Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » মুক্ত বিহঙ্গ || Samarpita Raha

মুক্ত বিহঙ্গ || Samarpita Raha

এই মধুমিতা ঘুম থেকে ওঠ মা। দশটা বাজে।কলেজ আছে তো!ও মা আরেকটু ঘুমাই।মার চিৎকার শুরু হয়…. প্রতিদিন মনে হয় প্রথম ক্লাসটা করিস না। এবার আর পাশ করছিস না!দেখবি বছরের শেষে অ্যাটেনডেন্সের জন্য পরীক্ষাতে বসতে পারবি না।রোজ চলে এরকম মা ও মেয়ের চিৎকার ।
একদিন কলেজ গেল কিন্তু মধুমিতা বাড়িতে ফিরল না। পুলিশ এসে ঘর তছনছ করে কোনো ক্লু পায় নি।

ছয় মাস, এক বছর পেরিয়ে একটি চিঠি দিই ।মা বড্ড ভুল করেছি। *ভালোবাসার ভুল পথে চলে গিয়ে হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি।আমাকে ক্ষমা করো মা।
আজ মধুমিতা তার হেরে যাওয়া
কাহিনী শোনাতে চাই।

যদি মুক্ত জীবন পুনরায় পাই। মুক্ত বিহঙ্গের মতো নীলাকাশে উড়তে পারি।
সোহমের সঙ্গে কলেজে আলাপ। সুদর্শন।পড়াশুনাতে ভালো জানতাম।আমাকে প্রায় জোর করে বিয়ে করেছিল ।পরে বুঝতে পারি আমার সাথে ভালোবাসার অভিনয় করেছে…. শুধু মাত্র বাবা ও মায়ের একমাত্র মেয়ে দেখে…. ভবিষ্যতে তোমাদের কাছ থেকে টাকা আত্মসাৎ করবে বলে!
জানো মা আমি বর্ধমানে থাকি…ঘরে বন্দি…দিনে দুবার খাবার দিয়ে ঘরে তালাচাবি দিয়ে যায়।
আজ দুদিন হলো ঘরে ফেরে নি।জানলা দিয়ে এই চিঠিটা একজন কাজের মাসীকে দিয়ে পোস্ট করতে দিয়েছি। জানি না চিঠিটা তোমরা পাবে কিনা!
ধরা পড়লে প্রচণ্ড মার জুটবে!!!
ওই মহিলা অবশ্য একটা পাউরুটি কিনে দিয়েছে। ঠিকানাটা দিলাম মা।আমাকে বাঁচাও।

তারপর কতদিন হয়ে গেল ঘরে জল নেই.. খাবার নেই…অর্ধমৃত অবস্থায় ছিলাম।
আশায় ছিলাম চিঠিটা পেলেই মা আসবে। বাবা নিশ্চয় বকবে না।
বাথরুমের জল খেয়ে ছিলাম।তারপর দুদিন সেই জল ও নেই।জানালা দিয়ে লোককে ডাকতে পারতাম। কিন্তু ভালোবেসেতো বিয়ে করেছিলাম।তাই লোককে জানাই নি কিছু।

হটাৎ দরজা খোলার আওয়াজ।
কি রে শালী। জানালা খোলা কেন রে ? ভাবলাম মরে গেছিস দেখব। দশদিন পর এলাম দিব্যি আছিস তো।বুঝলি আরেক জায়গায় বৌ রেখে এলাম।যা দরজা খুলে দিচ্ছি বাড়ি চলে যা।

আমাকে একটু জল দাও। খেতে দাও।চলে যাব। আবার মার।আরে যাবি কি রে !তোর বাবার থেকে টাকা পয়সা লুটি। চিৎকার করার ক্ষমতা ছিল না আমার।

তাকিয়ে দেখি কত পুলিশ !
বাবা ও মা দাঁড়িয়ে।তারপর কিছু মনে নেই।
আমার পিশো পুলিশ আর মামা উকিল। দুজনের সহায়তায় আমি মুক্ত।তবে ডিভোর্স হয়ে যাবার পর আমাদের বাড়ি বিক্রি করে শিলিগুড়িতে থাকি।

আবার কলেজে ভর্তি হয়। একেবারে মাষ্টার্স করে বিয়ে করতে রাজি হয়।আজ বাবা ও মা খুব খুব খুশি। আমার বর সব জেনে আমাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছেন। আজ আমি মুক্ত বিহঙ্গ।

আমি ভালোবাসার ভুল পথে গিয়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলে ছিলাম।
আজো ভুলতে পারিনি সেই বিভীষিকাময় দিনগুলোর কথা। ঘুমিয়ে থাকলেও স্বপ্ন হয়ে ভয় দেখায় শুধু।।
তারপর বিবাহিত জীবন বাইশ বছর কেটে গেছে। আমি আমার একমাত্র মেয়েকে নিজের জীবনের ভুল সিদ্ধান্তের গল্প বহুবার শুনিয়েছি।যাতে ও যেন কোন বিপথে না যায়। যা কিছু করে বাবা ও মার সাথে আলোচনা করে।
ভুল সিদ্ধান্ত প্রতিটি মানুষের জীবন তছনছ করে দেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *