Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » রামধনু || Purabi Dutta

রামধনু || Purabi Dutta

রামধনু (সাহিত্যরসে আকাশ-বিজ্ঞান ও পুরাণ)

বলা হয় সাতরঙা রঙিন  রামধনু ।

আবাল বৃদ্ধ বনিতা রামধনুকে দেখে কে খুসী না হন– শুধুমাত্র  লেখক সুকুমার  রায় জানতেন এক খুঁত ধরা বুড়োকে, যিনি বলেছিলেন। ” দেখছো কি? ঐ রঙ পাকা নয় বটে!” ঠিক, কি করেই বা পাকা  হবে? রামধনু কিন্ত  রামের ধনু নয়— রাম শব্দ– রামায়ণের দশরথ- কৌশ্যলা পুত্র ব্যতীত  আর এক অর্থ বিশাল বা বৃহৎ যেমন — রামশিঙা,  রামদাঁ, রামধোলাই, রামধাক্কা, রামছাগল, রামপাখি, রামশালিক , রামবাটি, রামঘড়া, রামগড়,  রামগিরি, রামদিঘী, রামবিলাস, রামখিলান, রামচিমটি , রামগিঠ ইত্যাদি। তাই আকাশের ঐ “রামধনু” রামের ধনু নয়, এ হলো বিশালাকার  এক ধনু, তাই রামধনু। যদিও এর আর এক নাম পুরাণগতে ইন্দ্রের ধনু বা “ইন্দ্রধনু”।
পুরাণ  কথায় পরে আসছি আর ইংরেজীতে — ” রেইনবো”। পরিষ্কার  বৃষ্টির সাথে জড়িত  বলেই কি? হ্যাঁ, এক আধলা বৃষ্টির পর হলেও হয়, তবে মেঘের সাথে সম্পর্ক  আছে বই কি। এ বিশাল রঙিন ধনু দেখা যায় সকালবেলা  পশ্চিমাকাশে  আর অপরাহ্নে পূবাকাশে। এর অন্যথা হতে পারে না পরপর থাকতে হবে খোলা গগনে পশ্চিম দিক–সূর্য / মেঘ — ধনু পূর্ব দিকে,  অপরাহ্নে। পূর্বদিক—সূর্য /মেঘ— ধনু পশ্চিম দিকে, প্রাতঃকালে। এ নিয়মের বৈজ্ঞানিক  ব্যাখ্যা একটু সরলভাবে  দিয়ে নি। আমাদের  আলোক বেশিরভাগই  অদৃশ্য অর্থাত  সে আলোকে কিছ আমাদের  চোখের লেন্সে ধরা পড়ে না। ছোট থেকে বড়ো নানা তরঙ্গ দৈর্ঘ্য ক্রমাগত এসেই যাচ্ছে,যেমন সবচেয়ে ছোট তরঙ্গদৈর্ঘের আলো‐-৵(গামা) Ray, X-Ray, তারপর  ultraviolet. তারপর দৃশ্যালোক বলা হয় visible range, আর পরেও বড়ো দৈর্ঘ্যের Infrared ,  Radar waves. Micro waves, television waves. Radio waves ELF  waves ইত্যাদির  তরঙ্গদৈর্ঘের মেলা পর পর আছে। এই ছোট্ট এক পরিমান পরিসরে  ভিসিবিল আলো  নিয়েই আমরা তৃপ্ত  সূর্যালোকে। সাদা এই সূর্যালোকে  আছে সাতটি রঙ। Violet, Indigo, Blue, Green, Yellow , Orange, Red তাই ইংরেজীতে এ সাতরঙ  হলো “VIBGYOR” এদের  একসাথে মিশ্রনে রঙ হয় সাদা। বেগুনি, গাঢ়নীল, নীল,সবুজ ,হলুদ,কমলা,লাল ।

380 nm থেকে 740nm, তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলো  থাকে দৃশ্যালোকে। বিশিষ্ট   আলোতে কণা আর তরঙ্গ এই দুই বৈশিষ্ট্যই বিদ্যমান। এই ভিন্ন ভিন্ন  রঙ  সাদা আলোক  থেকে  বিচ্ছিন্ন  হয়ে প্রতিভাত   যখন প্রতিফলিত ও প্রতিফলিত হয় আর রং প্রতিভাত হয় নির্দিষ্ট আলোক-তরঙ্গে।

দৃশ্য  সাদা আলো সাতটি ভিন্ন ভিন্ন তরঙ্গ দৈর্ঘ্যে প্রতিভাত  হয় যখন কোন Prism. এর মধ্য দিয়ে পাড় হয় । তেমনই  এক ক্ষুদ্র  জলকণার মাধ্যমেও হতে পারে যদি তা prism এর কাজ করে, সম্ভাবনার উপর নির্ভর তাই কখন হবে জানা থাকে না।

সাতটি রঙ থাকলেও উজ্জ্বল ভাবে প্রকাশ পায় তিনটি রঙ উপরে লাল তারপর হলুদ  ও সবুজ। সবসময়ই গোলাকার– জলকণা গোল বলে , অর্ধবৃত্তাকার  কারণ বাকি অর্ধেক  স্থলে যা দেখা যায় না,প্রতিহত হয়। অনেকসময় দ্বিতীয়  প্রতিফলনের ফলে দুটি রামধনু দেখা যায়,তখন রঙ হয় বিপরীত সবুজ হলুদ ও লাল। বিজ্ঞানের  অবদানের কারণ জানলেও প্রকৃতির অলৌকিকতা মুগ্ধ  করে ক্ষণে  ক্ষণে।

হিন্দু পুরাণে এ রামধনু হলো দেবতা ইন্দ্রর যিনি  বজ্র বিদ্যুৎ ও  সমরের প্রতীক। শায়ক দিয়ে উদ্ধত বজ্রর ক্ষমতাকে দমিত করা, তাই তার নাম “ইন্দ্রধনু”।

প্রায় এমনই  ধারণা ছিল প্রাক্ ইসলামিক আরবেও, সেখানেও ঋতু দেবতা Quzah  এ ধনু ব্যবহারে সমৃদ্ধ আর রামধনুকের নাম “the bow of Quzaḥ” প্রাচীনকালে সর্বত্রই নানা কিম্বদন্তী জড়িয়ে আছে আকাশের এই অসামান্য অর্ধ গোলাকার ধনুক সদৃশ দৃশ্য চিত্রের উদ্ভবের। সবর্ক্ষেত্রেই  এ কোন না কোন শুভবুদ্ধি দেবতার হাতিয়ার কল্পনায় আনন্দকর অনুভূতি। বর্তমানে বৈজ্ঞানিক  কারণ জেনেও মুগ্ধ বিস্ময়ে আমরা অভিভূত হয়ে থাকি ও আলোক  চিত্রে রামধনুকে  ধরে রাখি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress