Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » ভোরের কুয়াশা || Satyajit Chowdhury

ভোরের কুয়াশা || Satyajit Chowdhury

ভোরের কুয়াশা

ঢঙ্ করে শব্দ হতেই সুপ্রতীক ফাইলের পাতা থেকে মুখ তুলে ওয়ালঘড়ির দিকে তাকালো । রাত একটা বাজে । কাজ এখনো অনেক বাকি । ভোর হতেই ঠিকাদারেরা অফিসে ধর্ণা দিবে । ক্রিসমাসের আগের দিনগুলোতে এমনই হয় ।

সুপ্রতীক পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্টের জুনিয়র একাউন্টস অফিসার । কিন্তু কাজ করতে হয় জুতো সেলাই থেকে চন্ডিপাঠ । বিল সেকশনে যে ভদ্রমহিলা আছেন, তিনি বড় সাহেবের দূরসম্পর্কের শ্যালকের পত্নী । তাই মাইনের খাতায় একবার হস্তাক্ষর করলেই বর্তে যান ।

দিনের চব্বিশ ঘন্টা আজকাল বড় কম মনে হয় । দশ পাতার একটি প্ল্যান এস্টিমেট টাইপ করার এখনো বাকি আছে । পরশুর মধ্যে শিলঙ-এ পৌঁছতে হবে । অফিসের টাইপিস্ট সাহেবের স্নেহধন্য । গত এক বছর ধরে অজানা স্টাডি লিভ নিয়ে পড়াশোনা করছে । তাই সুপ্রতীককে এইদিকটাও সামলাতে হয় ।
পেটটা হঠাৎ মোচড় দিয়ে উঠলো । পেটের কোনো দোষ নেই । দুপুরে কাঞ্চার দোকানে একমুঠো ভাত পড়েছিল । তারপর থেকে শুধু চা আর মেরি বিস্কুট । থেকে থেকে গলা দিয়ে টক ঢেকুর উঠছে । কাল সকাল থেকেই মনটা অফ হয়ে আছে । রোলার ড্রাইভার আকণ্ঠ পান করে সেই কি হম্বিতম্বি । গত তিন মাস থেকে বিনা বেতনে ছুটিতে আছে । মনে করে, সুপ্রতীক ইচ্ছে করেই মাইনে দিচ্ছে না । এদিকে সাহেবের করা হুকুম, মেডিকেল সার্টিফিকেট না দিলে নো স্যালারি । আজকাল আবার নতুন ফ্যাশন । ঠিকাদার থেকে আর্দালি পর্যন্ত কথায় কথায় জঙ্গলের মানুষের ভয় দেখায় ।

এখন বোধহয় ভোর হয়ে এলো । বাইরে অফিস কম্পাউন্ডে নাইট গার্ডরা আগুন জ্বালিয়েছে । কিছুদূরে কোনো এক মদাপি অকথ্য ভাষায় কাউকে গালাগালি করছে । পেটের চিনচিন ব্যাথাটা আচমকা বেড়ে গেলো । দৌঁড়ে এসে বেসিনের সামনে আসতেই হরহর করে বমি করে ফেললো । সেই সঙ্গে মনের ভিতর অনেক দিনের জমে থাকা ক্ষোভ রাগ অভিমান উগরে বেরিয়ে আসলো । কল খুলে মুখে জলের ঝাপটা দিতেই বেশ আরাম অনুভব হলো । রাতের গলার টক ভাবটাও আর নেই । আবার নতুন এক সংগ্রাম ।

সুপ্রতীক ঘর থেকে বেরিয়ে বারান্দায় এসে দাঁড়ালো । তখনই ভোরের একরাশ কুয়াশা সুপ্রতীকের চোখে মুখে আছড়ে পড়লো । চৌকিদারের কোয়ার্টার থেকে একটি মোরগ ডেকে উঠলো – কু-কি-রি-কু ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress