মা।

—‘যেই বলুক, কথাটা তো সত্যি!’

—‘আমরা তাড়িয়েছি। না সে নিজে তেজ করে গেছে! মটমটে তেজ! কোথায় ছিল অত তেজ। অত আদিখ্যেতার কাকা! মরণকালে তো একবার দেখতেও আসেনি। এল, চ্যাটাং চ্যাটাং বাক্যি শোনাল, বাস অমনি তিনি ধিন ধিন করে নেচে উঠলেন। ভাঙবে, ওই তেজ ভেঙে সে আবার ফিরে আসবে। দাদাভাইটার জন্যে আমার’… গলা ধরে এল শেষের দিকে।

কলি কঠোর গলায় বলল—‘মা সেজদাকে তোমরা তাড়িয়ে দিয়েছিলে সে কি ফিরেছে? বউমণিকেও তাড়ালে? সে-ও ফিরবে না। খোকাও ফিরবে না। তোমাদের এই মহাপবিত্র বাড়িতে শেষ পর্যন্ত তোমরা চার বুড়োবুড়ি ছাড়া কেউই থাকবে না। খোকামণিকে তোমরা ফিরিয়ে আনার চেষ্টাও করো না। এই আবহাওয়ায় সে মরে যাবে।’

কলির মায়ের কানে তার র্ভৎসনার প্রথম অংশটা লেগে ছিল।

তিনি বললেন—‘সেজদার কথা উঠল কিসে?’

—‘কিসে আর? নিজের ছেলেকে তাড়াচ্ছ, বউকে তাড়াচ্ছ, যে তোমাদের তালে তাল মেলাতে একটু এদিক ওদিক করছে তাকেই তাড়াচ্ছ!’

—‘তালে তাল মেলালে ক্ষেতিটা কি শুনি? আমরা তো বয়সেও বড়, দেখলুম না জীবনে কম। আমাদের কথা শুনলে মন্দটা কি হয়? তোর কিছু মন্দ হয়েছে?’

—‘হয়নি। হতে কতক্ষণ! সংস্কারই যদি মানো তো এটুকু তো মানবে আমার বিয়ের সাতদিনের মধ্যে বাড়ির বউ, একমাত্র বাচ্চা এ বাড়ি থেকে বিদায় নিতে বাধ্য হয়েছে! এতে আমার ভালো হবে মনে করো?’

কাকিমা এসে দাঁড়িয়েছেন। সংসারের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কলি তার মায়ের সঙ্গে রাগারাগি করছে। এটা সম্পূর্ণ নতুন। কিন্তু যতটা নতুন, কাকিমার চোখে ততটা লাগল না। মাথায় একমাথা সিঁদুর পরে, হাতে শাঁখা, সোনাবাঁধানো লোহা, একগা গয়না, কলি যেন ক’দিনেই অনেক বড় হয়ে গেছে। অনেক অধিকার অর্জন করে ফেলেছে। কাকিমা আস্তে আস্তে বললেন—‘কথাটা কিন্তু কলি ঠিকই বলেছে দিদি।’

কলির মা বললেন—‘সে যদি তেজ করে চলে যায়, তার কাকার উশকুনিতে তো আমি কি করব?’

—‘সে তো তেজ করে যায়নি দিদি। তা যদি বলো, তেজ সে বেচারী কোনদিনই দেখায়নি। বটঠাকুর এমন করে বললেন যে তারপর আর বেয়াইয়ের ওকে এখানে রাখা চলে না, মানুষের একটা মান-অপমানও তো আছে। আর যাই বলো দিদি! বউটা কি রোগা হয়ে গেছে! বাড়ি থেকে এক কাপড়ে বেরিয়ে গেল। আমার ভালো লাগেনিকো।’

কাকিমা চোখে আঁচল দিলেন।

কলির মা বললেন—‘কর্তার যা গোঁ! কথায় কথায় মানের কণা খসে যায়। যত গালাগাল তো উনিই করলেন। ছি, ছি, একশ-বার ছি!’

কলি বলল—‘বুঝছো যদি তো বউমণিকে ফিরিয়ে আনবার ব্যবস্থা করো মা। তোমরা নিজেরা যাও। গিয়ে বলো।’

—‘ওরে বাবা। সে কথা কর্তাকে কে বলবে? হুলো বেড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধা! সে আমার দ্বারা হবে না।’

কলি বলল—‘ঠিক আছে। তোমরা না বলো তো আমি বলব। ইয়ার্কি নাকি? বাবা কি চিরকাল যা ইচ্ছে তাই করবেন না কি? বউমণির এটা নিজের বাড়ি না? কাকিমা তুমিই বা কি? কাকাও তো ছিলেন? কেউ একটা কথা বলতে পারলে না?’

কাকিমা বললেন—‘চিরকাল চোখ নিচু করে, মুখ নিচু করে থেকেছি মা। বটঠাকুরকে দেব্‌তার মতো মান্যি করেছি, দিদিকেও। দিদি সে কথা জানে। মুখের ওপর কথা বলবার অভ্যাস নেই মা, থাকলে কি আর এতো বড় অন্যায়টা চোখের ওপর দিয়ে হতে পারত!’

শ্বশুরবাড়ি ফিরে যাবার আগের মুহূর্তে বাবার সঙ্গে কলির তীব্র বচসা হয়ে গেল। কলি শুধু বউমণিকে ফিরিয়ে আনবার কথাই বলেনি। সেজদাদের খোঁজখবর করার কথাও বলেছিল। বিবাহিত না হলে বাবা বোধহয় তাকে তুলে আছাড় দিতেন। ধমক দিলেন প্রচণ্ড। কলি বলল—‘আমি উচিত কথা বলবোই। তোমার নিজের যাওয়া উচিত বউমণিকে ফিরিয়ে আনতে।’

উচিত কথা মেয়ে তাঁকে শেখাচ্ছে বলে কাশীনাথবাবু এমন চিৎকার করলেন যে নতুন জামাই ছুটে এল। বাড়ি ফিরতে ফিরতে বলল—‘বাপরে এমন জাঁদরেল বাড়ির জাঁহাবেজে মেয়েকে বিয়ে করেছি আগে বুঝতে পারিনি তো!’

কলির চোখমুখ থমথম করছিল, বলল—‘আস্তে আস্তে বুঝবে।’

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress