Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » রঘু ডাকাত : পুণ্যের জয় হইল (দ্বিতীয় খণ্ড) || Panchkari Dey » Page 17

রঘু ডাকাত : পুণ্যের জয় হইল (দ্বিতীয় খণ্ড) || Panchkari Dey

পরদিন প্রাতঃকাল হইতে বেলা দুইটা পৰ্যন্ত রায়মল্ল সাহেব কোথায় রহিলেন, কি করিলেন, তাহার কিছুই স্থিরতা রহিল না। তাহার সমস্ত বন্দোবস্ত ঠিক হইলে, তিনি জগৎসিংহের বাটিতে উপস্থিত হইলেন।

জগৎসিংহ বৈঠকখানায় বসিয়া দুই—একজন অনুচরের সহিত গত রজনীর সমস্ত কথা আন্দোলন করিতেছিল, এবং কি উপায়ে সকল দিক্ রক্ষা হয়, সেই সম্বন্ধে একটা পরামর্শ স্থির হইতেছিল।

রায়মল্ল সাহেব উপস্থিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “জগৎসিংহ কার নাম?”

তিনি যে জগৎসিংহকে চিনিতে পারেন নাই, তাহা নয়; তথাপি কেন যে এরূপ ভাবে প্রশ্ন করিলেন, তাহা তিনিই জানেন্।

জগৎসিংহ সন্দিগ্ধচিত্তে জিজ্ঞাসা করিল, “কেন মহাশয়! আপনার কি আবশ্যক? আপনার নাম?”

রায়মল্ল সাহেব গম্ভীরভাবে উত্তর প্রদান করিলেন, “আমার নাম? আমার নাম রায়মল্ল। আমি গোয়েন্দাগিরি কার্য্য করি। সরকারী লোকে আমায় সর্দ্দার রায়মল্ল নামে ডাকে, আর সকলে রায়মল্ল গোয়েন্দা বলে।”

জগৎ। কি উদ্দেশ্যে এখানে আপনার পদার্পণ হয়েছে?

রায়মল্ল। আমি আপনার বিষয়-সম্পত্তি ক্রয় করতে এসেছি।

জগৎ। আমাদের বিষয়-সম্পত্তি এক টুকরাও বিক্রয়ের জন্য নাই। এ ছাড়া যদি আপনার অন্য কোন উদ্দেশ্য না থাকে, আপনি সোজা পথ দেখতে পারেন।

রায়মল্ল। আমি মহাশয়ের নিকটে অনুগ্রহপ্রয়াসী নই! বিষয়-সম্পত্তি বিক্রয় করবার জন্য আপনাকে অনুরোধ করতে আসি নাই। আপনাকে বাধ্য হ’য়ে বিক্রয় করতে হবে, তাই জানাতে এসেছি।

জগৎ। দেখুন, আপনি মনে রাখবেন যে, আপনি আমার বাড়ীতে দাঁড়িয়ে কথা কহিতেছেন। আমি ইচ্ছা করলে এখনই আপনাকে এখান থেকে বিদায় ক’রে দিতে পারি।

রায়মল্ল সাহেব রুষ্টভাবে কহিলেন, “এ বাড়ী আপনার নয়। আইন মতে এ বাড়ীর একখানি ইষ্টক আপনার প্রাপ্য নয়।”

এই কথা বলিয়াই রায়মল্ল সাহেব একটি ছোট বাঁশী পকেট হইতে বাহির করিয়া বাজাইলেন। তৎক্ষণাৎ একজন লোক সেই ঘরের ভিতর প্রবেশ করিল। সেই লোকটিকে দেখিয়াই জগৎসিংহ চমকিয়া উঠিল। রায়মল্ল তাহাকে দেখাইয়া কহিলেন, “এই লোকটিকে দেখে মনে পড়ে কি, অভাগিনী তারাকে বর্দ্ধমানে বিসর্জ্জন দেওয়ার মূলই আপনি?”

জগৎসিংহ বলিল, “মিথ্যাকথা! ওকে আমি কখনও চিনি না, কখনও দেখি নাই।”

রায়মল্ল সাহেব আবার বংশী ধ্বনি করিলেন। তৎক্ষণাৎ আর একটি বৃদ্ধলোক সেই ঘরে আসিয়া দাঁড়াইল। জগৎসিংহ তাহাকে দেখিয়াই রক্তবর্ণ চক্ষে জিজ্ঞাসা করিল, “এ কে? এ-ও কি তোমাদের ষড়যন্ত্রের একজন না কি?”

বৃদ্ধ মঙ্গল তৎক্ষণাৎ কহিল, “আজ আমায় চিনতে পারবে কেন? আর কি সে বৃদ্ধ মঙ্গল ব’লে মনে পড়ে? (ক্রোধে) চোর! বিশ্বাসঘাতক!“

জগৎসিংহ লম্ফ প্রদান করিয়া দাঁড়াইয়া মঙ্গলের নিকটে আসিয়া বলিল, “কি! আমার বাড়ীতে এসে তুই আমায় গালি দিচ্ছিস্? জুতো মেরে, গলাধাক্কা দিয়ে বার্ ক’রে দেবো, তা’ জানিস্, পাজী! বদমাস্!”

রায়মল্ল সাহেব জগৎসিংহের হাত ধরিয়া টানিয়া তাহাকে বসাইলেন। বলিলেন, “এত রাগ কেন গো মহাপ্রভু! একটু ঠাণ্ডা হ’য়ে ব’সে আমার কথাগুলোই আগে শোনা হ’ক্‌ না।”

জগৎসিংহ ক্রোধষায়িতলোচনে কহিল, “দেখ রায়মল্ল গোয়েন্দা, তুমি বাড়ী চড়াও হয়ে এসে একজন ভদ্রলোকের অপমান করছ, তা যেন মনে থাকে। আইনে তোমার দণ্ড হতে পারে, তা’ জান?”

রায়মল্ল সাহেব সহাস্যবদনে মৃদুমধুরস্বরে কহিল, “তা’ আর জানি না—মহাশয়ের চেয়ে আমার আইন-কানুন কিছু কম জানা নাই। আমি যে কাজ করছি, তার পূর্ব্ব পশ্চাৎ ভেবে তবে করছি। মহাশয় সে বিষয়ে নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন।”

তার পর সহসা রায়মল্ল সাহেব রুদ্রমূর্তি ধারণ করিয়া, দন্তে দন্ত ঘর্ষণ করিয়া ক্রোধভরে কহিলেন, “পাপিষ্ঠ! তুই এখনও সাহস ক’রে আমার সঙ্গে কথা কইছিস? চেয়ে দ্যাখ্! বোধ হয়, অলক্ষ্যে তারার মৃত পিতার আত্মা এইখানে আবির্ভূত হয়েছেন! তুই যার বিষয়-সম্পত্তি বিশ্বাসঘাতকতা ক’রে ভোগ-দখল করছিস্, তাকে কেমন ক’রে বিষ প্রয়োগে হত্যা করেছিলি, সে সকল কিরূপে এখন সপ্রমাণ হয় এবং তোর মত বিশ্বাসঘাতকের কি দণ্ড হয়, দেখার জন্য বোধ হয়, তিনি স্বৰ্গ থেকে নেমে এসেছেন। নারকি! এখনও তুই অস্বীকার করছিস্?”

রায়মল্ল সাহেব আবার বংশীবাদন করিলেন। এবার অজয় সিংহ ধীরে ধীরে সেই কক্ষে প্রবিষ্ট হইলেন।

জগৎসিংহ তাঁহাকে দেখিয়াই বলিল, “ওঃ! একে আমি খুব চিনি! এ একজন মস্ত ফন্দীবাজ জুয়াচোর! একটা জাল বালিকাকে খাড়া ক’রে আমার সঙ্গে মোকদ্দমা করতে এসেছিল। তা’ আদালতে তার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হ’য়ে গেছে। একে নিয়ে তোমরা ষড়যন্ত্র ক’রে আমায় ঠকাতেএসেছ? আমি তোমাদের স্পষ্ট ভাষায় সাদা কথায় বলছি, আমার কাছ থেকে ভয় দেখিয়ে তোমরা একটি কানাকড়িও আদায় করতে পারবে না!”

রায়মল্ল সাহেব পুনরায় বাঁশী বাজাইলেন। চারিজন প্রহরীবেষ্টিত, হাতে হাতকড়ি দেওয়া রঘু ডাকাত ও রাজারাম, সেই ঘরে প্রবেশ করিল!

রঘু ডাকাতকে এইরূপ বন্দীভাবে দেখিয়াই জগৎসিংহের সমস্ত রক্ত জল হইয়া গেল। সে নিরাশ হইয়া করুণকণ্ঠে কহিল, “একি রঘুনাথ! তুমিও আমার বিপক্ষে সাক্ষ্য দিতে এসেছ?”

রঘু ডাকাত উত্তর করিল, “দেখ জগৎসিংহ! আর তোমার বুকি খাবে না। এখনও মানে মানে যার বিষয় তাকে ফিরিয়ে দাও। রায়মল্ল সাহেবের পায়ে-হাতে ধর, যদি তাতে তোমার শাস্তির কিছু লাঘব হয়। তোমার জন্য আমার সর্বনাশ হয়েছে। তোমার কাজে হাত দিয়ে পর্য্যন্ত আমার এই দুৰ্দ্দশা। এখন আমি দায়ে প’ড়ে তোমার বিপক্ষে সাক্ষ্য দিতে দাঁড়িয়েছি। তারার স্বত্ব স-প্রমাণ করতে যে সব কাগজ আবশ্যক, সে সমস্তই আমি রায়মল্ল সাহেবের হাতে দিয়েছি। আর তোমাদের উদ্ধারের কোন উপায় নাই।

জগৎসিংহ ক্ষিপ্তপ্রায় হইয়া চীৎকার করিয়া কহিল, “সব জুয়াচুরী! কাগজ-পত্র দলিল দস্তাবেজ সব জাল! তোমরা সব ষড়যন্ত্র ক’রে আমায় মজাবার চেষ্টায় আছ।”

রায়মল্ল সাহেব বলিলেন, “দেখ, জগৎসিংহ, তোমার অদৃষ্ট নিতান্ত মন্দ, তাই তুমি আমার সঙ্গে এখনও চাতুরী করতে চেষ্টা করছ। তুমি জান না, আমি যে কাজে হাত দিই, তার আটঘাট না বেঁধে আমি কিছুই করি না। মনে ক’রো না, উপযুক্ত প্রমাণ সংগ্রহ না ক’রে আমি তোমার কাছে এসেছি। তুমি যদি এখন অস্বীকার কর, তা’হলে এই দন্ডেই আমার হুকুমে প্রহরীরা তোমার হাতে হাতকড়া লাগিয়ে, সদর রাস্তা দিয়ে কোতোয়ালীতে টেনে নিয়ে যাবে। এখনও বলছি, বিবেচনা ক’রে কাজ কর।”

জগৎসিংহ তখন কাঁদ-কাঁদ ভাবে জিজ্ঞাসা করিল, “আপনি কি করতে বলেন?”

রায়মল্ল। এই এত লোকের সাক্ষাতে তুমি কাগজ কলমে লিখিয়া যার বিষয় তাকে ফিরিয়ে দাও। ইহারা সকলে সাক্ষীও হবেন। যদি তাতে রাজী না হও, তা’ হলে তুমি এতদিন ধ’রে যত খুন ডাকাতি, জাল জালিয়াতী করেছ, সকল বিষয়েরই আদালতে তন্ন তন্ন করে বিচার হবে। তাতে শেষে কম পক্ষে তোমার যাবজ্জীবন কারাবাস দন্ড ভোগ করতে হবে।

জগৎসিংহ কহিল, “এ বিষয়ে একবার তারার বিমাতাকে জিজ্ঞাসা করা উচিত। আমি একবার বাড়ীর ভিতরে যেতে চাই। পালাব না, ভয় নাই।”

রায়মল্ল সাহেব হাসিয়া বলিলেন, “পালাবার কি উপায় রেখেছি, যে পালাবে? এ বাড়ী থেকে এখন একটি মাছি বেরিয়ে যেতে পারবে না। “

জগৎসিংহ বাড়ীর ভিতরে গিয়া তৎক্ষণাৎ বিষণ্নমুখে ফিরিয়া আসিল। রায়মল্ল সাহেব জিজ্ঞসা করিলেন, “এত শীঘ্র ফিরে এলে যে?”

জগৎসিংহ কহিল, “আর ফিরে এলেম! সর্ব্বনাশ হয়েছে—সর্ব্বনাশ হয়েছে! তারার বিমাতা বোধ হয়, আড়াল থেকে দাঁড়িয়ে এ সব কথা শুনে বিষ খেয়ে প্রাণত্যাগ করেছে। তার মৃতদেহ ঘরের মেজেয় প’ড়ে রয়েছে।”

অজয় সিংহ কহিলেন, “ভালই হয়েছে, তিনি খুব বুদ্ধির কাজ করেছেন। ভদ্রলোকের মেয়ের পক্ষে জেলখাটার চেয়ে মরাই ভাল। তার পাপের শাস্তি ইহলোকেই কতকটা হ’য়ে গেল, পরলোকে বাকীটা হবে, পাপিষ্ঠার আত্মহত্যায় দুঃখ করবার কোন কারণ নাই। “

এদিকে রায়মল্ল সাহেব যাহা লিখিতে বলিলেন, জগৎসিংহ কলের পুত্তলিকাপ্রায় তাহাই লিখিল। তখন সেই ঘরে যে কয়জন লোক বসিয়াছিল, তাহারাও তাহাতে দস্তখৎ করিল। এমন কি রায়মল্ল সাহেব আসিবার পূর্ব্বে জগৎসিংহের সহিত যে কয়জন তাহারই অনুচর বসিয়া ছিল, বাধ্য হইয়া তাহারও সাক্ষীর তালিকায় নাম স্বাক্ষর করিল।

আপনার কার্য্য শেষ করিয়া রায়মল্ল গোয়েন্দা, জগৎসিংহ ও তাহার অনুচরগণকে এবং রঘু ডাকাত ও রাজারামকে যথারীতি চালান দিলেন।

রঘু ডাকাতকে এরূপভাবে না পাইলে রায়মল্ল সাহেব তারার স্বত্ব প্রমাণ করিতে পারিতেন কি না সন্দেহ? তাহার নিকট যে সকল কাগজপত্র ও দলিল-দস্তাবেজ ছিল, সে সকল না পাইলে তারার স্বত্ব প্রমাণ করিতে রায়মল্ল গোয়েন্দাকে অধিক কষ্ট স্বীকার করিতে হইত। প্রথমে রঘু ডাকাত, রায়মল্ল সাহেবের কথায় সম্মত হয় নাই, কিন্তু যখন তাহাকে একে একে তৎকর্তৃক খুন ও ডাকাতির একটা লম্বা তালিকা দেখান হইল, এবং তাহার নামে কতকগুলি গ্রেপ্তারি পরওয়ানা আছে, তাহা বলা হইল তখন পাছে আরও কঠোর শাস্তি হয়, এই ভয়ে সে রায়মল্ল সাহেবের শরণাপন্ন হইল।

জগৎসিংহের নিকট হইতে নানা প্রকার কলা-কৌশলে রঘু ডাকাত সেই সকল কাগজাদি আদায় করিয়া রাজেশ্বরী উপত্যকায় এক গুপ্তস্থানে লুকাইয়া রাখে। তারাকে হস্তগত করিবার আশা রঘুনাথ শেষ পর্য্যন্ত পরিত্যাগ করিতে পারে নাই। তাই জগৎসিংহের কৌশলে যখন রঘুনাথ কারামুক্ত হয়, সেই সময়েই সে রাজেশ্বরী উপত্যকায় গিয়া সেই সকল দলিল লইয়া আসে। তাহার মনে মনে এই আশা ছিল যে, যদি সে গোয়েন্দা-সর্দার রায়মল্লকে শমনসদনে প্রেরণ করিতে পারে তাহা হইলে যে কোন উপায়ে হউক, তারাকে হস্তগত করিয়া, তাহার সমস্ত বিষয় সম্পত্তি পুনরুদ্ধার করিয়া আপনি সেই রাজৈশ্বর্য্য ভোগ করিবে; কিন্তু সেই ভূত-ভবিষ্যৎ বৰ্ত্তমান ত্রিকালজ্ঞ অন্তৰ্য্যামী চক্রীর চক্রে সকলই বিপরীত ঘটিল। অধর্ম্মের পরাজয় ও ধর্ম্মেরই জয় হইল। রঘু ডাকাত পুনরায় রায়মল্লের হস্তে কয়েদ হইল। এবার বন্দী হইয়া নিজের শান্তিলাভের জন্য রায়মল্ল গোয়েন্দার হস্তে সেই সকল কাগজপত্র-প্রদান করিল।

রায়মল্ল সাহেব যাহা স্বপ্নেও ভাবেন নাই, তাহাই প্রাপ্ত হইয়া রঘু ডাকাতকে আশ্বাস প্রদান করিলেন এবং প্রকৃতপক্ষে এই কারণেই তাহার যাবজ্জীবন কারাবাসের দণ্ডাজ্ঞা না হইয়া তাহা অপেক্ষা কতক লঘুদণ্ড হইল!

জগৎসিংহের চিরনির্বাসন দণ্ডাজ্ঞা প্রচারিত হয়, কিন্তু হতভাগ্যকে তাহা আর ভোগ করিতে হয় নাই। তৎপূর্ব্বেই কারাগারে সর্পদংশনে তাহার মৃত্যু ঘটিয়াছিল।

রাজারামের দ্বাদশ বৎসর কারাবাস দণ্ড হয়, এতদ্ব্যতীত অন্যান্য চক্রান্তকারী দস্যুগণের যথোপযুক্ত দণ্ড হইয়াছিল। তদবধি রাজস্থানের জনপদবাসিগণের ভয়-ভাবনার মাত্রা তিরোহিত হয়।

তারা আপন বিষয়-সম্পত্তি প্রাপ্ত হইয়া, খুল্লতাত অজয় সিংহের উপর সমস্ত ভারার্পণ করিয়া নিশ্চিত হইলে অজয় সিংহ রায়মল্লের সহিত তারার বিবাহের প্রস্তাব করেন। তারা রায়মল্ল সাহেবের গুণে যেরূপ বিমুগ্ধ ও কৃতজ্ঞপাশে আবদ্ধ হইয়াছিল, তাহাতে এ প্রস্তাবে অমত করিবার কোন কারণ ছিল না। সুতরাং শুভদিন শুভক্ষণে শুভ বিবাহে রায়মল্ল ও তারার শুভ-সম্মিলন হইল। পরে অজয় সিংহ তারার গর্ভজাত এক পুত্র ও এক কন্যা দেখিয়া পরলোক গমন করেন।

রঘু ডাকাত কারাগারে পূর্ণ দণ্ডভোগ করিয়া মুক্তি পাইলে পুনরায় রায়মল্ল গোয়েন্দা ও তারার শরণাপন্ন হয়। তাঁহারাও তাহার সকল দোষ ভুলিয়া গিয়া, যতদিন সে জীবিত ছিল, ততদিন তাহাকে প্রতিপালন করেন।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17
Pages ( 17 of 17 ): « পূর্ববর্তী1 ... 1516 17

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *