Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » মধ্যযুগ || Tarapada Roy

মধ্যযুগ || Tarapada Roy

আমার কিছুই নেই, তবু আমার কিছু চাই না। আটশো টাকা দিয়ে রোমীয় রসিকতার বই কিনেছি, টাকাটা উশুল করে নিতে হবে তাই ইতালির হাস্যরস নিয়ে এই দ্বিতীয় কিস্তি।

‘ইতালীয় রসিকতার আনন্দ’ গ্রন্থের সূত্রে এবারে দুটো চিঠি দিয়ে শুরু করছি। দ্বিতীয় চিঠিটি প্রথম চিঠির উত্তর:—(এক) শ্রীচরণেষু কাকা, এই চিঠি লিখতে আমার লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছে। আমি জানি আপনি আমাকে করুণা করবেন, কিন্তু আমি নিতান্ত অপারগ হয়ে এই চিঠি লিখছি। এই মুহূর্তে আমার একশো টাকা দরকার, ভীষণ দরকার। না হলে ঘোরতর বিপদে পড়বে। যে লোক এই চিঠিটা নিয়ে যাচ্ছে, আপনার উত্তরের জন্য সে অপেক্ষা করবে। ইতি—লজ্জানত গঙ্গারাম

পুনশ্চ: এই চিঠি পাঠানোর পর অনুশোচনায় দগ্ধ হয়ে কিছুক্ষণ পরেই আমি পত্রবাহকের কাছ থেকে চিঠিটি ফিরিয়ে আনার জন্য তার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ি, রীতিমতো দৌড় শুরু করি। কিন্তু তাকে ধরতে পারি না। ভগবানের কাছে প্রার্থনা করছি, এই চিঠি যে নিয়ে যাচ্ছে তার যেন কিছু হয়। এই চিঠি যেন আপনি না পান, কখনও আপনার কাছে না পৌঁছায় আমার এই অপমানজনক আবেদন।

ইতি গঙ্গারাম

(দুই) স্নেহের গঙ্গারাম, লজ্জা বা অনুশোচনার কোনও প্রয়োজন নেই। তোমার চিঠি আমার কাছে পৌঁছয়নি। কীভাবে কোথায় হারিয়ে গিয়েছে, তোমার লোকটি কিছুই বলতে পারল না। ভাল থেকো। ইতি—আশীর্বাদক কাকা। এ-কাহিনীকে যদি সেয়ানে-সেয়ানে বলা যায় তবে পরের কাহিনীগুলি অবশ্যই বোচা কাহিনী।

প্রথমটি একটি মধ্যযুগীয় গল্প।

গির্জায় ধর্মযাজক বক্তৃতা করছিলেন, “ঈশ্বর পরম দয়ালু। তাঁর দয়ায় সব কিছুই সম্ভব। বাইবেলে আছে মাত্র সাতটি রুটি ছিঁড়ে পাঁচশো লোকের আহারের বন্দোবস্ত হয়েছিল।” একথা শুনে জনৈক ভক্ত বললেন, “ফাদার, আপনি ভুল বললেন। বইয়ে আছে (গসপেল-এ) পাঁচশো নয়, পাঁচ হাজার লোকের খাওয়া হয় সাতটি রুটিতে।” পুরোহিত বিব্রত হয়ে বললেন, “তোমার যেমন বুদ্ধি, লোকে পাচশো বিশ্বাস করতে চায় না, পাঁচ হাজার বললে তো হাসাহাসি করবে।”

মধ্যযুগ যে আমাদের যুগ থেকে খুব আলাদা ছিল না, তার প্রমাণ রয়েছে ওপরের কাহিনীতে। ধনবান, শহুরে যুবক কিঞ্চিৎ প্রমত্ত অবস্থায় পথে এক অপরিচিতা সাধারণ রমণীকে প্রেম নিবেদন করে। মহিলার সামনে আভূমি কুর্নিশ করে ছদ্ম প্রশংসায় যুবক জানায়, “অয়ি বনিতা, এ-জন্মে আমি তোমার মতো সুন্দরী দেখিনি।” এতাদৃশ প্রশংসা শুনে মহিলাটি বিন্দুমাত্র বিচলিত না হয়ে বলে, “আহা, আমি যদি আপনার সম্পর্কে ঠিক ওই কথা বলতে পারতাম।” যুবকটির এতক্ষণে সম্বিৎ ফিরে এসেছে, কুর্নিশ গুটিয়ে নিয়ে সে বলল, “পারতেন, নিশ্চয়ই পারতেন। যদি আপনি আমার মতো মিথ্যুক হতেন।”

আর গল্প এবারে নয়। খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকের একটি প্রবচনের কথা বলি। প্রবচনটির উৎস রোমান পণ্ডিত টেরেস বলেছিলেন, “আমার সবই আছে যদিও আমার কিছুই নেই। আমার কিছুই নেই তবে আমার কিছু চাই না।” টেরেসই বলেছিলেন, “কঠোর আইন অনেক সময়েই কঠোর অবিচার।” এবং এই অমূল্য কথাটিও টেরেস বলেছিলেন, “এমন কোনও কথাই এখন বলা হচ্ছে না, যা কি না আগে কখনও বলা হয়নি।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *