Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » শ্বাশুড়ির মতো || Dona Sarkar

শ্বাশুড়ির মতো || Dona Sarkar

সালটা ২০১৭, ছেলের দু বছর বয়স। স্কুলে দেব। পার্মানেন্ট এড্রেস দরকার, মাথায় চাপলো বাড়ি কিনবো। শ্বশুর মশাই তো বেঁকে বসলেন। বললেন আমার এত বড় বাড়ি, আমার একমাত্র উত্তরসূরি, সে ভোগ করবে। এখানে বলে রাখি, আমার শ্বশুর মশাইকে আমার কাকা, পিসিরা বলে দিয়েছিলেন, আপনার ছেলের বউ আপনাকে যথেষ্ট সেবা করবে, আপনি যখন কোলকাতায় আসবেন, ওরা সময় পেলে দিনহাটা যাবে, কিন্তু আমাদের মেয়ে বরাবরের জন্য দিনহাটায় থাকতে পারবেনা। ওর বাবা মেয়েকে দেখতে না পেলে কাঁদতে কাঁদতে অন্ধ হয়ে যাবে। তাছাড়া আপনার ছেলের চাকরিও তো কোলকাতাতেই। শ্বশুর মশাই তা মেনে নিয়েছিলেন। কিন্তু আলাদা ঠিকানা করার ব্যাপারে তীব্র আপত্তি জানালেন। আমিও নাছোড়বান্দা। প্রথমবার ওনার অবাধ্য হয়ে বিপরীত সিদ্ধান্ত নিলাম। ফ্ল্যাট কিনবো মনস্থ হল। বারাসাত, মধ্যমগ্রাম, সোদপুর অঞ্চলে খোঁজ চলছিল। এবার পিতৃদেব বেঁকে বসলেন। ফ্ল্যাটে তীব্র আপত্তি। সত্যি কথা বলতে বাবা কাছছাড়া করতে চাইছিলেন না বুঝতে পারছিলাম।এক এক করে কেমন বাঁধা পাচ্ছিলাম। জেদ তখন মাথায় নৃত্য করছে। দালাল লাগালাম। কাউকেই না জানিয়ে বাড়ি কিনবো মনস্থ করার মাত্র আঠাশ দিনের মধ্যে বাড়ি কিনলাম। পরে অবশ্য বাবা খুশি হয়েছিলেন। তার আগে ছেলের হাতেখড়ি দেবার জন্য আসামের টিকিট কাটা হয়ে গিয়েছিল। ছেলে ও দলিল নিয়ে ছুটলাম শ্বশুরবাড়ি। শ্বশুরের হাতে দিলাম দলিল, সম্পূর্ণটা পড়লেন। সেদিন কিন্তু উনি খুশী হয়েছিলেন। বললেন জমিতে বিনিয়োগ কোনো দিন ব্যর্থ হয়না।

যেটা বলার জন্য এত ভনিতা সেটা বলি এইবার। সদ্য বাড়ি কিনেছি। আশপাশের সবাইকে দেখে দুপাটি দন্ত বিকশিত করতে হচ্ছে, যেটা আমার চরিত্র বিরোধী। পছন্দের মানুষ ছাড়া হাসিটা ভীষণ বিরক্তিকর। আমার এক প্রতিবেশী বয়স্কা মহিলা বেশ নজরে রাখত। দু একদিন ঘরেও এসেছিল। একবার বসে পড়লে, আর ওঠে না। পড়লাম ফ্যাঁসাদে। পতিদেব অফিস থেকে চলে আসেন, তবু বাড়ি ছাড়েনা। মা কে ফোন করে বিরক্তি জানাচ্ছি, মা বলছে, মুখের উপর বলতে শেখ। ভাবলাম আর একটু দেখি। একদিন আমাকে বলছে, শোনো, আমি তোমার শ্বাশুড়ির মতো। খুব রাগ হলো, তবু কিছু না বলে চলে এলাম। আর একদিন ছেলেকে স্নান করাচ্ছি, সামনে হাজির, ছেলের কোনো কাজের সময় বাইরের লোক এলে খুব বিরক্তি লাগে। সেই ভাঙা ক্যাসেট, আমি তোমার শ্বাশুড়ির মতো। মাথায় আগুন ধরে গেল কথাটা শুনে। এবার বললাম, কাকিমা আমার বিয়ের দুবছর আগে আমার শ্বাশুড়ি গত হয়েছেন। তবু উনি ওনার কর্তব্য করে গেছেন। আমার শ্বশুর আমার বিয়েতে শ্বাশুড়ির নাম করে কমপক্ষে দশ ভরির গয়না দিয়েছেন, তা আপনাকে আমার শ্বাশুড়ি ভাবতে তখনই পারবো, যতক্ষণ না ভরি পাঁচেক গয়না দিচ্ছেন। সেই থেকে আজ অবধি ঐ মহিলা আর আমাকে বলেন না, আমি তোমার শ্বাশুড়ির মতো…..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress