যে-পথে আমার পদধ্বনি,
সে-পথ পুষ্পিত নয়। সে-পথ কণ্টকাবৃত বড়,
খানা-খন্দময়।
সে-পথে কখনো বুলবুলি
ওঠে না অমর্ত্য সুরে মেতে,
অথবা পাপিয়া।
যে-পথে আমার পদধ্বনি,
সে-পথে বাজে না দিলরুবা,
দামামাই বাদ্য একা সর্বদা সেখানে।
যে-পথে আমার পদধ্বনি,
সে-পথে বাজে না দিলরুবা,
ভয়াল ঘর্ঘর, ভগ্ন সেতু, আহতের চিৎকার,
পোড়া মাংস, কর্দমাক্ত জুতো আর উন্মত্ত আগুন।
দ্যাখো জীবকুল,
কী ভীষণ হিংস্র আমি, কী প্রকার ভয়ানক। দ্যাখো
আমার দু-হাত রক্তে লাল,
ধোঁয়াচ্ছে আমার নাক ঘন ঘন,
আমার চেয়ালে দ্যাখো ঝুলছে অসংখ্য মৃতদেহ,
আমার প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অঙ্কিত
কী বিচিত্র শব্দাবলি, করো পাঠ-
হত্যা প্রতিরোধ,
বিস্ফোরণ, দগ্ধ মাঠ, হাহাকার, উজাড় বসতি।
অথচ আমারই প্রতীক্ষায়
তোমরা বিছিয়ে রাখো দৃষ্টি
গ্রাম ও শহরে। পথে পথে
সাজাও তোরণ, করো নিবিড় বন্দনা।
যখনই প্রবল আমি আসি,
আমার দু-চোখে জ্বলজ্বল
ধ্বংস আর সৃষ্টি
কাঁপে পাশাপাশি;
আমি স্বাধীনতা।