Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » যাতায়াত || Nivedita De

যাতায়াত || Nivedita De

যাতায়াত

প্রিয়তোষ বাবু স্কুল থেকে রোজ ফেরেন নামখানা লোকালে। সোনারপুর থেকে কাকদ্বীপ যাওয়া আসা করতেই তার দিন শেষ। ভোরের নরম নতুন আলোয় চোখ মুখে ছুঁয়ে যেতেই মিতুনের মায়া মাখা মুখ টি ভেসে ওঠে। কেন যে এমন হয়! যতই মন থেকে সরিয়ে দিতে চান, ততই যেন আরও গভীরে প্রবেশ করে। এ এক জ্বালাতন, ভাবতেই ফোনে মেসেজ ঢুকলো। শুভ সকালের শুভেচ্ছা বাবু। সাবধানে যাবি। চারিদিকে তাকিয়ে দেখলেন, তার সহধর্মিনী তৈরী। তিনি কলেজে পড়ান। তাদের একমাত্র পুত্র ডাক্তারি পড়ার সুবাদে বাইরে আছে। দুবেলা রাঁধুনীর হাতের ওই একই স্বাদের রান্না যেন অসহ্য হয়ে উঠেছে। স্নান সেরে দুমুঠো ভাত গ্রোগাসে গিলে নিয়মমাফিক ট্রেন ধরেন। প্রতিদিনের রোজনামচায় দিন যাপন শুরু হয়। শুরু হয় তার রোজকার এই পথ চলা। কতো নিত্য নতুন ঘটনা,কখনও চরম বাস্তবের সাথে তার পরিচয় হয়। সেইগুলোই ছোট ছোট গল্পের আকারে কখনও বা ছন্দ মিলিয়ে কবিতা করে লিখে ফেলেন। আর সেই লেখা,একনিষ্ঠ মনোযোগী পাঠিকা হয়ে মিতুন এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেলে । রোজ তার লেখা চাই, পরিতোষ বাবুর কাছে তার বায়না।

ব্যস্ততম শহরে, ব্যস্ততম সংসার জীবন। দেখা হয় না কখনও একে অপরের সাথে। মিতুন রোজই রেলগাড়ির ঝমাঝম শব্দ শোনে, চোখ বন্ধ করে দেখতে পায় চারিদিকে সবুজের সমারোহ।
তবুও তার সবকিছু কেমন ফাঁকা ফাঁকা লাগে। একদিন মনে অনেক খানি সাহস নিয়ে মিতুন লোকাল ট্রেনের টিকিট কেটে উঠে পড়লো। তাঁর ব্যাকুল দু চোখ যেন কাউকে খুঁজছে। পরিতোষ বাবু হঠাৎ মিতুন বলে ডেকে উঠতেই, দুজনের দুটি মন প্রানের দেখা হয়ে যায়। সাথে ছিল মিতুন হাতের তৈরী সামান্য কিছু খাবার পরিতোষ বাবুর জন্য। খাওয়া হয়ে গেলে দুটি স্টেশন পার হতেই মিতুন নেমে পড়ে তার গন্তব্যে। এইভাবেই রোজ তারা দেখা করে গল্প করে, না বলা কথাগুলো একে অপরকে বলে দূরে নীল আকাশে মেঘ দেখে। অনেক কৌতুহলী চোখ ওদের দিকে তাকিয়ে থাকে। ওদের তাতে কিছুই যায় আসে না। তারা যে খুব ভালো বন্ধু। কোন কোন দিন যাত্রীরা অবাক হয়ে দেখে, এক রমনী পরম স্নেহে,যত্নে মায়ের মতো করে আর এক জনের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে।

এরা কেউ রক্তের সম্পর্কের নয়। এদের দুজনের সম্পর্ক কি! কেউ জানে না। এক নামহীন সম্পর্ক। আজও পৃথিবীতে এমন সম্পর্ক আছে বলেই কিছু মানুষ এখনও বেঁচে আছেন, হাসতে ভুলে যায় নি। সম্পর্ক নামে টেকে না। সম্পর্ক বেঁচে থাকে স্নেহ মায়া মমতা আর যত্নে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *