শংকর ব্রহ্ম
লেখক পরিচিতি
—————————
নাম – শংকর ব্রহ্ম
শংকর ব্রহ্ম – ১৯৫১ সালের ২রা মার্চ, কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন । পিতা ঁহরলাল ব্রহ্ম এবং মাতা ঁগীতারাণী দেবী।
ছাত্র জীবন শুরু হয় তার নাকতলা হাই স্কুলে। কলেজ জীবন কাটে সাউথ সিটি কলেজ বা হেরম্ব চন্দ্র কলেজের দিবা-বিভাগে, সেখান থেকে তিনি বানিজ্যে স্নাতক হন। তার ছেলেবেলা কাটে (৪/৮১ নম্বর) বিদ্যাসাগর কলোনীতে (কলকাতা – ৭০০ ০৪৭)। কর্মজীবনে তিনি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন এবং প্রধান-শিক্ষক হয়ে অবসর গ্রহণ করেছেন ২০১১ সালে। বর্তমানে তিনি বাস করেন গড়িয়ার কেন্দুয়ায় (৮/১ আশুতোষ পল্লী, কলকাতা – ৭০০ ০৮৪.) এই ঠিকানায়।
১৯৭০ সালের শুরু থেকেই তিনি সাহিত্য চর্চায় মেতেছেন। তখন তিনি সাউথ সিটি কলেজে পড়েন। দেশপ্রিয় পার্কের ‘সুতৃপ্তি’ রেস্টুরেন্ট এবং রাসবিহারীর এভিনিউর ‘অমৃতায়ণ’ তখন রবিবার সকাল দশটা থেকে সাহিত্যের আড্ডা হতো, সেখানে নিয়মিত যেতেন তিনি। সেখানে তার সঙ্গে অনেক স্বনামধন্য কবি-সাহিত্যিকের পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতা হয়। দীর্ঘ সাহিত্য-জীবনে তিনি সান্নিধ্য লাভ করেছেন – অন্নদা শংকর রায়, বুদ্ধদেব বসু, প্রেমেন্দ্র মিত্র, হীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়, শিব নারায়ণ রায়, অমিতাভ চৌধুরী, পবিত্র সরকার, সমরেশ বসু, অরুণ মিত্র, সুশীল রায়, নারায়ণ গাঙ্গুলী, যজ্ঞেশ্বর রায়, নীহার রঞ্জন গুপ্ত, সুভাষ মুখোপাধ্যায়, হেমাঙ্গ বিশ্বাস, বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, কিরণশংকর সেনগুপ্ত, সুনীল গাঙ্গুলী, শক্তি চট্টোপাধ্যায়, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, দীপক মজুমদার, প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত, পবিত্র মুখার্জী, দিব্যেন্দু পালিত, সত্যেন্দ্র আচার্য, সমীর রক্ষিত, ফণিভূষণ আচার্য, তুলসী মুখোপাধ্যায়, সজল বন্দোপাধ্যয়, দেবাশিষ বন্দ্যোপাধ্যায়, শিবতোষ ঘোষ, অমর মিত্র,শ্যামলকান্তি দাশ, সিদ্ধার্থ সিংহ, গৌতম চ্যাটার্জী ( মহীনের ঘোড়াগুলি) প্রমুখ।
তার প্রকাশিত লেখার সংখ্যা শ’পাঁচেক-এর বেশী। তিনি প্রায় শতাধিক পত্রিকায় তিনি লেখেন। যাদের মধ্যে উল্লেখনীয় “দৈনিক বাংলা স্টেটসম্যান”, “পুরশ্রী”, “প্রসাদ”, “ঘরোয়া”, “বিকল্প বার্তা” (শারদীয়া সংখ্যা – ১৪২৯), শব্দ সাঁকো, স্বয়ংসিদ্ধা, অমেয়, দৈনিক দেশজগত, বঙ্গীয় সাহিত্য দর্পণ, শব্দনগর, উদ্ভাস, শব্দ লেখা, নীলকমল, বোধগম্য, অচিন পাখি, স্বরধ্বনি পত্রিকা, সৃজাম্যহম্ , খেয়ালী খাম, সর্বজয়া পত্রিকা,পরিচয় পত্রিকা, কাব্যতরী, কাব্যপট, ইলশে গুঁড়ি, সাময়িকি (নরওয়ে থেকে প্রকাশিত), আশ্রম (অটোয়া থেকে প্রকাশিত) প্রভৃতি।
এ’ছাড়া রয়েছে সমরেশ বসু সম্পাদিত “মহানগর”, “শিবনারায়ণ রায়” সম্পাদিত “জ্ঞিসাসা”, কিরণ শংকর সেনগুপ্ত সম্পাদিত “সাহিত্য চিন্তা”, পবিত্র মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত “কবিপত্র” প্রভৃতি পত্রিকা। কবি বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। তার মধ্যে রয়েছে “সারা বাংলা কবিসন্মেলন” (১৯৭৮)-য়ে তরুণদের [জুনিয়ার্] মধ্যে প্রথম পুরস্কার (সেবার শক্তি চট্টোপাধ্যায় অগ্রজদের [সীনিয়র্] মধ্যে প্রথম পুরস্কার পান), “সময়ানুগ” (১৯৭৯) প্রথম পুরস্কার, “যুব উৎসব” (১৯৮০)-এর পুরস্কার এবং তারপর আরও অন্যান্য বহু পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
কবি শংকর ব্রহ্মর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে “তোমাকে যে দুঃখ দেয়”, “স্মৃতি তুমি আমাকে ফেরাও”, “যাব বলে এখানে আসিনি”, “আবার বছর কুড়ি পরে”। এই কাব্যগ্রন্থগুলি বর্তমানে নিঃশেষিত,পাওয়া যায় না।
কবি “শব্দব্রহ্ম” ও “সাহিত্য সংহিতা” দুটি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। বর্তমানে তিনি “সাম্প্রতিক সাহিত্য” ও “স্টোরি এন্ড আর্টিকেল” গ্রুপের এডমিন।
শংকর ব্রহ্মের কবিতার বৈশিষ্ট্য হলো তাঁর কবিতায় লৌকিক প্রেমের পাশাপাশি স্বর্গীয় প্রেম, প্রভু, প্রেমাস্পদ ও প্রশংসিত ব্যক্তি সম্পর্কিত বিষয়বস্তু এবং আশাবাদ। তাঁর কবিতাগুলোতে বিরহ-বিচ্ছেদের কষ্ট থাকলেও, তিনি বিশ্বাস করতেন যে এই কষ্ট স্থায়ী নয়।
এখানে শংকর ব্রহ্মের কবিতার কিছু বৈশিষ্ট্য বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো:
প্রেম ও আধ্যাত্মিকতা:
শংকর ব্রহ্মের কবিতায় লৌকিক প্রেমের পাশাপাশি আধ্যাত্মিক প্রেমের গভীরতা লক্ষ্য করা যায়। তিনি তাঁর কবিতায় প্রভু, প্রেমাস্পদ ও প্রশংসিত ব্যক্তি সম্পর্কিত বিষয়গুলোকে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।
আশাবাদ:
শংকর ব্রহ্মের কবিতার সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো আশাবাদ। তাঁর জীবনে দুঃখ-কষ্ট থাকলেও তিনি বিশ্বাস করতেন যে সবকিছু ভালো হবে।
বিরহ-বিচ্ছেদের কষ্ট:
শংকর ব্রহ্মের কবিতায় বিরহ-বিচ্ছেদের কষ্টও প্রকাশ পেয়েছে। তবে, তিনি এই কষ্টকে স্থায়ী মনে করতেন না।
বিষয়বস্তু:
তাঁর কবিতার বিষয়বস্তু হলো প্রেম, প্রকৃতি, মানব জীবন এবং আধ্যাত্মিকতা।
ভাষা ও ছন্দ:
শংকর ব্রহ্মের কবিতার ভাষা সহজ ও স্বাভাবিক এবং ছন্দের ব্যবহারও সাবলীল।
অন্যান্য বৈশিষ্ট্য:
তাঁর কবিতায় জীবনের বিভিন্ন দিক যেমন আনন্দ, দুঃখ, প্রেম, বিরহ, আশা ও হতাশাকে সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
শংকর ব্রহ্মের কবিতার আরও বৈশিষ্ট্য হলো, তিনি অল্প কথায় গভীর ভাব প্রকাশ করতে ভালোবাসেন, তাঁর কবিতায় জীবনের বিভিন্ন দিক যেমন – প্রেম, বিরহ, আনন্দ, দুঃখ, হতাশা, প্রতিবাদ, নৈতিক অবক্ষয় ইত্যাদি বিষয় স্থান পেয়েছে।
অল্প কথায় ব্যাপক ভাব প্রকাশ:
শংকর ব্রহ্মের কবিতাগুলি সাধারণত ছোট এবং সংহত, যেখানে অল্প শব্দে তিনি জীবনের গভীর অনুভূতি প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছেন।
প্রেম ও বিরহ:
তাঁর কবিতায় প্রেমের গভীরতা ও বিরহের বেদনার প্রকাশ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
জীবন ও সমাজের প্রতিচ্ছবি:
তাঁর কবিতায় জীবনের বিভিন্ন দিক, যেমন – আনন্দ, দুঃখ, আশা, হতাশা, সমাজের প্রতিচ্ছবি ধরা পড়েছে।
আধুনিকতা:
শংকর ব্রহ্মের কবিতায় আধুনিক জীবনবোধ ও চিন্তাধারা প্রতিফলিত হয়েছে।
গল্প ও কবিতার মিশ্রণ:
তাঁর কবিতায় গল্পের মতো প্লট ও চাতুর্যপূর্ণ ভাষার ব্যবহার দেখা যায়।
মনস্তাত্ত্বিক বিষয়:
শংকর ব্রহ্মের কবিতায় মনস্তাত্ত্বিক বিষয় ও মানবিক সংকটগুলি বিশেষভাবে স্থান পেয়েছে।

লেখকের সৃষ্টি

স্বগতক্তি || Sankar Brahma
মেজো মাপের কবিরা সব,নিজের ছাড়া অন্য কারও লেখা পড়েন না,আর

বড়দিন || Sankar Brahma
সান্তা বলল,ভাল থেকোআমি বললাম,বেশদু’জনের পথ হলো ভিন্ন , সম্পর্ক হলো

হৃদয় আকুল || Sankar Brahma
দু’হাজার কুড়িএখনও তোমাকে ঘিরে বিষাদের গাঢ় কুহেলিকাআমি আর এগোতে পারি

স্মৃতি তুমি আমাকে ফেরাও || Sankar Brahma
সমস্ত বেলা পুড়ে যায় একা একা ক্রোধেজেগে রয় তোমার দু’চোখ

কঠিন বন্ধনে || Sankar Brahma
আমি কিছুতেই সমঝোতা করতে পারি নাআমার কিছু কবিতার সঙ্গে, অথচ

কবিতার পরিহাসে || Sankar Brahma
ঘুম থেকে উঠে সকালটা কাটেটাকা টাকা করে মনসন্ধ্যায় খুব ফাঁকা

মনমাঝি || Sankar Brahma
এবার দারুণ শীতে,শব্দগুলো জমে গেছেবর্ণগুলো আলাদা করা যাচ্ছে না কিছুতেইজোর

নীল জোনাকি || Sankar Brahma
লেখা যেন এক ধরণের বিধংসী মারযাকে নিয়ে সারাবেলা কাটে আমার।জামার

বল তবু,একবার || Sankar Brahma
যে হাত ধরেছি একবার,সেই হাত আর বুঝি ছেড়ে দেওযা যায়?জানি

বৃষ্টির ঠিকানা || Sankar Brahma
তুমি এক নির্বোধ তাই ভাব গোলাপটা লালএর চেয়ে সতেজ সবুজ

অমরতা || Sankar Brahma
কালের প্রবল স্রোতে মানুষ হারিয়ে যায় একদিন ঠিকইকিন্তু মানবতা থেকে

পথ যদি ডাক দেয় || Sankar Brahma
এ পথের শেষ নেই কোনও,সুতরাং চল যাইতুমি আমি দুজনেই,জন্ম আর

বন্ধখামে খোলাচিঠি || Sankar Brahma
১.তোমার ভিতর আছে,একলক্ষ মেহগনী গাছআমি তার আঁচ পেয়ে,তোমার দখল নিতে

এখন আর কোন কথা নয় || Sankar Brahma
আমিই শহীদবেদীর পাশেপুঁতে রেখে এসেছিলাম মিছিল শেষের পতাকা,তারপর ফিরে গিয়ে

কিছু একটা ঘটছে || Sankar Brahma
আমার ভিতরে একটা কিছু ঘটছে ডাক্তারআনচান ভাব,কিছুই ভাল লাগচে না

এমন ভীষণ অন্ধকারে || Sankar Brahma
অন্তবিহীন পথ রয়েছে সামনে পরে,ধূসর নাকি রঙীন সেটা কেউ কি

নিজের ভিতর || Sankar Brahma
বাইরে যাবার রাস্তা যখন বন্ধআমি তখন অন্ধ হয়ে একা,দাঁড়িয়ে আছি

আমি ভাল নেই || Sankar Brahma
তোমার অভাবে ঘরের দেয়াল জুড়ে লিখে রাখব‘আমি ভাল নেই’আমার নিজের

আগামী প্রজন্ম || Sankar Brahma
কোথায় রেখেছ সেই গোপন ভান্ডার,কোথায় লুকানো আছে ম্যাজিক লন্ঠন?কোন সে

একটি জীবন || Sankar Brahma
জীবন তুমিও পেয়েছিলে বেঁচে থাকার জন্যবোঝনি তার মানেদিনগুলি সব ফুরিয়ে

অভীষ্ট কুসুম || Sankar Brahma
স্থির কোন কেন্দ্র নেই, ক্ষণিক সুখের মোহে দুলিশিশুকাল থেকে যদি

মুখবন্ধ || Sankar Brahma
ছেঁড়া কথাগুলো মুখোশে ভরে মুখ বন্ধ করে,বাজারে ছেড়ে দিয়েছি,বিকোচ্ছে দেদার

প্রেম দুর্বার || Sankar Brahma
এক.আসতে তোমার দেরী দেখে,রাগ করেছি ভাবতে পারসে মুরদও নেই যে

উদ্ভাস || Sankar Brahma
তোমাকে দেখার আগে ছিলাম বালকপ্রেমে পড়ার আগে তুমিও বালিকা,দ্বিধা থরো

মিথ্যে মনে হবে || Sankar Brahma
অনেক কথা না জানাই ভাল,যেমন ধর,তোমাকে ঘিরে ধরে সর্বদা স্তুতি

আশ্চর্য সময় || Sankar Brahma
এখন আমার কোন কষ্ট নেই আর,জেনে গেছি মৃত্যু সমাগতসব কষ্ট