রোজ আমি রেললাইনের ধারে রেললাইনের কাছে যাই
সন্ধ্যেবেলা। খানিক দাঁড়াই,
আশেপাশে দৃষ্টি মেলে দেখি কী কী আছে-
বনকুসুমের শোভা, ঝোপঝাড়, কতিপয় গাছে
গহনতা কী নিবিড় উপবিষ্ট; এখানে এসেছি কতবার,
অথচ কখনো কোনো রেলগাড়ি আসা কি যাবার
সময়ে দেখি নি। শুধু রেললাইনের খাঁ খাঁ ভাব বুকে নিয়ে
ফিরে গেছি একা একা। জায়গাটা বিলিয়ে
যাচ্ছে ক্রমাগত স্তব্ধতার কাশফুল। একজন খর্বকায়
লোক স্যুটকেশ হাতে আস্তে হেঁটে যায়
রেললাইনের পাশে, পেছনে পেছনে কে রমণী রূপ
জ্বেলে পথ চলে কেমন নিশ্চুপ।
ভাবি, ওরা কে জানে কোথায়
যাবে, হয়ত কিছু পরে হঠাৎ হারিয়ে যাবে ঘন কুয়াশায়।
এখানে কে আসতে বলেছিল এ বেলাশেষে
এরকম জনহীনতায়, যেখানে প্রায়শ ভেসে
আসে পথ হারানোর সুর,
যেখানে নিঠুর
দরদী সে কবে চাবি ফেলে চলে গেছে অন্তরালে?
আমি মুক্তো খুঁজি মজা খালে।
পরকীয় প্রেমের মতই কষ্ট বুকে লেগে থাকে;
কিছু স্মৃতি ভেসে ওঠে, জলজ উদ্ভিদ যেন। আর্ত পাখি ডাকে
বারবার; আমার কি কোথাও যাবার নেই? ফিরে
আসা কাছে শুধু এক নির্জন কুটিরে,
যেখানে ক্ষতের মতো বাতি
জ্বলে, কারো পদধ্বনি শোনার আশায় কান পাতি
কী উদ্গ্রীব। একদিন ট্রেনের শব্দ কানে
আসে, ছুটে গিয়ে দেখি রেললাইনের চিহ্ন নেই কোনোখানে।