Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।

শোধ

হাওড়া স্টেশনে পৌঁছে সুমন্ত দেখল ট্রেনের সিগন্যাল হয়ে গেছে ।তড়িঘড়ি উঠে পড়ল সামনের কামরায়।ভিড় থাকলেও গাড়ীতে উঠে স্বস্তি পেল ।
কয়েকটা স্টেশন পার হলে বসার জায়গা পেল। সারাদিনের ক্লান্তির পর চোখ দুটো আপনা থেকেই কখন বন্ধ হয়ে গেছে ! জানালা দিয়ে আসা হাওয়ায় ঘুম আসতেও দেরী হলো না সুমন্তর।……

একটা অস্বস্তিকর আবছা অনুভূতি , কেউ গায়ে হাত দিচ্ছে । ভীষণ অস্বস্তি হতে লাগল, একী কান্ড!দেখে কামরাটা প্রায় খালি। লহরী, ঝুমরী, পিয়াসী ,সুশীলা আর মানসী এরা কয়েকজন ছাড়া কেউ নেই। এদের প্রত্যেককে সে চেনে। একটা অস্পষ্ট ছবি মনে ভেসে ওঠায় শিউরে ওঠে সে। ঘুম ভেঙেছে দেখে উচ্ছাস উথলে ওঠে ওদের।
“ছাড় ,ছাড়!”নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে চায় সুমন্ত ।
সুশীলা এবার আরো ঘনিষ্ঠ হয়ে সুমন্তর গালে, মুখে ,ঠোঁটে, ঠোঁট রেখেছে,দুই হাত দিয়ে জাপটে ধরে আছে। অদ্ভূত বিশ্রী আনন্দে মেতেছে সুশীলা।
বাকীরা ওদের ঘিরে কুৎসিত অঙ্গভঙ্গি করে নাচ শুরু করে দিয়েছে ততক্ষণে ।
চেষ্টা করেও ওদের কবল থেকে মুক্ত হতে পারে না ।
ঘেন্নায় গা গুলিয়ে উঠলো । গালে, ঘাড়ের উপরটা সুশীলার লালায় ভিজে রয়েছে। উৎকট একটা গন্ধ! ছি ছি এ কী কান্ড! লজ্জায় ঘেন্নায়, অপমানে মরে যেতে ইচ্ছে করছে তার!
শেষ পর্যন্ত কি না…….
এরা মাঝে মাঝেই বৌদিদের বাচ্চা হলে সুমন্তদের বাড়িতে যেত পাব্বণী নিতে, দুহাজার টাকার কমে নড়তো না। শেষবার সুমন্ত আপত্তি করায় টাকা না নিয়েই চলে যায়। যাবার সময় সুমন্তর দিকে ঠোঁট মুচড়ে কোমর দুলিয়ে কুৎসিত অঙ্গভঙ্গি করে গজগজ করতে করতে চলে গেছিল সেদিন।

এই মুহূর্তে বড়ো বিশ্রী লাগছে ,রঙ চঙে মুখ, ঠোঁটে সস্তা দামের চড়া লিপস্টিক, বেঢপ গয়না পরে হাতে তালি দিয়ে নেচেই যাচ্ছে ওরা।
“ছাড়বো না তোদের কাউকেই ছাড়বো না আমি !” বিড়বিড় করতে থাকে সুমন্ত।
“তোকে ছাড়ি আগে, তবে তো! “হিসহিসে গলায় বলে ওঠে সুশীলা ।
ট্রেন থামার কোন সম্ভাবনাই নাই । পারছে না সুমন্ত, আর সহ্য করতে পারছে না যে! বর্ধমান আসতে এত দেরী কেন হচ্ছে!
লহরীও ততক্ষণে সুমন্তর কাছে। অশ্রাব্য ভাষায় গাল দিতে দিতে জাপটে ধরে পকেট থেকে মানিব্যাগ নিয়েছে কেড়ে। সারা মুখে থুতু ছিটিয়ে সুমন্তকে ওরা ছেড়ে দিতেই সুমন্ত দিশাহারা হয়ে ট্রেনের দরজার কাছে গিয়ে একেবারে লাফ দিয়ে পড়লো বাইরে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *