Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » লক্ষ্মীর স্বপ্ন পূরণ || Suchandra Bose

লক্ষ্মীর স্বপ্ন পূরণ || Suchandra Bose

লক্ষ্মীর স্বপ্ন পূরণ

সুরেশ প্রতিদিন সকালে ভ্যানে করে শাকসবজি নিয়ে পাড়ায় বিক্রি করতে বের হয়।
এই সবজি বিক্রি করেই তার সংসার।স্ত্রী ও দুই ছেলে নিয়ে সুখেই কাটে তার। একদিন এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটে যায় তার জীবনে। প্রতিদিনের মতই সুরেশ শাকসবজি ভ্যানে তুলে বিক্রি করতে বেরিয়েছে পাড়ায়,ঠিক এই সময়ই তার চোখে পড়ে রাস্তার ধারে আবর্জনার স্তূপের মধ্যে কিছু একটা পড়ে নড়াচড়া করছে। কয়েকটা কুকুর মিলে একটা কাপড় জড়ানো পোঁটলা টানাটানি করছে। কান্নার শব্দ শুনে সে ভ্যান থামিয়ে, দূর থেকে ছুটে গেল সেখানে। কুকুরগুলিকে হ্যাট হ্যাট করে তাড়িয়ে সে সেখানে দেখতে পায় একটি বাচ্চা পড়ে আছে। কেউ কোথাও নেই ।
সুরেশ শিশুটিকে কোলে তুলে কাপড় সরিয়ে অবাক হয়ে গেল।দুধের এই কন্যা সন্তান নিয়ে সে যে এখন কী করবে বুঝে উঠতে পারল না। তাকে বুকে জড়িয়ে ধরে সবজির ভ্যানের কাছে চলে এলো। শেষে বাচ্ছাটিকে ভ্যানে শাকসব্জির মাঝে শুইয়ে বাড়ি ফিরে এলো ।
বাচ্ছা মেয়েটিকে বাড়িতে এনে রজনীর কোলে দিয়ে বলে, দেখ বউ ঠিক যেন মা লক্ষ্মী ।বাচ্ছাটিকে দেখে খুব মায়া হল রজনীর।সুরেশ বলল তুই যত্ন করলে বাচ্চাটি বেঁচে যেতে পারে। রজনী বাচ্ছাটির নাম রাখল লক্ষ্মী । তারা বাচ্চাটিকে নিজের মেয়ের মতো মানুষ করতে লাগলো। শত দারিদ্র্য থাকা সত্ত্বেও মেয়েটির কোন অযত্ন হতে দিল না।ছেলে দুটিকেও পড়াশোনা শেখাতে চেয়েছিল তারা।কিন্তু তাদের পড়াশোনায় মন না থাকায় বড় ছেলে বাবার সাথে শাকসব্জীর ভ্যান নিয়ে বের হতো।আর ছোট ছেলে জাল নিয়ে নদীতে মাছ ধরতে বের হতো। তারা দু ভাই লক্ষ্মীকে খুব ভালবাসতো।

সুরেশ মেয়েকে পড়াশোনা শিখিয়ে মানুষের মতো মানুষ করতে চেয়েছিল।

কিন্তু তার বাবা হঠাৎ অজানা রোগে মারা যায়। সংসারের হাল ধরে দুই ভাই। তাই লক্ষ্মী তখন থেকেই ডাক্তার হতে চেয়েছিল। লক্ষ্মীর স্বপ্ন পূরণের জন্য মা ও দুই ভাই আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। দিন দিন পড়াশোনার খরচ বাড়তে থাকায় মা পড়েন চিন্তায়। এরপর সে দুই ছেলের সঙ্গে পরামর্শ করে। তারা মাকে আস্বস্ত করে বলে একটা কিছু হয়ে যাবে।তারা মাকে দুশ্চিন্তা করতে বারণ করে।বড় ছেলে বাজারে একটা দোকানঘর নেওয়ার কথা ভাবতে থাকে।

যথারীতি অন্যদিনের মতোই বড় ছেলে সব্জি নিয়ে বের হয়।ছোট ছেলে জাল নিয়ে বের হয় মাছ ধরতে। ছোটছেলের মাছ ধরার জালে ধরা পড়ে হাঙর মাছ।সেটাকে কি করবে বুঝতে পারে না।
সেটাকে নিয়ে বাজারে বেচতে যায়। যাওয়ার পথে হাঙরটি মারা যায়। নৌকায় তুলতেই সে বুঝতে পারে এই হাঙর মাছটি অন্তঃসত্ত্বা। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যায় মাছটি। ওই হাঙর মাছের পেট কাটার সিদ্ধান্ত নেয় সে। কিন্তু পেট কাটতেই আঁতকে ওঠে সে। বেরিয়ে আসে বিকট দেখতে এক জীব। খানিকটা মানুষের মতো দেখতে। গোল গোল দুটি চোখ। তবে নাক নেই। ঠোঁট, দাঁত মানুষের আদলে। তবে বাকি অংশটি হাঙর মাছের মতোই।তা দেখতে বাজারে হৈচৈ পড়ে যায়।খবর যায় মৎস বিভাগে।তারা এসে জ্যান্ত হাঙর মাছের বাচ্ছাটাকে পঞ্চাশহাজার টাকা দিয়ে কিনে নিয়ে যায়। সেই টাকা মায়ের পরামর্শে ব্যাঙ্কে জমা রাখা হয় লক্ষ্মীর পড়াশোনার খরচ বাবদ।

পাঁচ বছর পর সেই টাকা সুদ সমেত লক্ষাধিক টাকা হয়।সেই টাকা দিয়ে লক্ষ্মী এখন মেডিকেল পড়ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *