Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » মায়াবী || Panchkari Dey » Page 55

মায়াবী || Panchkari Dey

রমণী কিয়ৎক্ষণ চিন্তিতভাবে নতমুখে থাকিয়া ধীরে ধীরে বলিলেন, “কই, তেমন ত কোন ঘটনা ঘটে নাই। আপনি এখন (অঙ্গুলি নির্দ্দেশে) বারান্দার ওদিক্কার কোণের ঘরে গিয়া বসুন; সে-ঘরে আলো জ্বলিতেছে, দেখিতে পাইবেন; আপনার বড় বিলম্ব হইয়া পড়িতেছে, সেজন্য কিছু মনে করিবেন না;বড় দায়ে পড়িয়াই আপনাকে কষ্ট দিতেছি,” বলিয়া সে অবগুণ্ঠনবতী রোগীর কক্ষমধ্যে প্রবেশ করিল। তাহার পর যেমন যুবক দুই পদ অগ্রসর হইয়াছে, এমন সময়ে সেই রোগীর কক্ষ হইতে দুই-একটি বড় ভয়ানক কথা তাঁহার কানে গেল। কথাগুলি খুব মৃদুস্বরে উচ্চারিত হইলেও, বেশ বুঝিতে পারা গেল। যুবক সেইখানে দাঁড়াইয়া শুনিতে লাগিলেন।

রমণী বলিল, “সেই লোক ঠিক? তুমি ঠিক চিনিতে পারিয়াছ?”

রোগী বলিল, “হ্যাঁ, সেই লোকই ঠিক।”

রম। ইহারই নাম দেবেন্দ্রবিজয়?

রোগী। ইহারই নাম

রম। তবে আমার ভুল হয় নাই?

রো। কোন দিন যাহা হয় নাই, আজ তাহা হইবে?

এই বলিয়া রোগী অনুচ্চস্বরে হাসিল। সে শব্দও যুবক বাহির হইতে বেশ শুনিতে পাইলেন।

তাহার পর—

রম। এখন কি করিতে হইবে?

রো। যাহা তোমার অভিরুচি।

রম। তুমি যাহা বলিবে, তাহাই করিব।

রো। খুন করো।

রম। খুন করিব!

রো। আশ্চর্য্য হইয়া গেলে যে! কই, এমন কথা ত তোমার মুখে আর কখনও শুনি নাই? আজ খুনের কথা শুনিয়া যেন আকাশ হইতে পড়িতেছ। আগে খুন করিতে তোমারই আগ্রহ অধিক দেখিতাম। কি জানি যুবকের রূপ দেখিয়া সহসা আত্মহারা হইয়া পড় নাই ত? দেখিও আমাকে যেন শেষে পথে বসাইও না।

রমণী। সে ভয় নাই, তাহা হইলে অসংখ্য বিপদের বোঝা মাথায় লইয়া, তোমার সঙ্গে এতকাল ধরিয়া ঘুরিয়া মরিতাম না। তুমি কি আমাকে এমনই মনে করিয়াছ? আগে এই লোকটির সম্বন্ধে যেরূপ পরামর্শ করা হইয়াছিল, সেই পরামর্শ মতো কাজ করিলে ভাল হইত না কি?

রোগী। সেই পরামর্শ মতোই কাজ করো। বিশেষতঃ সেইজন্যই লোকটাকে বেশী দরকার।

শুনিয়া যুবকের চক্ষুঃস্থির—শুনিয়া এক জটিল রহস্য হইতে ততোধিক জটিল ও দুর্ভেদ্য রহস্যের মধ্যে তিনি নিমগ্ন হইলেন। মুখে তাঁহারই নাম। তাঁহারই নাম দেবেন্দ্রবিজয়—তাঁহাকেই খুন করিবার কথা—আগেকার পরামর্শ মত কাঁজ হইবে! এসকল কথার অর্থ কি? যুবক কিছুই ভাবিয়া ঠিক করিতে পারিলেন না। তাঁহার মাথা ঘুরিতে লাগিল;এবং বুকের মধ্যে রক্তস্রোত উত্তালভাবে তরঙ্গায়িত হইতে লাগিল।

সাহসে বুক বাঁধিয়া যুবক আসন্ন বিপদের জন্য প্রস্তুত হইলেন। যখন তাহাদিগের আর কোন কথা শুনা গেল না, তখন তিনি তথা হইতে কিছুদূর অগ্রসর হইয়া, অপর পার্শ্বে বারান্দার রেলিং- এর উপর ভর দিয়া দাঁড়াইলেন। সেখানেও অত্যন্ত অন্ধকার;যুবক সেই অন্ধকারে দাঁড়াইয়া আপনার আপনার অদৃষ্ট ও বিপদ চিন্তা করিতে লাগিলেন। এবং চারিদিকে নিবিড় অন্ধকার তাঁহার চোখের উপরে আরও ঘনীভূত হইয়া অসিল।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72 73 74 75 76 77 78 79 80 81 82 83 84 85 86

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress