Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » শৈশবে একা ঘরে || Roma Gupta

শৈশবে একা ঘরে || Roma Gupta

অহনার আজকে অফিস থেকে ফিরতে দেরি হচ্ছে। ঘরে ন’বছরের মেয়ে রিম্পা একা। দেখাশোনা করবার আয়া আট’টায় চলে যায়। ততক্ষণে অহনা বাড়ি ফিরে আসে। স্বামী কুনাল কর্মসূত্রে পুনেতে থাকে।

আজ কালবৈশাখী তান্ডবে ট্রেন পানাগড়ের একটু আগে দাঁড়িয়ে যায়, ওভারহেড তার ছিঁড়েছে। ফোনে মেয়েকে বললো ঝড়ের জন্য ট্রেন আটকে গেছে আমি ফিরছি, চিন্তা করোনা।ভয় লাগলে দুলালীদি’কে ডেকে নিও। মেয়ের কাছে শুনলো, সেখানেও ঝড়ে লোডশেডিং।

তার মনে পড়ে যায় নিজের শৈশবের কথা। ছোটোবেলায় বাবাকে হারিয়েছে। মা একবার অফিসের মিটিংয়ে কোলকাতায় গিয়েছিলেন। সেদিনও এরকম ঝড়বৃষ্টিতে রাতে ফিরতে পারেননি মা অনিতাদেবী। অহনা লোডশেডিংয়ে ঘরে লন্ঠন জ্বালিয়ে ভয়ে ভয়ে রাত জেগে কাটিয়েছিল। ভোরে অনিতাদেবী ঘরে এলে অহনা মা’কে জড়িয়ে ধরে খুব কেঁদে বলেছিলো , আর কোনোদিনও আমাকে এভাবে একা রেখে যাবেনা, আমি তাহলে ভয়ে মরেই যাবো। অনিতাদেবীও মেনে নিয়েছিলেন।

অহনার শৈশবের সেই ঘটনা মনে পড়ায় মুহূর্ত দেরি না করে ট্যাক্সি ভাড়া করে ফিরতে থাকে। ফোন করে মেয়ের খবর নেয়। পাড়ার দুলালী আসেনি শুনে আরও চিন্তিত হয়।

বাড়িতে যখন পৌঁছালো তখন দেড়টা বাজে। পাড়া শুনশান, নিস্তব্ধ। ট্যাক্সি বাড়ির সামনে থামতেই রুম্পা চেঁচিয়ে বলে, মা তুমি এসে গেছো? অহনা উওর দেয়, হ্যাঁ সোনা।

অহনা ঘরে ঢুকলে রুম্পা মা’কে জড়িয়ে ধরে কাঁদে। অহনা চুমু খেয়ে আদর দেয়। রুম্পা বলে, আয়ামাসি চলে যাওয়ার পর খুব ভয় করছিল। জানো তোমাকে বলিনি, পাশের কমলদাদু মারা গিয়েছে। কিছুক্ষণ হয় দাহ করতে নিয়ে গেছে। আমার শুধু দাদুর মুখটা মনে পড়ছিল। ভয়ে গায় কাঁটা দিচ্ছিল। তুমি আর অমন দেরি করোনা মা, তাহলে আমি ভয়ে মরেই যাবো। অহনার বুকটা ছ্যাৎ করে উঠে। রুম্পাও তো তার শৈশবের মত একই কথা বলছে! কথা দিলো আর দেরি করবেনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *