Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » লিঙ্গ পুরাণ || Prithviraj Sen » Page 5

লিঙ্গ পুরাণ || Prithviraj Sen

ত্রেতাযুগে পৃথিবীতে কৌশিক নামে পরম বিষ্ণুভক্ত এক ব্রাহ্মণ ছিলেন। তিনি একটি বিষ্ণুমন্দিরে সব সময়ই তাঁর নাম-গান করতেন। কৌশিকের সংসার বা আত্মীয়স্বজন কেউ ছিল না। তার কোনো চিন্তা ছিল না।

সেই বিষ্ণুমন্দিরের কাছে পদ্মাখ্য নামে এক ব্রাহ্মণ বাস করতেন। তিনি ছিলেন ধনবান, কিন্তু কৃপণ ছিলেন না। একদিন তিনি কৌশিকের সুমধুর গান শুনে মোহিত হয়ে খোঁজখবর নিতে শুরু করলেন। তিনি জানতে পারলেন যে কৌশিকের কেউ নেই। তিনি ভিক্ষা করেন না। তাঁর গান শুনে যে যা দেয় তাতেই তাঁর পেট চলে। কোনদিন কিছু না পেলে সেদিন উপবাস।

পদ্মাখ্য এই খবর পেয়ে সেই বিষ্ণুমন্দিরেই কৌশিকের আহারের ব্যবস্থা করে দিলেন। কৌশিকের আর কোনো চিন্তা নেই। সে এখন মনের আনন্দে গান গায়। পদ্মাখ্যও ছুটে আসেন তার গান শুনতে। কৌশিকের গানের শ্রোতা ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে লাগল। কৌশিকের নাম সর্বত্র প্রচারিত হল। কুশস্থল থেকে একদিন পঞ্চাশজন ব্রাহ্মণ এসে কৌশিকের গান শুনে মোহিত ও অবাক হলেন। বিষ্ণুর প্রসাদ সেবার সুযোগ পেয়ে তারা আর ফিরে গেলেন না। দেখতে দেখতে কৌশিকের একটি হরিনামের দল গড়ে উঠল।

কৌশিকের গানের প্রশংসা শুনে এবং তাঁর গান নিজের কানে শোনবার জন্য সপারিষদ কলিঙ্গ দেশের রাজা সেই বিষ্ণুমন্দিরে এসে হাজির হলেন। সেই সময় কৌশিক গান গাইছিলেন। গান শেষ হতে কৌশিক সমাদর করে রাজাকে নিজের কাছে বসালেন।

কলিঙ্গ রাজা গান শুনে খুব প্রশংসা করে বললেন–লোকমুখে যা শুনেছিলাম সবই সত্যি। আমার ইচ্ছে, যে তুমি আমার নাম গান করে আমাকে খুশি কর। আমি তোমাকে অনেক উপহার দেব।

হাতজোড় করে কৌশিক বলল–আমাকে মাপ করবেন রাজামশাই। ভগবান শ্রীহরির নাম ছাড়া আমি আর কারোর নাম করতে পারব না।

এই কথা শুনে কলিঙ্করাজ খুব রেগে বললেন–আমি রাজা, তোমার হরির চেয়ে কোনো অংশে কম নই। গায়কের কাজ রাজার নাম গুণগান করা। তাহলে কেন তুমি পারবে না?

কৌশিক এবং তাঁর শিষ্যভক্তগণও এই কথা শুনে কিছু না বলে চুপ করে থাকলেন।

কলিঙ্গরাজ গর্জন করে বললেন–আমার গুণগান যখন তোমরা করতে পারবে না, তখন আমার গায়করা গাইবে, তোমরা শুনবে।

রাজার গায়করা তার গুণগান শুরু করল। কৌশিকের দলবল এই গান শুনে কানে আঙুল দিল। কারণ হরি গুণগান নয়, রাজার নামগান।

মহাত্মা কৌশিক কলিঙ্গরাজের অভিপ্রায়ে বুঝতে পেরে, আসন ছেড়ে উঠে পড়লেন। দেখাদেখি। তার ভক্তশিষ্যরাও উঠে পড়লেন। সেখান থেকে তারা চলে গেলেন।

প্রতাপশালী রাজা যদি বাধ্য করেন তাদের রাজা নামগান করতে তাই সকলেই কৌশিকের নির্দেশ মত ছুরি দিয়ে নিজের নিজের জিভ কেটে ফেললেন, কৌশিকও তাই করলেন। যাতে আর কখনও গাইতে না পারেন।

এমন ব্যবহার দেখে কলিঙ্গরাজ ভীষণ রেগে কৌশিকের সঙ্গী তার বাদ্যযন্ত্রাদির আসবাবপত্র এমনকি পোষাকাদিও কেড়ে নিয়ে তাঁদের দেশ থেকে তাড়িয়ে দিলেন। পদ্মাখ্যাকে দেশ থেকে তাড়িয়ে দিলেন।

কুশস্থলের সেই পঞ্চাশজন ব্রাহ্মণ আর সদলবলে কৌশিক তখন মহাভাবনায় পড়লেন। তাদের জিভ কাটা গেছে এমনকি রাজাও সর্বস্ব নিয়েছে। এখন কি হবে। তারা তখন মৃত্যুপণ করে এক জায়গায় বসে থেকে অনাহারে মারা গেলেন সবাই।

যমদূতেরা তাদের সবাইকে নিয়ে গেল যমলোকে। ব্রহ্মা ব্রহ্মলোক থেকে সবকিছু জানতে পারলেন। ব্রহ্মা তখন দেবাতদের স্মরণ করে জানালেন যে কৌশিক সহ ব্রাহ্মণগণ শ্রীহরির নাম স্মরণ করতে করতে মৃত্যুবরণ করেছে। আর যমরাজ তাদের যমলোকে নিয়ে গেছে। তিনি দেবগণকে বললেন–তোমরা এক্ষুনি যমলোকে গিয়ে সেইসব কৃষ্ণ ভক্তদের আমার কাছে নিয়ে এস।

ব্রহ্মার আদেশে দেবতাগণ যমলোকে গিয়ে যমকে বললেন–বিষ্ণু ভক্তদের এখানে তুমি নিয়ে এসেছ কেন?

যমরাজ তখন নিজের অপরাধ স্বীকার করে দেবতাদের হাতে কৌশিক সহ ব্রাহ্মণদের সমর্পণ করলেন। দেবতাগণ তাদের ব্রহ্মার সামনে হাজির করলে, ব্রহ্মা তাদের নিয়ে গেলেন বিষ্ণুলোকে, একেবারে বিষ্ণুর সামনে। ব্রহ্মাকে হরিভক্ত ব্রাহ্মণদের নিয়ে আসতে দেখে বিষ্ণু আসন ছেড়ে উঠে একে একে সকলের নাম ধরে ডেকে আলিঙ্গন করে সেই বিষ্ণুলোকেই তাদের থাকার ব্যবস্থা করে দিলেন।

বিষ্ণুর এমন কার্যকলাপ দেখে দেবতারা ভাবলেন যে সম্মান বহু সাধ্যসাধনা করে দেবতারাও পান না, মর্তের মানুষ হয়ে এরা এত সম্মান পেল। তারা তখন হরিভক্তের জয়ধ্বনি দিতে দিতে স্বস্থানে চলে গেলেন।

ব্রহ্মা, দেবর্ষি নারদ, মুনি ঋষিরা সেখানে রয়ে গেলেন। লক্ষ্মীদেবী সেই সময় সেখানে উপস্থিত হলেন। বিষ্ণুর দূতগণ তখন সেই সভা থেকে সকলকে বের করে দেওয়ায় সেখানে শুধুমাত্র লক্ষ্মীদেবী ও নারায়ণ ছাড়া আর কেউ রইল না। তখন নারায়ণের ইঙ্গিতে গান গাইবার জন্য তুম্বুরুকে ডেকে আনা হল। হরি ভক্ত তুম্বুরু হলেন গন্ধবদের গুরু এবং সেই সঙ্গে সঙ্গীতেরও গুরু।

নারায়ণ নিজেই আসন ছেড়ে উঠে ফুলের মালা তুম্বুরুর গলায় পরিয়ে আলিঙ্গন করে বললেন– তোমার মধুর গীত শুরু কর তুম্বুরু।

বীণা বাজিয়ে তুম্বুরু সুমধুর গান শুরু করলেন। তান-মান-লয়ে সে এক অপূর্ব পরিবেশনা। সকলে তাঁর প্রসংসা করে অনেক উপহার দিয়ে সম্মানিত করলেন তাঁকে।

এঁরই সঙ্গে নারদও গান শিখেছিলেন। কিন্তু নারায়ণ তাঁকে না ডেকে তুম্বুরুকে গান শোনানোর জন্য ডাকলেন। নারদ অবাক হলেন। তিনি শ্রীহরির অতি প্রিয়জন। মনে মনে ভাবলেন যে তাহলে তিনি কি এখনো ভালোভাবে গান শিখতে পারেন নি। নারায়ণ তাকে কোনো আমলই দিলেন না। নিজেকে ধিক্কার দিয়ে নারদ প্রতিজ্ঞা করে বসলেন–যে ভাবেই হোক গান গেয়ে প্রভুর কাছে তিনি সন্মানের পাত্র হবেন। তিনি আবার চিন্তা করলেন কার কাছে গান শেখার জন্য সাহায্য নেবেন। সুকণ্ঠের অধিকারী কিভাবে হবেন। ভাবলেন তপস্যা করেই সব সমস্যার সমাধান হবে। তারপর তিনি তপস্যায় বসলেন। একদিন আকাশবাণী শুনলেন–হে নারদ, তোমার অভিলাষ পূর্ণ করার জন্য তোমাকে মানস সরোবরের উত্তরে যেতে হবে। সেখানে গান বন্ধু’ নামে পরিচিত উলুক পাখির কাছে। তুমি গানের তালিম নাও।

আকাশবাণী শুনে দেবর্ষি নারদ ছুটে চললেন মানস সরোবরের উত্তর পর্বতে। সেখানে দেখলেন– বহু গন্ধর্ব, কিন্নর, যক্ষ, অপ্সরাগণ একটি পাখিকে ঘিরে বসে গানের তালিম নিচ্ছে। গান বন্ধুর সুমধুর গলা শুনে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। নারদ ধীরে ধীরে সেদিকে অগ্রসর হলেন।

নারদকে দেখে গান বন্ধু প্রণাম জানিয়ে বললেন–আপনি এখানে কি মনে করে হে দেবর্ষি নারদ? আসুন, বসুন আমি কি সেবা করতে পারি আপনার।

উলুকের আতিথেয়তায় নারদ খুশি হয়ে বললেন, হে গানবন্ধু, আমি আপনার কাছে গান শিখব বলে এসেছি। শ্রীহরির প্রিয়পাত্র কৌশিক বা তুম্বুরুর মতো হতে পারিনি। কিন্তু গান আমি শিখেছি। ভালভাবে গাইতে না পারার জন্য নারায়ণ আমাকে উপেক্ষা করেছেন। আমি যাতে শ্রীহরির প্রিয়পাত্র হতে পারি, সেইভাবে আমাকে শিক্ষা দিন।

নারদের প্রার্থনা শুনে উলুক বললেন–আপনি যা বললেন, খুবই সত্যি কথা। নাম, গান, কীর্তন শ্রীহরি পছন্দ করেন। ইন্দ্রদ্যুম্ন রাজার বরে আমি দীর্ঘজীবন লাভ করেছি। তাই অনেক কিছু শিক্ষা লাভ করেছি। হরিদ্বেষী রাজা ভুবনেশ হরিনাম বন্ধ করে দিলেন। হরিমিত্র নামে এক ব্রাহ্মণ সেই নির্দেশ না মেনে শ্ৰহরির সুন্দর এক চতুর্ভুজ মূর্তি গড়ে অতি ভক্তির সঙ্গে পূজা করতেন। তার গুণ-গান গাইতেন।

রাজার আদেশ অমান্য করার জন্য হরিমিত্রের সবকিছু কেড়ে নিয়ে, শ্রীহরির মূর্তি ভেঙ্গে দিয়ে, তাঁকে রাজ্য থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হল।

তারপর কালক্রমে রাজা মারা গেলেন। হে দেবর্ষি, সেই রাজা এখন এখানকার একটা গাছের কোটরে বাস করেন। আর ক্ষিদের জ্বালায় নিজের মাংস খাচ্ছেন। আর হরিমিত্র মৃত্যুর পরে চলে গেলেন বৈকুণ্ঠে। এই দৃশ্য দেখে আমার হরিগুণ গান শেখার প্রবল ইচ্ছা জাগে। একশো কুড়ি বছর কেটে গেল আমার। এই গান শিখতে গন্ধর্ব-কিন্নরদের সঙ্গে গান শিখতে ধৈৰ্য্য ধরতে পারলে আপনি সুগায়ক হবেন।

নারদ উলুককে গুরুরূপে বরণ করে নিয়ে বললেন–আমি আপনাকে গুরুপদে অভিষিক্ত করছি। আপনার উপদেশ মতো আমি চলব, কখনও তা থেকে বিচ্যুত হব না।

উলুক মনপ্রাণ ভরে নারদকে গানের শিক্ষা দিলেন। একান্ত সাধনায় এক হাজার বছর কেটে গেল, নারদের গলায় ঝরতে লাগল গানের সুধাবর্ষণ।

তারপর উলুক বললেন–হে দেবর্ষি, আপনার ‘গীতবিদ্যা’ শেষ হল। আমি আমার সবকিছু আপনাকে উজাড় করে দিয়েছি। এবার আমার পরমায়ুর শেষ অবস্থা। আপনি ত্রিকালদর্শী। এখন বলুন মৃত্যুর পর আমার কি গতি হবে?

ধ্যান যোগে উলুকের ভবিষ্যত জীবন দর্শন করে নারদ বললেন–হে গানবন্ধু, মৃত্যুর পর কশ্যপের ঔরসে বিনতার গর্ভে আপনি গরুড় পক্ষীরূপে জন্মগ্রহণ করে শ্রীহরির বাহন হয়ে তার সেবা করবেন।

শ্রীহরির কাছে বহুদিন পরে নারদ এলেন, প্রণাম করে বললেন, প্রভু আমি গান শিখেছি। তখন শ্রীহরি বললেন–তাহলে গান শুরু কর। দেখি কেমন শিখেছ। নারদ তখন মহানন্দে বীণা বাজিয়ে সুমধুর গান শোনালেন শ্রীহরিকে।

তখন শ্রীহরি নারদকে বললেন–বহুদিন ধরে গানবন্ধুর কাছে সঙ্গীতচর্চা করেছ। কিন্তু তুম্বুরুর মত গলা তোমার নয়। এখনও অনেক বাকি আছে শিখতে। দ্বাপরযুগ যখন আসবে, আমি কৃষ্ণ নামে তখন ধরাধামে আবির্ভূত হব। তখন তুমি আমার সঙ্গে দেখা করে আমি যা বলেছি আমাকে তা মনে করিয়ে দেবে। তোমার মনোবাসনা পূর্ণ হবে তখন। আশীর্বাদ করছি তুমি তুম্বুরুর চেয়েও ভালো গায়ক হবে।

নারায়ণকে প্রণাম করে নারদ বিদায় নিলেন। তারপর থেকে বীনা বাজিয়ে সর্ব সময়ে গান গাইতে গাইতে চতুর্দশ ভুবন ঘুরে বেড়াতে লাগলেন। শ্রীহরির গুণ-গান ছাড়া কোনো গান করেন না।

এইভাবে দেবর্ষির কত মন্বন্তর কেটে গেছে, তার কোনো ঠিক নেই। একদিন হঠাৎ রৈবতক পর্বতে শ্রীকৃষ্ণকে দেখতে পেলেন তিনি। মনে পড়ে গেল তার সেই পূর্বের কথা। ছুটে এসে কৃষ্ণের চরণে প্রণাম করে মনে করিয়ে দিলেন তার সঙ্গীতের কথা। তখন কৃষ্ণ বললেন–নারদ, আমার স্ত্রী সত্যভামার গানের গলা খুব সুন্দর। তুমি তার কাছে গিয়ে কিছুদিন গলাটা ভাল করে সেধে নাও।

শ্রীকৃষ্ণের কথামত নারদ দ্বারকায় এসে সত্যভামার কাছে গান শিখলেন। তারপর শ্রীকৃষ্ণের কাছে গানের পরীক্ষা দিলেন। তার গান শোনার পর কৃষ্ণ বললেন–নারদ, তুমি রুক্মিণীর কাছে কিছুদিন গানের তালিম নাও।

নারদ রুক্মিণীর কাছে গিয়ে সব বললেন। নারদের গান শুনে রুক্মিণী বললেন–দেবর্ষি, আপনি বহুদিন গানের রেওয়াজ করেছেন বটে, কিন্তু এখনো অনেক কিছু শেখার বাকি আছে। যা হোক আমার যা কিছু জানা আছে আমি আপনাকে শেখাবো।

দেবর্ষি নারদ অতি যত্ন ও নিষ্ঠার সঙ্গে রুক্মিণীর কাছে গানের চর্চা করবার পর কৃষ্ণের কাছে এসে তাঁকে গান শোনালেন।

শ্রীকৃষ্ণ নারদের গান মন দিয়ে শুনে, দু-এক জায়গায় ভুল ধরিয়ে দিলেন। সেগুলি সংশোধন করে দিলেন। তারপর বললেন–দেবর্ষি, এতদিন পরে তুমি যথার্থ গায়ক হতে পেরেছ।

শ্রীকৃষ্ণের চরণে প্রণাম জানিয়ে বীণাটি হাতে নিয়ে নারদ আবার বেরিয়ে পড়লেন। শ্রীকৃষ্ণ এতদিন পরে গায়ক বলে তাঁকে স্বীকার করার জন্য তার মনে অসীম আনন্দ।

Pages: 1 2 3 4 5 6

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *