রাখে হরি মারে কে
এক সন্ধ্যায় তিন পড়ুয়া যুবক সৌরভ পালধি, চন্দন পাল ও কৌশিক পাত্র নেতাজি মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে সাইকেলে বাড়ীর দিকে রওনা হয়।সেদিন অবিরল বর্ষণধারা নেমেছিল।কোনা ভেড়ির কাছে আসতেই সামনে ঝোপের থেকে কান্না ভেসে এলো।কার কান্না? এ যে কচি বাচ্চার! সাইকেল থেকে নেমে কাঁটা ঝোপের থেকে নিরাবরণ শিশুটিকে বার করে। কোমলাঙ্গে কাঁটার আঁচড়, হাতের আঙ্গুলে লাল পিঁপড়ের ঘোরাঘুরি। ঐ তিনজন বাচ্চাটিকে নিয়ে স্থানীয় ক্লাবে এলে মাতব্বরেরা একসঙ্গে বলে,পুলিশে খবর দিন। তৎক্ষণাৎ ওরা অসুস্থ শিশুকে নিয়ে পুলিশের বদলে কোনা হাসপাতালে আনে।কিন্তু পুলিশ যথারীতি খবর পেয়ে এখানেই এলো। পুলিশের বড়বাবু শুধোয়, তোমাদের নাম, ঠিকানা, দূরভাষ নাম্বার জানিয়ে ঘটনাটি সংক্ষেপে বলো। সব টুকে পুলিশ চলে যাবার পর বাচ্চার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হয়।চটজলদি ওরা শিশুটিকে নিয়ে হাওড়ার আরেক হাসপাতলে এলো। সৌরভ জানায়, পরীক্ষায় কচি শরীরে জণ্ডিস ধরা পড়েছে।তাদের ভাবনায় তখন, ঐ শিশুটি হয়তো আর বাঁচবে না। তবুও চিকিৎসকদের নিরলস প্রয়াসে শিশুটি আরোগ্যলাভ করে। ওখানেই চাইল্ড লাইনের এক ভদ্রলোক জানায়, চাইল্ড ওয়েলফেরার কমিটির নির্দেশে শিশুটিকে হোমে রাখাই উচিত। হোমে আনার পরই ঐ অসুস্থ বাচ্চাটি ক্রমে ক্রমে আরো সুস্থতা লাভ করে।হোমেই এখন সেই পাঁচদিনের শিশুটির আস্তানা।হোম-কর্তৃপক্ষ অপেক্ষায়,যদি কোনো নিঃসন্তান দম্পতি ঐ অনাথ বাচ্চার দায়িত্ব নিয়ে মহাপুণ্যের কাজটি করে।