এখনও জ্বর এলে আদুরে বালিকার মত
তোমার সামনে এসে বসি।
অপেক্ষায় নত হয়ে আসে চোখ,
তুমি হাত উল্টে কপালে হাত রাখবে —
‘এবেলা আর উল্টোপাল্টা খাসনা খুকি ‘
তোমার গলায় শাসনের সুর না থাকলেও,
আমি তখন একান্ত অনুগত বাধ্য বালিকা।
ওবাড়ির মাছের বাটি উল্টে দিয়ে মেনিটা
বেঁড়া টপকে দৌড়ে এসে গা ঘেঁষে বসলো ।
আমাকে অবিশ্বাস করার সাধ্য মেনিটার —
আছে নাকি?
দুটো সতেজ ফুল, অতি সাবধান।
আমি ছোঁয়াছুঁয়ির বাতিকগ্রস্ত,
কৌটো খুলে দুটো নকুলদানা।
ভাগ্যিস তোমার ক্ষুধাতুর জিহ্বা থেকে
খিদের লালা ঝরতে দেখিনি!
কি অসীম সহ্য ক্ষমতা তোমার –
ক্ষুধার্ত পিপাসার্ত তুমি একটিবারও মুখ খোলোনি!
ভাগ্যিস, নাহলে আমার পকেট শূণ্য
দুটো আধুলিতেও অবিশ্বাস!
আসল নকল, এপিট ওপিঠ ঘঁষি ।
ভিখিরি হয়ে আমি রোজ চলি
একই রাস্তা, একই গন্তব্য।
সুস্বাদু খাবারে জিভ ঝোলে —
রোদে পোড়া খাদ্যান্বেষী কুকুরের মত!
তুমি দেবতা হয়ে সামনে দাঁড়াও।
দেবতাকে মা চিনিয়েছে, আঙুল তুলে,
শিশুশিক্ষার বইয়ে জোর করে
আমার তর্জনী টিপে ধরতো।
একটা একটা করে অক্ষর চিনেছি
কখনো ধারন করিনি!
সেদিন থেকে আজও, তুমি অভূক্তই রয়ে গেছ।
ভিখিরির কি দায় আছে বল —
ভালো রাখার, ভালো থাকার তদারকিতে ?
ভালো আছি, ভালো থেকো —
এমন হৃদয় বিজারিত খোসগল্প…
ভদ্রতা সম্ভাষণ শুভকামনা…
পিচঢালা রাস্তায় ভিখিরির মুখে
শুনেছ কখনো?
ভাগ্যিস, তোমার হাতে বাটি নেই!
আমি একটা আধুলি ছুঁড়ে দেবতা হয়ে যেতাম,
তুমি হতে রাস্তার ভিখিরি।