Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » রত্নগর্ভা (১৯৯৪) || Samaresh Majumdar » Page 5

রত্নগর্ভা (১৯৯৪) || Samaresh Majumdar

গুলশন একটি বর্ধিষ্ণু অঞ্চল। নতুন ঢাকার পথঘাট, বাড়ি যে-কোনও সুন্দর বিদেশি শহরের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে। ইউসুফভাইয়ের বাড়িটিকে জলপাইগুড়িতে অত্যন্ত বড়লোকের বাড়ি বলা হবে, কিন্তু ইউসুফভাই বললেন, ঢাকায় আমি একটি সাধারণ লোক। ওঁর স্ত্রী অত্যন্ত মিশুকে এবং অতিথিপরায়ণ মানুষ। একমাত্র ছেলে আশীব্ৰত ক্লাস এইটে পড়ে এবং ইতিমধ্যেই কাকাবাবু এবং সন্তুর ফ্যান হয়ে গেছে। রাত্রে সুন্দর বিছানায় শুয়ে অর্জুন ভাবল, ইউসুফভাইরা নিশ্চয়ই ব্যতিক্রম। প্রায়-অচেনা একজনকে এমন যত্ন করে বাড়িতে নিয়ে আসাটা তার চোখে স্বাভাবিক বলে মনে হচ্ছিল না।

সে এখন বিদেশের মাটিতে। অথচ একবারও নিজেকে বিদেশি বলে মনে হচ্ছিল না। এদের বই-এর র্যাকে বঙ্কিমচন্দ্র থেকে বুদ্ধদেব গুহর বই সাজানো। আশীব্ৰত এখানকার দুজন লেখকের বই দেখিয়ে তাকে বলেছে বাংলাদেশে ওঁরা খুব জনপ্রিয়, অথচ সে পশ্চিমবঙ্গে বসে ওঁদের নাম শোনেনি। একজন হলেন, হুমায়ুন আহমেদ, অন্যজন ইমদাদুল হক মিলন। রাস্তাঘাটে যেসব সাইনবোর্ড লাগানো, তার একটাতেও ইংরেজি শব্দ নেই। হঠাৎই মনে হয় বাংলা ভাষার রাজত্বে চলে এসেছি।

কিন্তু তা তো হল। অর্জুন চোখ বন্ধ করল। যে কাজে এখানে আসা, সেটা কীভাবে শুরু করা যায়! নুটুবিহারীর কালীগঞ্জের বাড়িতে ইতিমধ্যে কাজলবাবু পৌঁছে গিয়েছেন কি না তা তার জানা নেই। যদি চিঠির কথা সত্যি হয় এবং কাজল ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়ে থাকে, তা হলে তার পক্ষে গুপ্তধন উদ্ধার করা কতদূর সম্ভব, তাও সে আন্দাজ করতে পারছে না। কাকতালীয়ভাবে এ. বি. ঘোষের সঙ্গে আলাপ হয়েছে, যাঁর বাড়ি কালীগঞ্জে। পবনবিহারী বলেছিলেন কালীগঞ্জ থেকে জনৈক বিমানবিহারী তাঁর কাছে টাকার জন্য অনেকদিন আগে গিয়েছিলেন। তিনি এখন কালীগঞ্জে আছেন কি না তাও তিনি জানেন না। এই এ. বি.-ই বি.বি.-র কেউ হতে পারেন। কিন্তু এখনই কালীগঞ্জে যাওয়া দরকার এসব জানার জন্য। কিন্তু কীভাবে যাওয়া যায়? এখন পর্যন্ত সে ইউসুফভাইকে তার পেশার কথা জানায়নি। জানালে তিনি কতটা সাহায্য করবেন, সে ব্যাপারে সন্দেহ আছে। সত্যসন্ধানীকে যদি তিনি গোয়েন্দা বলে ভুল করেন, তা হলে দেশের মাটিতে বিদেশি গোয়েন্দাকে সাহায্য করতে নিশ্চয়ই ইতস্তত করবেন। হোটেলে থাকলে এসব ভাবতে হত না। খোঁজখবর নিয়ে সে ঠিক কালীগঞ্জে পৌঁছে যেতে পারত।

সকালবেলায় নাস্তা খেতে টেবিলে বসে অর্জুনের চক্ষু চড়কগাছ। এই সাড়ে সাতটার সময় সবাই পরোটা, মাংস, তরকারি খাচ্ছেন। অর্জুনের এ-সময় এত খাওয়ার অভ্যেস নেই। অনেক অনুরোধ করার পর সামান্য খেয়ে মুক্তি পাওয়া গেল। টেবিলে দুটো খবরের কাগজ। একটি ইত্তেফাক, অন্যটি আজকের কাগজ। অর্জুন আজকের কাগজে চোখ বোলাচ্ছিল।

ইউসুফভাই বললেন, আজ আপনি ঢাকা শহর দেখুন। লাঞ্চের পর আমি ফ্রি। ততক্ষণ আপনাকে আমার ড্রাইভার ঘুরিয়ে দেখাবে।

অর্জুন বলল, ঢাকা পরে সময় থাকলে দেখব।

তার মানে? আগে কী কাজ আপনার?

প্রশ্নটা কানে যেতে অর্জুন সতর্ক হল। ইউসুফভাই এবং সে ছাড়া ঘরে আর কেউ নেই এখন। মানুষটি ভাল। এঁকে সব কথা খুলে বলা দরকার। অর্জুন বলল, আপনাকে আমি আমার এখানে আসার কারণটা বলতে চাই। তারপর যদি আপনার মনে হয় আপনি আমাকে কোনও হোটেলে পৌঁছে দিলে খুশি হব। আমি একজন সত্যসন্ধানী।

সে তো জানি। শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যোমকেশ বক্সি আমার খুব প্রিয় সত্যসন্ধানী। কিরীটি রায়কে আগে ভাল লাগত, এখন লাগে না। তার চেয়ে ফেলুদা দারুণ ইন্টারেস্টিং ছিলেন, কাকাবাবুরও তুলনা হয় না। প্রতিবন্দ্বী মানুষ।

আপনি যাঁদের কথা বলছেন, তাঁরা বইয়ের চরিত্র। অর্জুন বাধা দিল।

তা অবশ্য। ইউসুফভাই হাসলেন, ট্রাভেল এজেন্টের কাছে আপনার পরিচয় পেয়ে প্রথমে ঠিক বিশ্বাস করতে পারিনি। বয়স তো খুবই কম। ভাল লাগল সেই কারণেই।

অতএব আর কোনও বাধা রইল না। অর্জুন ভদ্রলোককে তার ঢাকায় আসার কারণ বলল। গুপ্তধনের ব্যাপারটা সে বলল এই ভাবে, ওই বাড়ির কোথাও নুটুবিহারী ঘোষ তাঁর সোনাদানা লুকিয়ে রেখে গিয়েছিলেন। কাজল অত্যন্ত লোভী এবং অসৎ ছেলে। সে লুকিয়ে চলে এসেছে ওগুলো হাতাবার জন্য।

ইউসুফভাই চিন্তিত হলেন, একজন বাইরের লোকের পক্ষে গ্রামে গিয়ে সন্ধান করা খুবই কঠিন কাজ, যদি না ভেতরের কেউ ওকে সাহায্য করে। সেটা দু-চারদিনে সম্ভব নয়।

নিশ্চয়ই। আপনি আমাকে একটা দিন সময় দিন। দেখি, কোনও যোগাযোগ বের করতে পারি কি না। ইউসুফভাই উঠে দাঁড়ালেন। তাঁর কাজে যাওয়ার সময় হয়ে গিয়েছে।

একটা ঢাউস গাড়ির আরামদায়ক গদিতে বসে ঢাকা শহরটাকে দেখল অর্জুন, সেই সকালবেলায়। সুন্দর-সুন্দর বাড়ি, তাদের নামকরণও চমৎকার। কিন্তু রাস্তায় এত রিকশার ভিড় যে, সতর্ক হয়ে না চালালে অ্যাকসিডেন্টের সম্ভাবনা বেশি। ট্রাম নেই, বাস খুব কম, মানুষকে নির্ভর করতে হচ্ছে রিকশার ওপরেই। তাদের সংখ্যা কত হবে কে জানে! হাজার-হাজার বিদেশি গাড়ি আর দিশি রিকশা ঢাকার রাজপথ দখল করে রেখেছে।

শান্তিবাগ হয়ে পল্টনের মোড়ের কাছে এসে অর্জুন দেখল, হোটেল প্রীতম লেখা একটা বাড়ি থেকে কালকের এয়ারপোর্টে দেখা সেই প্রযোজক ভদ্রলোক বেরিয়ে আসছেন একা। ভদ্রলোক যেন একটু অন্যমনস্ক। হোটেলটা কি ওই ভদ্রলোকের? ফুটপাতের পাশ ঘেঁষে পার্ক করা বিদেশি গাড়িতে ভদ্রলোক ওঠা-মাত্র সেটা অর্জুনের বিপরীত দিকে চলে গেল। কোনওভাবেই ওঁকে অনুসরণ করা সম্ভব নয়। এই ভদ্রলোকের সঙ্গে এ. বি. ঘোষের কোনও গোপন ব্যাপার আছে। ওঁকে অনুসরণ করলে কোন লাভ হবে, তা অর্জুনের জানা নেই, কিন্তু মন বলছিল হয়তো কেঁচো খুঁড়তে-খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে গেলেও যেতে পারে। ওদের গাড়ি সিগন্যালে দাঁড়িয়ে ছিল। সে ড্রাইভারকে বলল, সামনে থেকে ঘুরিয়ে নিয়ে হোটেলের সামনে যেতে। ভদ্রলোক চলে গেলেও হোটেলের রিসেপশনে খোঁজখবর নেওয়া যেতে পারে।

গাড়ি থেকে নেমে সিঁড়ি ভেঙে হোটেলে ঢুকেই ডান হাতে আটপৌরে রিসেপশন কাউন্টার নজরে আসতেই বোঝা গেল এটি কোনও অভিজাত শ্রেণীতে পড়ে না। রিসেপশনের ছেলেটি তাকে জিজ্ঞেস করল, বলুন সার। কী সাহায্য করতে পারি?

আপনাদের এখানে রুম পাওয়া যাবে?

একটা সিঙ্গল-রুম খালি আছে। তিনশো টাকা।

বাঃ, ভাল হল। আমি একটু অপেক্ষা করতে পারি? আমার এক বন্ধু আসবেন কিছুক্ষণের মধ্যে। তাঁর সঙ্গে একজন প্রযোজকের এখানে অ্যাপয়েন্টমেন্টও আছে।

প্রযোজক? রাজুভাই? তিনি তো একটু আগে চলে গেলেন।

সে কী! কোথায় গেলেন?

তা তো জানি না। হয়তো বাসায় গেছেন।

কোথায় বাসা ওঁর? সরল গলায় জিজ্ঞেস করল অর্জুন।

মালিবাগে।

হঠাৎ ওপরের সিঁড়িতে চোখ পড়তেই অর্জুন অবাক! এ. বি. ঘোষ নেমে আসছেন, পরনে লম্বা ঝুলের পাঞ্জাবি। অর্জুন হাসল, আবার দেখা হয়ে গেল।

আপনি এখানে?

জায়গা আছে কি না, খোঁজ করছিলাম।

কোথায় উঠেছেন?

ইউসুফভাইয়ের বাড়িতে।

সেখানে অসুবিধে হচ্ছে?

না, না। আসলে কারও বাড়িতে থাকতে সঙ্কোচ হয়।

ইন্ডিয়ান হ্যাবিট। এ. বি. ঘোষ রিসেপশনিস্টকে প্রশ্ন করলেন, রুম নাই?

আছে। অদ্ভুত উচ্চারণে জবাব দিল ছেলেটি। এই হোটেলের খোঁজ পেলেন কী করে?

রাস্তায় যেতে-যেতে সাইনবোর্ড চোখে পড়ল। অর্জুন হাসল, গ্রামে কবে যাচ্ছেন?

গ্রামে? ও। আপনার তো গ্রাম দেখার সাধ আছে। চলে যান কালীগঞ্জে। গিয়ে বিমানবিহারী ঘোষের সঙ্গে দেখা করবেন। সঙ্কোচ না হলে দু-তিনদিন থাকার কোনও অসুবিধে হবে না। দু-তিনদিন বাদে অবশ্য একটা শু্যটিং-পার্টি যাবে সেখানে। সেটাও দেখতে পারেন। এ. বি. ঘোষ বেরিয়ে গেলেন।

অর্জুন কিছুক্ষণ সময় কোনওমতে কাটিয়ে ঘুরে আসছি বলে বেরিয়ে এল হোটেল থেকে। বিমানবাহিরীকে চেনেন এ. বি.। এখন আর কোনও সন্দেহ নেই, ইনিও ওই পরিবারের একজন, অথচ নিজের পুরো নামটা বললেন না। প্রীতম হোটেলে এ. বি. রায় কী করছিলেন? প্রযোজক কি তাঁর সঙ্গে কথা বলতেই হোটেলটাকে বেছে নিয়েছিলেন? রিসেপশনিস্টের কথাবার্তায় বোঝাই যায় ওখানে ওঁদের যাতায়াত আছে। এ. বি. ঘোষের বাড়ি বনানীতে, প্রযোজকের মালিবাগে, অথচ দুজনে দেখা করছেন প্রীতম হোটেলে এসে। যাক গে! কালীগঞ্জে পৌঁছবার একটা সূত্র তো পাওয়া গেল। এই সময় ড্রাইভার বিড়বিড় করে কিছু বলতেই অর্জুন জিজ্ঞেস করল, কী হয়েছে ভাই?

দ্যাখেন না ছার, টয়েটো গাড়িটা তখন থেকে পেছনে লেগেই আছে।

অর্জুন মুখ ঘুরিয়ে গাড়িটাকে দেখল। সাদা গাড়ি, ড্রাইভার একা। ওদের গাড়ি যেদিকে ঘুরছে, ওটাও পেছন পেছন আসছে। হঠাৎ অর্জুনের ড্রাইভার গাড়ি থামিয়ে দিল। সঙ্গে সঙ্গে পেছনেরটাও থেমে গেল। ড্রাইভার দরজা খুলে পেছনের দিকে গেল, কী মিঞা, মতলবখান কী, কন তো? পিছনে লাইগ্যা আছেন ক্যান?

অন্য গাড়ির ড্রাইভার বলল, রাস্তা তো কারও বাপের সম্পত্তি না।

গজগজ করে ফিরে এল ড্রাইভার, কে গুন্ডা, কে ভালমানুষ, আজকাল বোঝাই যায় না? চলেন ছার, বাসায় যাই।

চলুন। অর্জুন বলল। ওই গাড়িটাকে কি কেউ তাকে অনুসরণ করতে পাঠিয়েছে? তা যদি হয়, তা হলে ওর তো নিজেকে আড়ালে রাখার কথা। এমন গায়ে পড়ে কেউ অনুসরণ করে? কিন্তু দেখা গেল ইউসুফভাই-এর বাড়ির দরজা পর্যন্ত দ্বিতীয় গাড়িটা পেছন ছাড়ল না। ওরা ভেতরে ঢোকার পর গাড়িটা বেরিয়ে গেল। অর্জনের মনে হল, গাডিটাকে এ. বি. ঘোষ পাঠাননি তো? পাঠানোর অর্থ, ওঁর মনে অর্জুন সম্পর্কে সন্দেহ এসেছে। সাধারণ জীবনযাপন করেন যে সমস্ত মানুষ, তাঁদের মনে এমন সন্দেহ হুট করে আসে না।

লাঞ্চের আগে ইউসুফভাই ফিরে এলেন, কেমন ঘুরলেন অর্জুনবাবু?

আপনি আমাকে তুমি বলবেন, আর বাবুটা ছাড়ুন।

ঠিক আছে, ঠিক আছে।

অর্জুন ওঁকে সকালের অভিজ্ঞতাটা জানাল।

তোমার ওই হোটেলে যাওয়াটা ঠিক হয়নি। আমার এখানে কি খুব। অসুবিধে হচ্ছে?

বিন্দুমাত্র নয়। আমি ঘর খুঁজতে প্রীতম হোটেলে যাইনি।

তা হলে তো কারও ভুল হল। এই লোকগুলো অত্যন্ত ডেঞ্জারাস ধরনের। আর এদের জন্য তো বাংলাদেশে আসোনি। আমাকে ভুল বুঝে না। ওই প্রযোজকের নাম রাজউদ্দিন আহমেদ। লোকে রাজুভাই বলে। ডাকে। পর-পর দুটো ছবি মার খাওয়ার ফলে লোকটা এখন আকণ্ঠ ঋণগ্রস্ত। তৃতীয় ছবিটা শুরু করছে ধার করে। এটাও যদি না চলে, তা হলে আত্মহত্যা। অথবা বাংলাদেশ ছেড়ে পালানো ছাড়া ওর কোনও পথ নেই। এসব কথা আমার এক চিত্রসাংবাদিক বন্ধুর কাছে শুনতে পেলাম। এ. বি. ঘোষের কথা ভাল করে কেউ জানে না। হয়তো লোকটা টাউট, রাজুভাইকে টাকা জোগাড় করে দিচ্ছে। ঢাকার অনেককেই বাইরে থেকে দেখে বোঝা যায় না কার পকেট ভর্তি, কার শুন্য।

কিন্তু ওরা যে আমার খবর জানার জন্য প্রকাশ্যে পেছনে আসবে, তা ভাবিনি।

তা হলেই বোঝো।

কিন্তু একটা ব্যাপারে লাভ হল তো।

কী ব্যাপারে?

ওই বিমানবিহারীর কাছে পৌঁছনো যাবে।

হয়তো। আবার ওটা বিপদও তো ডেকে আনতে পারে।

মানে?

আমরা জানি না বিমানবিহারীর সঙ্গে এ. বি. ঘোষের সম্পর্ক কী ধরনের। ওঁর পরিচয় নিয়ে ভদ্রলোকের কাছে গেলে তিনি ভাল চোখে না-ও দেখতে পারেন। আমরা বিমানবিহারীর কাছে যাচ্ছি না। আমি অন্য সুত্র পেয়েছি।

কীরকম?

আমার এক বন্ধুর নাম সাহাবুদ্দিন। তাঁর প্রেস আছে, বই ছাপে। চিত্রসাংবাদিক বন্ধুটি আমাকে বলল সাহাবুদ্দিনের বাড়ি ওই কালীগঞ্জে। কর্মচারী ছাড়া কেউ নেই ওখানে। তার দেশের বাড়িতে বেড়াতে যেতে চাই শুনে সে খুব খুশি।

কবে যেতে পারি আমি?

আমি না ভাই, আমরা।

বেশ, তাই হোক।

আগামীকাল সকাল দশটায় সাহাবুদ্দিন তার গাড়ি নিয়ে আমার এখানে আসবে। ও জানে তুমি একজন সাধারণ টুরিস্ট। এর বেশি ওর জানার দরকার নেই।

অর্থাৎ আজকের বিকেলটা ঢাকায় থাকতে হচ্ছে। অর্জুন ঠিক করল, বিকেলে বুড়িগঙ্গা দেখতে যাবে। পুরনো ঢাকাকে দেখতে হবে।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress