শক্তির উৎস নারী
আদি কাল থেকে বর্তমানকাল পর্যন্ত লক্ষ্য করলে দেখা যাবে নারীরা ইতিহাস থেকে শুরু করে সকল রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নিজেদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণভাবে পালন করে এসেছে।
অবমাননা ও অত্যাচারে অভ্যস্ত নারী প্রতিনিয়ত লাঞ্ছিত হলেও,একথা অনস্বীকার্য যে নারী শক্তি ছাড়া পৃথিবীতে উন্নতি সম্ভব হত না,ভবিষ্যতেও হবে না।
ঘরে -বাইরে সব জায়গায় একা-হাতেই নারী সুষ্ঠুভাবে সামলাতে পারে কারও সাহায্য না নিয়েই। আধুনিক সমাজে নারী আজ আর পিছিয়ে নেই। কথায় আছে, ‘যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে’। শিক্ষা, কর্তৃত্বে ,গুণে, মানে সব ক্ষেত্রেই পুরুষের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলেছে। নারীরা আজ প্রমাণ করে দিয়েছে যে তারাও কোনো অংশে কম নয়। তাই সর্বযুগে সর্বকালে মানুষের মনে নারীশক্তি মর্যাদা লাভ করেছে।
নারী হল প্রকৃত শক্তি, সে সব উপমার ঊর্ধ্বে । রূপের ছটায় মোহিত করার ক্ষমতা যেমন রাখে তেমনই গুণের সম্ভারে নারী সকলকে মুগ্ধ করে তোলে। কর্মসূত্রে তারা বিদেশেও পাড়ি দেয় আবার সন্তানের অসুস্থতায় সারা রাত ধরে জেগে পাখার বাতাস ও করতে পারে। দেশের নেতৃত্ব একাহাতে সামলাতেও নারী সুদক্ষ । একই অঙ্গে এত রূপ কেবলমাত্র নারীদের মধ্যেই দেখা যায়। আধুনিক যুগে নারীশক্তির ব্যাপ্তি সর্বত্র।
ইতিমধ্যে নারীরা নিজেদের কর্মের মাধ্যমে প্রমাণ করে দিয়েছে যে তারা সব ক্ষেত্রেই সমানভাবে পারদর্শী । তাই এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজে ও আজ নারীশক্তির জয়জয়কার । প্রকৃত অর্থে এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজে পুরুষদের সাথে সাথে তারাও সমান অধিকার ও সম্মানের দাবিদার।
একজন নারীর বুদ্ধিমত্তা, সাহস, ব্যক্তিত্ব, অহংকার এবং প্রত্যুত্পন্নমতিত্ব কোনো অংশেই পুরুষের থেকে কম নয় তা বর্তমান যুগের আধুনিক প্রেক্ষাপটে প্রমাণিত সত্য।
অমিত সম্ভাবনার অধিকারী নারী হল শক্তির প্রকৃত আধার, নারীদের শক্তি বিহীন পৃথিবী সামনের দিকে অগ্রসর হতে পারে না।
নারী বিহীন পুরুষের একক প্রচেষ্টার মাধ্যমে সমাজের উন্নয়নের কথা কল্পনা করা বৃথা। স্ব-নির্ভরশীলতাকে বাস্তব আকার প্রদান করার মধ্যেই লুকিয়ে আছে সমাজ ও রাষ্ট্র নির্বিশেষে সারা বিশ্বে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার অঙ্গীকার ।
নারীশক্তি বা নারীর ক্ষমতা ব্যাপক অর্থে একজন নারীর স্বকীয়তা, নিজস্বতা এবং সর্বোপরি স্বয়ংসম্পূর্ণতার বিকাশকে চিহ্নিত করে। নারী হল সমাজের অর্ধেক অংশ। একজন স্ত্রী, বোন, কন্যাসহ মর্যাদাপূর্ণ সব সম্পর্কের বন্ধনে নারীজাতি সমাজের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।
তাদের নিয়ে নজরুল ইসলাম লিখেছেন –
“বিশ্বে যা-কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর,
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।
বিশ্বে যা-কিছু এল পাপ-তাপ বেদনা অশ্রুবারি,
অর্ধেক তার আনিয়াছে নর, অর্ধেক তার নারী।
যত কথা হইল কবিতা, শব্দ হইল গান।
নর দিল ক্ষুধা, নারী দিল সুধা..”
তাদের নিয়ে কবি শুভ দাশগুপ্তর লিখেছেন –
“সংসারে অসময়ের আমিই ভরসা।
আমার ছাত্র পড়ানো টাকায় মায়ের ওষুধ কেনা হয়।
আমার বাড়তি রোজগারে ভাইয়ের বই কেনা হয়।
আমার সমস্ত শরীর প্রবল বৃষ্টিতে ভিজতে থাকে।
কালো আকাশ মাথায় নিয়ে
আমি ছাতা হয়ে থাকি।
ছাতার নিচে সুখে বাঁচে সংসার।”
“হয়ত একদিন- হয়ত অন্য কোন এক দিন
আমার সমস্ত মিথ্যে পোশাক ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে
আমিই হয়ে উঠবো সেই অসামান্যা !
খোলা চুল মেঘের মত ঢাকবে আমার খোলা পিঠ।
দু চোখে জ্বলবে ভীষণ আগুন।
কপাল-ঠিকরে বেরুবে ভয়ঙ্কর তেজরশ্মি।
হাতে ঝলসে উঠবে সেই খড়গ।
দুপায়ের নুপুরে বেজে উঠবে রণদুন্দভি।
নৃশংস অট্টহাসিতে ভরে উঠবে আকাশ।
দেবতারাও আতঙ্কে স্তব্ধ হয়ে বলতে থাকবেন
মহামেঘপ্রভাং ঘোরাং মুক্তকেশীং চতুর্ভুজাং
কালিকাং দক্ষিণাং মুণ্ডমালা বিভুষিতাং।”
“তোমাকে বলেছে –আস্তে,
বলেছে –ধীরে.
বলেছে –কথা না,
বলেছে –চুপ।
বলেছে– বসে থাকো,
বলেছে– মাথা নোয়াও,
বলেছে — কাঁদো।
তুমি কি করবে জানো?
তুমি এখন উঠে দাঁড়াবে
পিঠটা টান টান করে, মাথাটা উঁচু করে দাঁড়াবে,
তুমি কথা বলবে, অনর্গল বলবে, যা ইচ্ছে তাই বলবে,
জোরে বলবে,
চিৎকার করে বলবে,
এমন চিৎকার করবে যেন ওরা দুহাতে ওদের কান চেপে রাখে।
ওরা তোমাকে বলবে, ছি ছি! বেহায়া বেশরম
শুনে তুমি হাসবে।
ওরা তোমাকে বলবে, তোর চরিত্রের ঠিক নেই,
শুনে তুমি জোরে হাসবে
বলবে তুই নষ্ট ভ্রষ্ট
তুমি আরও জোরে হাসবে
হাসি শুনে ওরা চেঁচিয়ে বলবে, তুই একটা বেশ্যা
তুমি কোমরে দুহাত রেখে পা ফাঁক করে দাঁড়িয়ে বলবে, হ্যাঁ আমি বেশ্যা।
ওদের পিলে চমকে উঠবে। ওরা বিস্ফারিত চোখে তোমাকে দেখবে। ওরা পলকহীন তোমাকে
দেখবে। তুমি আরও কিছু বলো কি না শোনার জন্য কান পেতে থাকবে।
ওদের মধ্যে যারা পুরুষ তাদের বুক দুরু দুরু কাঁপবে,
ওদের মধ্যে যারা নারী তারা সবাই তোমার মত বেশ্যা হওয়ার স্বপ্ন দেখবে।”
জগতের যত বড় বড় জয় বড় বড় অভিযান,
মাতা ভগ্নী ও বধূদের ত্যাগে হইয়াছে মহীয়ান্।
কোন্ রণে কত খুন দিল নর লেখা আছে ইতিহাসে,
কত নারী দিল সিঁথির সিঁদুর, লেখা নাই তার পাশে।
কত মাতা দিল হৃদয় উপড়ি’ কত বোন দিল সেবা,
বীরের স্মৃতি-স্তম্ভের গায়ে লিখিয়া রেখেছে কেবা?
কোনো কালে একা হয়নি ক’ জয়ী পুরুষের তরবারী,
প্রেরণা দিয়াছে, শক্তি দিয়াছে বিজয় লক্ষ্মী নারী।
রাজা করিতেছে রাজ্য-শাসন, রাজারে শাসিছে রাণী,
রাণীর দরদে ধুইয়া গিয়াছে রাজ্যের যত গ্লানি।
“তুমি প্রজাপতি হংসমালা
তুমি আত্মা তুমি স্বত্বা তুমি প্রভু প্রেমিকা
তুমি দেবদুত তুমি রাধা তুমি সতী শ্বেতশুভ্রা
তুমি কাংগাল তুমি পুত তুমি পবিত্র আজলা
তুমি প্রেত তুমি নগ্ন তুমি রাক্ষসী তুমি যৌবনজালা
তুমি রুপ তুমি সৃজন তুমি ঝলক তুমি আশ্রিতা
তুমি বিমুর্ত তুমি কল্পনায় কল্পিতা,
তুমি রানী তুমি সম্রাজ্ঞী তুমি মাতা তুমি জননী জ়ায়া
তুমি সারথী তুমি পুজারী তুমি ভোগ তুমি ত্যাগ তুমি মায়া ।
তুমি রাখী তুমি মিলন তুমি প্রেমরতিকা
তুমি বোধ তুমি অবোধ তুমি মাস্তুল তুমি বর্তিকা,নারী তুমি শক্তি তুমি প্রজ্ঞা তুমি উৎকর্ষতা
তুমি ফল্গু তুমি চাষভূমি তুমি উর্বর তুমি রুক্ষ অনুর্বর মরুতা,
তুমি পণ্য তুমি বর্ণ তুমি যবনিকা
তুমি আদিম তুমি সনাতন তুমি মাতৃকা ।
তুমি ঘৃনার তুমি নিঃগৃহের তুমি আস্ফালন তুমি আকাশ নীল
তুমি শীতল তুমি ফানুস তুমি উচ্ছ্বাসের ঢেউ ফেনিল
তুমি ভুমিষ্ট তুমি জরায়ু তুমি প্রসব তুমি জোয়ার তুমি বান
তুমি তীব্রতা তুমি পতিত তুমি ভাগার তুমি নীরব শ্মশান ।”
আরেক কবি লিখেছেন –
“তুমি নিজেই জানো না
কতটা ক্ষমতা লুকিয়ে আছে তোমার অন্তরালে,
জগৎকে করে আলোকিত
নিজের মহিমায় সকলকে করেছ তুমি ধন্য ,
নিজেকে করোনি কখনো প্রকাশ ,
থেকে গেছো চিরকাল আড়ালে,
তোমার গুরুত্ব কখনো হবে না কম।
নারী, তুমি অপরাজেয় কালে কালে।
সংসারে অসময়ের আমিই ভরসা।
আমার ছাত্র পড়ানো টাকায় মায়ের ওষুধ কেনা হয়।
আমার বাড়তি রোজগারে ভাইয়ের বই কেনা হয়।
আমার সমস্ত শরীর প্রবল বৃষ্টিতে ভিজতে থাকে।
কালো আকাশ মাথায় নিয়ে
আমি ছাতা হয়ে থাকি।
ছাতার নিচে সুখে বাঁচে সংসার।”
আরেক কবি বলেছেন –
“হয়ত একদিন- হয়ত অন্য কোন এক দিন
আমার সমস্ত মিথ্যে পোশাক ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে
আমিই হয়ে উঠবো সেই অসামান্যা !
খোলা চুল মেঘের মত ঢাকবে আমার খোলা পিঠ।ম
দু চোখে জ্বলবে ভীষণ আগুন।
কপাল-ঠিকরে বেরুবে ভয়ঙ্কর তেজরশ্মি।
হাতে ঝলসে উঠবে সেই খড়গ।
দুপায়ের নুপুরে বেজে উঠবে রণদুন্দভি।
নৃশংস অট্টহাসিতে ভরে উঠবে আকাশ।”
নারী সম্পর্কে বিখ্যাত ব্যক্তিদের কিছু উদ্ধৃতি –
———————————————————-
১. “ স্ত্রীদিগের উপর যেমন কঠিন ব্যবস্থা , পুরুষের উপর আলোচনার কিছু নেই। কথায় কিছু হয় না, ভ্রষ্ট পুরুষের কোন সামাজিক দণ্ড নেই। একজন স্ত্রী সতীত্ব সম্বন্ধে কোন পরিচয় করিলে সে আর মুখ দেখাতে পারে না। “
– বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
২. ” নারীর হৃদয় এমন একটা জায়গা , যেখানে আমি একজন নারীকে হারিয়ে ফেলেছি৷ “
– রেদোয়ান মাসুদ
৩. ” আমার মনের সবচেয়ে মজার জায়গা। এই মন অনেক কঠিন সহজে জানাতে, অনেক সহজে বিষয় নিয়ে আসতে পারে না। “
– হুমায়ুন আহমেদ
৪. ” নিজের অধিকারের অধিকারী হওয়া উল্টো ঝোঁক হলে মেয়েরা নিশ্চয় বুত যে মহিলার জন্য আছে তার বিরুদ্ধে , সবচেয়ে বড় হল – সুন্দরী মেনে নেওয়ার জন্য । “
– তসলিমা নাসরিন
৫. নারীর কাছ থেকে পুরুষের মত কাজ করার আশা তাকে অবশ্যই শিক্ষা দিতে হবে। “
– পলিটো
৬. ” বিশ্বে – কিছু মহান স্থায়ী – কল্যাণ যাকর অর্ধেক তার নারী , অর্ধ তার নর । বিশ্বে যা – কিছু এল পাপ -তাপ বেদনা আর অশ্রুবারি অর্ধেক তার নর, অর্ধেক তার নারী। “
– কাজী নজরুল ইসলাম
৭. ” সব বড় মানবাইন চানর জন্য কোন অসাধারণ নারীর আবেগ এবং আবেগের কথা বলেছেন” “
– ও হেনরি
হরণ নাও : জীবন পরিবর্তনকারী ৩০টি বাংলা উক্তি
৮. ” নারী হচ্ছে টি – ব্যাগের মত। গরম জলে সে কত আগে তুমি আলোচনা করতে পারবে না। “
– এলিয়ানর রুজভেল্ট
৯. ” তোমরা আমাকে শিগগিরই জাতি দেব৷ “
– নেপোলিয়ানা বোপার্ট
১০. কোন কালে একা হয়েছে ক’ জয়ী পুরুষের তরবারি , প্রেরণা দিয়াছে , শক্তি দিয়াছে বিজয় -লক্মী নারী । “
– কাজী নজরুল ইসলাম
১১। অনেক কষ্ট, যন্ত্রণাও মেয়েরা মায়ারটানে একটা ভালোবাসা, একটা সম্পর্ক, একটা পৃথিবী টিকিয়ে পেতে চায় । এই জন্য মেয়েরা মায়াবতী আর মায়াবতীর কোন পুরুষবাচক শব্দ নেই। “
– হুমায়ন আহমেদ
১২. ” মাতৃত্ব শুধু শক্তি যোগায় না, এটা মনে শান্তিও দেয়। তুমি নারী বলে এটা কখনই বলে না। “
– ম্যারি কম
১৩। “ আমাদের সমাজে মহিলারাই মহিলার মা। তাই তাদের উন্নতির দিকে নজর দেওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। “
– মরিয়ম মাকেবা
১৪. “প্রতিটি মেয়ে তার স্বামীর কাছে রাণী হতে পারে না। কিন্তু প্রতিটা মেয়েই তার বাবার কাছে রাজকন্যা থাকে। -হুমায়ূন আহমেদ
১৫। “মেয়েদের চরিত্রের মাধুর্য পাওয়া যায় কুমারী। – প্রবোধকুমার সাধনাল
১৬। “নারী প্রেমের জন্য, জানার জন্য নয়।” -অস্কার ওয়াইল্ড
১৭। “যে সমাজে শিগগির, স্বনির্ভর, স্বাধীন মেয়ের সংখ্যা বেশি, সেই সমাজে বিচ্ছেদের সংখ্যাটা বেশি, সংখ্যাটা কম৷ -তসলিমা নাসরিন
১৮. “যে নারীকে ঘুমন্ত সুন্দর দেখায় সেই রূপবতী। -হুমায়ূন আহমেদ
১৯। “প্রাণকে নারী পূর্ণতা দেয়, এই নারীর মৃত্যুকেও মহািয়ান করতে পারে।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
২০। “নারীর সাহায্যে, তার চিন্তাশীলতা ও ধারণা নব সমাজের নির্মাণ সুদৃঢ় হতে পারে। – লেলিন
২১। “যে একটি নারীকে বিবেচনা করতে পারে, সে নারীর কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে পারে গৌরব”। – জে, বি,ইয়েস্ট
২২। “ঈশ্বর নারীর প্রতিভাকে স্থাপন করেছে তার হৃদয়ে, কারণ এই প্রতিভার কর্ম হচ্ছে সর্বদাই প্রেমের কাজ।
তাদের নিয়ে আরও কিছু স্মরণীয় উক্তি –
———————————————————-
”নারীর হৃদয় হলো এমন একটা জায়গা , যেখানে গেলে সকল পুরুষ নিজেকে হারিয়ে ফেলে।”
”মেয়েদের মন পৃথিবীর সবচেয়ে স্পর্শকর জায়গা। এই মন অনেক কঠিন বিষয় সহজে মেনে নেয় ,আবার অনেক সহজ বিষয় সহজে মেনে নিতে পারে না।“
“নিজেদের অধিকারের ব্যাপারে সামান্য সচেতন হলে মেয়েরা নিশ্চয়ই বুঝত যে জগতে যত নির্যাতন আছে মেয়েদের বিরুদ্ধে , সবচেয়ে বড় নির্যাতন হল – মেয়েদের সুন্দরী হওয়ার জন্য লেলিয়ে দেওয়া।“
”নারীর কাছ থেকে পুরুষের মত কাজ আশা করলে তাকে অবশ্যই সমান শিক্ষা দিতে হবে।“
”বিশ্বে যা -কিছু মহান সৃষ্টি চির -কল্যাণকর অর্ধেক তার করিয়াছি নারী , অর্ধেক তার নর। বিশ্বে যা -কিছু এল পাপ -তাপ বেদনা আর অশ্রুবারি অর্ধেক তার জানিয়েছে নর ,অর্ধেক তার নারী।“
”সব বড় মানুষেরাই তাঁদের সাফল্যর জন্য কোন অসাধারণ নারীর সহযোগিতা এবং উৎসাহের ঋণের কথা বলেছেন।“
“নারী হচ্ছে টি – ব্যাগের মত। গরম জলে দেয়ার আগে তুমি বুঝতে পারবে না সে কতটা শাক্তিশালী। ”
“তোমরা আমাকে শিক্ষিত মা দাও ,আমি তোমাদের শিক্ষিত জাতি দেবো।“
”কোন কালে একা হয়নি ক’ জয়ী পুরুষের তরবারি , প্রেরণা দিয়াছে , শক্তি দিয়াছে বিজয় -লক্ষ্মী নারী।”
”অসংখ্য কষ্ট ,যন্ত্রনা পেয়েও মেয়েরা মায়ারটানে একটা ভালোবাসা, একটা সম্পর্ক , একটা সংসার টিকিয়ে রাখতে চায়। এই জন্য মেয়েরা মায়াবতী আর মায়াবতীর কোনো পুরুষবাচক শব্দ নেই।”
”মাতৃত্ব শুধু শক্তিই যোগায় না , এটা মনে শান্তিও এনে দেয়। তুমি নারী বলে দুর্বল এটা কখনই কাউকে বলবে না।“
“আমাদের সমাজে নারীরাই ভবিষ্যতের মা। তাই তাদের উন্নতির দিকে নজর দেওয়াই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।“
“যে সমাজে শিক্ষিত, স্বনির্ভর, সচেতন মেয়ের সংখ্যা বেশি, সেই সমাজে বিচ্ছেদের সংখ্যাটা বেশি, বিয়ের সংখ্যাটা কম।”
“প্রাণকে নারী পূর্ণতা দেয়, এই জন্যই নারী মৃত্যুকেও মহীয়ান করতে পারে।”
“নারীর সাহায্যে, তার চিন্তাশীলতা ও সচেতনতায় নব সমাজের নির্মাণ সুদৃঢ় হতে পারে।”
“যে পুরুষ একটি নারীকে বুঝতে পারে, সে পৃথিবীর যে কোন জিনিস বুঝতে পারার গৌরব করতে পারে।”
“ঈশ্বর নারীর প্রতিভাকে স্থাপন করেছে তার হৃদয়ে,কারণ এই প্রতিভার সৃষ্টিকর্ম হচ্ছে সর্বদাই প্রেমেরই সৃষ্টিকর্ম।”
“যে মহিলা ভিড় অনুসরণ করে সে সাধারণত ভিড়ের চেয়ে আর বেশি যায় না। যে মহিলা একা হাঁটেন তিনি সম্ভবত নিজেকে এমন জায়গাগুলিতে সন্ধান করতে পারেন যা আগে কখনও হয়নি।”
“সমতা অর্জনের জন্য নারীদের সংগ্রামের গল্পটি কোনও একক নারীবাদী বা কোনও একটি প্রতিষ্ঠানের নয়, যারা মানবাধিকার সম্পর্কে যত্নশীল তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার অন্তর্ভুক্ত।”
“আপনি একজন মানুষকে শিক্ষিত করেন; আপনি একজন মানুষকে শিক্ষিত করুন আপনি একজন মহিলাকে শিক্ষিত করেন; আপনি একটি প্রজন্মকে শিক্ষিত করুন।”
“একজন মানুষের মুখ হ’ল তার আত্মজীবনী। একজন মহিলার মুখ হ’ল তার কথাসাহিত্যের কাজ।”
“নরসমাজে নারীশক্তিকে বলা যেতে পারে আদ্যাশক্তি। এই সেই শক্তি যা জীবলোকে প্রাণকে বহন করে। প্রাণকে পোষণ করে।”
“কোন সংস্কৃতি কতটা সভ্য তা জানতে তারা তাদের নারীদের সাথে কেমন আচরণ করে সেদিকে লক্ষ্য করো।”
নারীশক্তি নিয়ে কিছু প্রচলিত স্টেটাস ~
———————————————————-
নারীরা হল জগজ্জননীর প্রতিভূ
নারী আজ স্বয়ংসিদ্ধা। তাঁরা কারও উপরে নির্ভরশীল নয়, বরং তাঁদের উপরই দাঁড়িয়ে আছে সমগ্র পরিবার। আবার কখনও তাঁদের উপরেই নির্ভর করছে কোনও দেশের ভাগ্য।
প্রত্যেকটি মানুষের সাফল্যের,
পেছনেই রয়েছে একজন নারীর,
আত্মত্যাগের কাহিনী যারা সবসময় থেকে যান পর্দার পেছনেই। নারী না থাকলে হতো না রাখীবন্ধন, ভাই ফোঁটা পেত না তার মর্যাদা।
নারী না থাকলে- পৃথিবীটা হত না এত সুন্দর
নারী না থাকলে- আমাদের জন্মই যে হত না।
যুগ যুগ ধরে অত্যাচার সহ্য করে নারীরা এবারে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। নারী শক্তির জয়জয়কার এখন সর্বত্র।
হে নারী , তোমার ডানায় আগুন, দীর্ঘ হোক তোমার উড়ান।
এই বিশ্বজগৎ সুষ্ঠুভাবে একমাত্র মেয়েরাই চালাতে পারে।
যে লক্ষ্মী আর সরস্বতীর মতো শান্ত সে চণ্ডীর মতো আগুন হয়েও জ্বলে উঠতে পারে।
একটা অসুরকে বধ করতে যখন হিমসিম গিয়ে খাচ্ছিলেন তখন এক নারী এসেই তাঁদের পরিত্রাণ ঘটালেন ।
বর্তমান দুনিয়ায় এমন কোনও কাজ নেই যা মেয়েরা পারে না।
সমুদ্রের জল যেমন একটা গ্লাসে রাখা যায় না ঠিক তেমনি নারী দিবস একদিনে পালন করা যায় না।
নারীরা যখন শক্তিরূপা হয়ে ওঠে তখন পৃথিবীতে অনেক বড় পরিবর্তন আসে।
নারীবাদী হওয়া মানে নারীদের শক্তিশালী করা নয়, কারণ মেয়েরা এমনিতেই শক্তিশালী।
বাধা এলে তার মুখোমুখি দাঁড়াতে সদাই প্রস্তুত মেয়েরা, কারণ তাদের মধ্যে আছে অনন্ত শক্তির আধার।
আজকের দিনে নারীরা পুরুষদের থেকে কোনো অংশেই পিছিয়ে নেই। সব ক্ষেত্রেই তারা পুরুষদের টক্কর দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। তাই আপামর নারীজাতির নিজেকে কখনো দুর্বল না ভেবে সামনের দিকে অগ্রসর হতে হবে কারণ তারাই হল শক্তির উৎস।
নারীরা হলেন কন্যাসন্তান হিসাবে মিষ্টি, বোন হিসাবে যত্নবান, প্রেমিকা হিসাবে সুন্দরী, স্ত্রী হিসাবে প্রিয়তমা,মা হিসাবে পরম মমতাময়ী, তারা শক্তির আধার, তারা যে নারী!
একজন নারী হলো সংসারের ধারক এবং বাহক।
যে হাসিমুখে সব সয় সেই যে নারী।
শক্তি যার অপার, অসীম,
কখনও হাল দেয় না ছাড়ি,
তোমায় কুর্নিশ সে মহান নারী।
জীবন যদি রামধনু হয়, তবে নারী হল তার রঙের বাহার, জীবনে যদি নেমে আসে আঁধার , নারী তবে তার আশার আলো।
নারীরা চায় মুক্ত আকাশ, সে চায় উড়তে। ডানার দাবি তারা করে না কখনও, কারণ ইচ্ছেশক্তি তাদের রক্তে।
পৃথিবীর প্রাণ তুমি, নারী। তোমার থেকে সৃষ্ট সমগ্র দুনিয়া। আজ তাই তোমারে প্রণিপাত করি।
নারীর কারও কাছে কিছু প্রমাণ করার দরকার নেই , কেউ যদি নারী শক্তির দৃঢ়তা বুঝতে না পারে, তাহলে তাদের নিজেদেরই বদলের দরকার আছে, নারীদের নয়।
নারীর অনেক রূপ । কখনও প্রেয়সী আবার কখনও চামুণ্ডা কালীও হয়ে উঠতে পারে সে।
নারীরা সময় বিশেষে হয়ে ওঠেন দশভুজা।
নারী জাতি ই একমাত্র যারা প্রাণের সৃষ্টি করতে পারে। এর চেয়ে গর্বের আর কী হতে পারে ? নারীর উপমা নারী নিজেই ।
সে নিজেও জাননা, তার মধ্যে কতটা ক্ষমতা লুকিয়ে আছে। সবাইকে নিজের আলোয় আলোকিত করে রেখেছে ‘নারী’।
নারী হল আগুন দিয়ে তৈরি অগ্নিকন্যা যে রক্ষা করে সবাইকে এবং একই সাথে ভালোবাসায় ঘিরে রাখে।
একজন নারী হলেন সব ক্ষমতার উৎস, ভালবাসার এক অনন্ত নদী।
রূপ ,গুণ , কর্মদক্ষতা, সহনশীলতা সবেতেই নারী অদ্বিতীয়া। তোমার তুলনা তুমি নিজেই ..হে নারী।
জগতের প্রাণ তুমি হে নারী,
তোমার থেকে সৃষ্ট আমি,
তোমার চরণ চুমি।
নারী হলেন একটি পরিবারের স্তম্ভ, যা সবাইকে বেঁধে রাখে। তার অনুপ্রেরণা ছাড়া কোনও কিছু সম্ভব নয়।
সব বড় মানুষেরাই তাদের সাফল্যের জন্য কোন অসাধারণ নারীর সহযোগিতা এবং উৎসাহের ঋণের কথা বলেছেন।
নারী হলেন তরুণের কর্ত্রী, মধ্যবয়সী পুরুষের সঙ্গিনী এবং বৃদ্ধের সেবিকা।
যেখানেই কোন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকে সেখানেই মহিলারা উপস্থিত ও অন্তর্ভুক্ত থাকে। … তাই নারীদের ব্যতিক্রম হিসাবে ভাবা উচিত নয়।
একজন নারী যে তার দাবি জানাতে পারে সে ই হল প্রকৃতপক্ষে একজন শক্তিশালী রমণী।
একজন নারীবাদী মহিলা সে ই যিনি নারী ও পুরুষের সমতা এবং মানবতা কে সমান স্বীকৃতি দেন।
একজন মহিলার এমন বিশেষ কিছু গুণ আছে যা একজন পুরুষতান্ত্রিক জগতে আধিপত্য বিস্তার করতে সক্ষম। সেটি হল নারীর নির্দিষ্ট অনুগ্রহ, শক্তি, বুদ্ধি, এবং নির্ভীকতা। পৃথিবীতে এমন কিছু কাজ নেই যা নারীরা সম্পাদন করতে পারে না।
মহিলাদের নেতৃত্ব এ বিশ্বে সর্বত্র – দেশের নেত্রী কিংবা সিইও পদ থেকে শুরু করে সেই গৃহিনী যে তার সন্তানদের লালন-পালন করে এবং তার পরিবারের নেতৃত্ব দেয়। আমাদের দেশটি শক্তিশালী মহিলাদের দ্বারা নির্মিত হয়েছিল যা ইতিহাস কখনও অস্বীকার করতে পারবে না।
মানবাধিকার হ’ল নারীর অধিকার এবং নারীর অধিকার হ’ল মানবাধিকার, এই সত্যটি আজকের এবং সর্বকালের জন্য।
নারীর অনুমান পুরুষের নিশ্চয়তার চেয়ে অনেক বেশি নির্ভরযোগ্য। পুরুষ সম্মুখ যুদ্ধে বিশ্বাস করে, কিন্তু স্ত্রী জাতির রণনীতি সম্পূর্ণ পরোক্ষ।
নারীর বিরহে, নারীর মিলনে, নর পেল কবি-প্রাণ,/ যত কথা তার হইল কবিতা, শব্দ হইল গান ।
—————————————————————
[সংগৃহীত ও সম্পাদিত। তথ্যসূত্র – উইকিপিডিয়া]