এরা তোমার অবসন্ন মেষপাল।
প্রত্যূষ এলে
রাত্রি ওদের ছুঁড়ে দেয় মাটির বুকে,
ওরা তাড়িত হয় ওদের নিত্যকার গেরস্থালির
টুকিটাকি কাজে
বাজারে, দপ্তরে, ফ্যাক্টরিতে,
যেখানে ওরা কাজ করে।
চলার পথে ওরা জিরোতে পারে না-
এমনকি আহত হ’লেও ওরা থামতে পারে না,
তুমি কি-ই বা প্রত্যাশা করতে পারো ওদের কাছে?
নেকড়েরা এখন মিশে যায় মেষপালের সঙ্গে।
তুমি তাকিয়ে আছো এই পথের দিকে;
এখানে সমাহিত অগণিত কাহিনী,
অনেক মানুষের হারানো যৌবন,
একই পথে হেঁটে যায়।
ধনী আর নির্ধন।
প্রায়শ আমি অবাক হয়ে ভাবি কার জন্যে
অপেক্ষা করছ তুমি!
এই আমাকে দ্যাখোঃ
আমি সে-জন
যে ছিল শৃঙ্খলিত তার ক্ষেতে
এবং ছিল সেই ক্ষেতেরই অঙ্গ।
যখন দুর্দশায় বেচে দেয়া হলো জমিন;
বিকিয়ে গেলাম আমিও
যেন আমি কিছুই নই। শুধুমাত্র আগুনের জ্বালানি।
এই আমাকে দ্যাখোঃ
আমি সে-জন
মেশিনের মালিকরা এখন আমাকে
ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে ওদের চাকার ভেতর।
আমাকে দ্যাখোঃ
আমি ক্লান্ত আর দিশেহারা,
শতাব্দীর পর শতাব্দীর ধরে ভবঘুরে আমি
তুমি যেখানে দাঁড়িয়ে আছো,
সেই বেদীমূল থেকে যদি সরে যাও, তাহলে
এখানে আমি ঘুমোতে পারি।
দোহাই ঈশ্বরের এখান থেকে চলে যাও তুমি,
চলে যাও ভিয়েতনামের সেইসব জঙ্গলে,
সেইসব বিধ্বস্ত শহরে,
জখমি গ্রামগুলিতে-
যেগুলি ওরা, যারা পাঠ করে তোমার ধর্মগ্রন্থ,
পায়ে মাড়িয়ে, দাউ-দাউ আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে।
যুগ-যুগ ধরে ওরা ডাকছে তোমাকে।
যাও আমাদের জন্যে আরও একবার তুমি যাও,
আবার এফোঁড়-ওফোঁড় বিদ্ধ হও গে ক্রশকাঠে।
(উর্দু কবি কাইফি আজমরি কবিতার অনুবাদ)