Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » মিঠে কড়া || Sibani Gupta

মিঠে কড়া || Sibani Gupta

দুঁদে উকিল সুবোধ সরকার ধূমায়িত চায়ের কাপে সবে আয়েশ করে চুমুক দিয়েছেন অমনি গিন্নী হন্তদন্ত এসে বলে উঠেন,জানো,কাল রাতে একটা আশ্চর্য স্বপ্ন দেখলাম–
সুবোধ সরকার বিষম খেয়ে বিরক্তির সুরে বলেন, আবার স্বপ্ন! তা, কি স্বপ্ন দেখলে শুনি?
গিন্নী থতমত খেয়েও উচ্ছ্বসিত হয়ে বলেই উঠেন,কাল গোপালকৃষ্ণকে দেখলাম গো,আহা! কেমন চাঁদপানা মুখ-আর গোপাল বললো যে–
এবারে তটস্থ সুবোধ সরকার, কিছুটা শঙ্কিত ও,–বাঃ থামলে কেন, গোপাল কি বললো তোমাকে?
গিন্নী ভাবাবেগ চাপতে পারেন না-খুশিতে গদগদ –,বললো,ওকে আমার ঠাকুর ঘরে প্রতিষ্ঠা করতে, ওর রুপোর সিংহাসন চাই, আর—
বিলক্ষণ মেজাজ চড়ছে সুবোধ সরকারের– কী! সারা দুনিয়া ছেড়ে আমার বাড়িতেই ঘাঁটি গেড়ে বসার মতলব কেন? আর কি বললেন তোমার গোপাল,ক্ষীরের নাড়ু চাই?
গিন্নী স্বামীর মেজাজ জানেন কিন্তু না বললে তো চলবেনা,তাই কাঁচুমাচু মুখে বলেন,গোপালের খুব শখ,ওর মাথায় সোনার মুকুট পড়বে ,তুমি যদি–গড়িয়ে দাও,তাহলে পাজী দেখে ঠাকুরমশাইকে ডেকে একটা ভালো দিন দেখে তারপরেই নাহয় —
সুবোধ সরকার খেঁকিয়ে ওঠেন, ঠাকুরঘর তো মিউজিয়াম বানিয়ে ফেলেছো তোমার গুচ্ছের ঠাকুর বসিয়ে,এরপরেও দুদন্ড শান্তিতে থাকার জো নেই,আবার গোপাল! রূপোর সিংহাসন!সোনার মুকুট চাই? ওই হারামজাদা নচ্ছার নন্দঘোষের কুপুত্তুরের কি আর কোন বাড়ি চোখে পড়লো না? বেছে নিলো এই বাড়িটাই? কেন? এটা কি ধর্মশালা?
ষোল’শ গোপী নিয়ে কী কেলোর কীর্তিই না করলো। ছিঃ ছিঃ বাপ- মায়ের র মুখে কালি মেখে দিলো।
মামা কংসটা তো সেজন‍্যেই দু’ চক্ষে দেখতে পারতো না তা যাকগে, কথা হলো,এখানে কেন? আবার ,রূপোর সিংহাসনে বসতে সাধ! মাথায় সোনার মুকুট? এ‍্যাঁ,আস্পর্ধা কতো! বলি ,আমি কি দানছত্র খুলে রেখেছি?
গিন্নী ভয়ে ঠোঁট চেপে বিড়বিড় করেন,অপরাধ নিওনা গোপাল,ওর মাথার ঠিক নেই—
তিড়িং বিড়িং করে লাফিয়ে উঠলেন সুবোধ সরকার– বলি,কী বললে,আমার মাথা খারাপ?
আমার টাকা নয়ছয় করবে তুমি ,তোমার মাথা খারাপ বলেই না আমার কষ্টের টাকার পিন্ডি চটকাচ্ছো। ওইযে,রোজ আমার গ‍্যাটের কড়ি খরচা করেএতো ফল,মিষ্টি গুচ্ছের এনে তোমার পোষ‍্যগুলোকে নৈবেদ্য সাজিয়ে দাও ,তা,ওরা খায় কখনো? সেইতো,ক্ষেন্তির মা,পটলাদের নয়তো পাড়ার লোককে দাও ,এতে আমার কোন মোক্ষলাভ হচ্ছে শুনি?
গিন্নী ভয়ার্ত কন্ঠে হাতদুটো কপালে ঠেকান– অমন কথা বলতে নেই গো,পাপ হয় যে–
সুবোধ সরকার তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেন– আলবাৎ বলবো,একশবার বলবো,কেন আমি কি ভয় পাই ওই পুঁচকে বিচ্ছুটাকে? পাঁজি ,বদমাশ ,নষ্টামি করার জায়গা পায়নি? কেন,পাড়ায় তো দুশো বাড়ি রয়েছে,কোথাও সুবিধে করতে পারেনি বলেই রাতে তোমার মগজ খেতে আসা! সব কটা ঠাকুরকে আজ আস্তাকুঁড়ে ফেলে না আসছি তো আমার নাম সুবোধ সরকার—
গিন্নীর চোখে অন্ধকার ,মাথা ঘুরছে এসব সর্বনেশে কথা শুনে–
ধপাস!
একি! কী হলো তোমার? ওরে ও ক্ষেন্তি,পটলা– শিগগিরই জল নিয়ে আয়–

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *