মা গো, কেমন আছিস সুদূর আকাশ পারে ?
শিউলি তলায় শিউলি আছে ভরে থরে থরে।
জবা গাছে শুকিয়ে গেছে থোকা থোকা রক্ত জবা,
মনে কি পড়ে মা গো , যাবার আগের কথা ?
রক্ত জবায় ভরেদিলি তোর ঐ ঠাকুর সিংহাসন
আমিও যে মা তোর তরে রাত জাগি সারাক্ষণ ।
সেই কবে, আঁধার করা তালতলার ঐ ঘরে ,
প্রথম তোরে আমার নয়ন মেলে দেখা ।
বুলিয়ে দিলাম হাত ,তোর ঐ পেলব নরম ঠোঁটে।
বিদায় ক্ষনে উথাল পাথাল বিদায় বাঁশি বেজে ওঠে ।
রান্না ঘরের মেঝেতে চক খড়ি তে প্রথম অক্ষর চেনা
তুমি বলতে’মস’ কর ।তবেই হবে লেখা পড়া জানা।
চলে গেলে ,জানতে পেলে নাকো তোমার মেয়ে আজ
শিক্ষার উঁচুদরজা পেরিয়ে করল আরও কত কি !
ভাল পাঠক ছিলি যে মা ,তোর মেয়ে আজ গল্পকার।
মনে পড়ে ,তখন আমি তিন ক্লাসেতে পড়ি
মায়ের তখন মনে রান্নায় উজান বয়।
মায়ের কথায় পড়ি মরি ছুটি বটুর বাড়ি
লাইব্রেরি থেকেই আনা বটুর বাড়ির বই নইলে নয়।
সাঁঝ বেলাতে বাবার, ঘরের মাঝে পায়চারি করা,
লম্ফ জ্বেলে ভাতের তালে মায়ের উপন্যাস পড়া
পায়চারি তে বাবা বোঝেন ভাতের দফা রফা ,শেষ ।
মজা করেই শেখান মাকে এক ফুৎকারে লম্ফের আয়ু শেষ।
হ্যারিকেন এর আলোই মোদের চন্দ্র সূর্য তারা,
কোথায় যে মা,জানেনা তা টের টি পায় তখন ।
যখন বাবার মুখে মিঠি মিঠি হাসির নয়ন তারা
অবোধ আমি চেয়ে ভাবি বাবার এ কেমন ছলা কলা।
মনে করি বলি ,মেঘের ভেলায় চড়ে তুমি মাগো,
,এই নাও মা বই, কতো শত তোমার মেয়ের লেখা ।
পাজা পাজা লিখছে মেয়ে, পড় তুমিও তোমার সই।
চোখের জলে বালিশ ভেজা, নেইতো কিছুই লেখা জোকা।
মা গো, রান্না ঘরে খড়ি মাটি দিয়ে ,প্রথমঅক্ষরচেনা